২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আসিয়ানের শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রস্তুত মিয়ানমার

-

আসিয়ানের চলতি সপ্তাহের সম্মেলন থেকে জান্তাপ্রধানকে বাইরে রাখার ব্যাপক সমালোচনা করলেও মিয়ানমার বলছে তারা আঞ্চলিক জোটের সাথে ঐকমত্যে পৌঁছানো শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ‘যতটুকু পারা যায়’ সহযোগিতা করবে। গতকাল রোববার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেয়া ঘোষণায় দেশটির সামরিক জান্তা বলেছে, তারা অন্যান্য দেশের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতির সমর্থক এবং এপ্রিলে যে পাঁচ দফা নিয়ে ঐকমত্য হয়েছিল, তার বাস্তবায়নে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানকে সাথে সহযোগিতা করবে।
আসিয়ান ও মিয়ানমারের মধ্যে হওয়া ওই শান্তি পরিকল্পনায় চীনের পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলোরও সমর্থন ছিল। এ পরিকল্পনায় ছিল সহিংসতার অবসান, আলোচনার সূত্রপাত ঘটানো, মিয়ানমারে মানবিক ত্রাণ সাহায্য পৌঁছানোর পথ তৈরি এবং নিয়োগ দেয়া এক বিশেষ দূতের দেশটিতে অবাধ বিচরণের সুযোগ নিশ্চিত করা।
কিন্তু ঐকমত্যে পৌঁছানোর পাঁচ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং ব্যর্থ হওয়ায় আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গত ১৫ অক্টোবর জোটের শীর্ষ সম্মেলন থেকে এ জান্তাপ্রধানকে বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এর প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার আসিয়ানের কঠোর সমালোচনা করে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। তারা আঞ্চলিক জোটের বিরুদ্ধে ঐকমত্য ও কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতি থেকে সরে আসার অভিযোগ করে।
মিন অং হ্লাইংয়ের পরিবর্তে রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ এক ব্যক্তিকে আসিয়ান সম্মেলনে পাঠানোর জোটের প্রস্তাবও খারিজ করে দিয়েছে তারা। মিয়ানমারের এ অবস্থানের বিষয়ে আসিয়ানের বর্তমান সভাপতি দেশ ব্রুনেই কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। শনিবার থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রও ‘বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায়’ এই প্রসঙ্গে কিছু বলতে রাজি হননি। ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তেইকু ফাইজাসিয়াহ বলেছেন, সম্মেলনে কে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করবে, এই বিষয়ে আসিয়ানের ঐকমত্য ‘সব আসিয়ান সদস্যের জন্য সাধারণ নির্দেশিকা’। সম্মেলন থেকে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধানকে বাইরে রাখার এ ‘নজিরবিহীন অপমান’ এমন এক জোট করেছে, যাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই সদস্য দেশের সরকারগুলোর বর্বরতা মোকাবেলায় নিস্পৃহ ও অকার্যকর ভূমিকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে চলা দমনপীড়নে এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি নিহত হয়েছে, আটক করা হয়েছে কয়েক হাজারের বেশি মানুষকে। অনেকেই মারধর ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলেও আন্দোলনকর্মীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর অত্যধিক বলপ্রয়োগের অভিযোগও আছে। জান্তা বলছে, যারা নিহত হয়েছে তাদের অনেকেই ‘সন্ত্রাসী’, যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে তৎপর। গত সপ্তাহে জান্তাপ্রধানও বলেছেন, বিরোধী বাহিনীগুলোই দেশে বিরাজমান অস্থিরতা দীর্ঘায়িত করছে।
আসিয়ানের বিশেষ দূত, ব্রুনেইয়ের এরওয়ান ইউসুফ চাইছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির সাথে বৈঠক করতে; কিন্তু জান্তা সরকার তাতে রাজি হচ্ছে না। তাদের ভাষ্য, আটক সু চির বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আছে, তাই তার সাথে দেখা করতে দেয়া যাবে না।


আরো সংবাদ



premium cement