৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


হামলার হুমকি জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি নিউজিল্যান্ড পুলিশ

ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুসলিম নারীদের বক্তব্য
-

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে হামলার দিনটিতে অন্য এক মসজিদে হামলার হুমকির বিষয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে মুসলিম নারীদের একটি সংগঠন। দেশটির মুসলিম নারীদের ওই সংগঠনটি দুই মসজিদে ৫১ মুসল্লি নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে নিয়োজিত তদন্তকারীদের এমন তথ্য জানিয়েছে।
ইসলামিক উইমেন্স কাউন্সিল অব নিউজিল্যান্ড বলেছে, গত বছরের ১৫ মার্চ ফেস বুকের ম্যাসেঞ্জারে হ্যামিল্টনের একটি মসজিদের বাইরে কুরআন পুড়িয়ে দেয়ার হুমকিসহ শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদীদের হুমকির বিষয়ে তারা পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে ধারাবাহিকভাবে সতর্ক করে এসেছে। হ্যামিল্টনের মসজিদ সংক্রান্ত এ হুমকির সাথে ক্রাইস্টচার্চের হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষ কোনো সংযোগ না থাকলেও, হুমকির বিষয়ে জানার পর চাইলে সব মসজিদের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেয়া যেত বলে রুদ্ধদ্বার কক্ষে তদন্তকারীদের কাছে দেয়া বক্তব্যে বলেছে ইসলামিক উইমেন্স কাউন্সিল। গতকাল মঙ্গলবার তাদের বক্তব্য জনসমক্ষে আসে। ১৩০ পৃষ্ঠার বক্তব্যের এক জায়গায় মুসলিম নারীদের সংগঠনটি বলেছে, পুলিশের কাছে এত তথ্য ছিল যে তারা চাইলেই এ বিষয়ে সমন্বিত জাতীয় কৌশল গ্রহণ করতে পারত। যদি এ রকম কোনো কৌশল থাকত, তাহলে ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ একটি মসজিদে হামলার হুমকি সম্পর্কিত বার্তা অন্য মসজিদগুলোকে সতর্ক করতে পারত এবং সব মসজিদের জন্যই অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া যেত। ক্রাইস্টচার্চের হামলাকারীর সাথে এ হুমকির কোনো যোগসাজশ আছে কি নেই, তা অপ্রাসঙ্গিক। সন্দেহভাজন শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী ব্রেন্টন ট্যারেন্ট গত বছরের ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে আধা-স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অর্ধশতাধিক মুসল্লিকে হত্যা করে। অস্ট্রেলীয় এ বন্দুকধারী নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে অন্যতম বর্বর এ হামলাটি ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করেছিলেন। এসব হত্যাকাণ্ড ও হামলার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত ট্যারেন্টের সাজা আদালত ২৪ আগস্ট থেকে ঘোষণা শুরু করবে। ইসলামিক উইমেন্স কাউন্সিল তাদের বক্তব্যে বলেছে, পুলিশ, নিরাপত্তা সংস্থা ও সরকারি প্রতিনিধিরা কেবল উগ্রবাদী মুসলিমদের সন্ত্রাস মোকাবেলাতেই বেশি মনোযোগী ছিল। তারা নিউ জিল্যান্ডের মুসলমানদের ওপর উদীয়মান কট্টর খ্রিষ্টান ডানপন্থীদের হামলার হুমকি নিয়ে গা করেননি।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা এ সংক্রান্ত রাজকীয় কমিশনের তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবে না। হ্যামিল্টনের মসজিদের বাইরে কুরআন পোড়ানোর হুমকি দেয়া ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছে তারা। সরকারের এক মুখপাত্রও রাজকীয় কমিশনের দেয়া রিপোর্টের আগে কোনো মন্তব্য করা হবে না বলে জানিয়েছেন। ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে হামলার ঘটনার রাজকীয় কমিশনের তদন্ত রিপোর্ট জুলাইয়ের শেষ নাগাদ প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। ক্রাইস্টচার্চে ওই হামলার পর থেকে নিউজিল্যান্ডের মুসলমানদের ওপর হুমকির ঘটনা অব্যাহত আছে। সামাজিক গণমাধ্যমে হুমকি দেয়া একটি পোস্ট চলতি বছরের শুরুতে সবার নজরও কেড়েছে। ইসলামিক উইমেন্স কাউন্সিলের ধারণা, নিউজিল্যান্ডে মাথায় স্কার্ফ পরা এমন এক মুসলিম নারীকেও পাওয়া যাবে না, যিনি কখনোই জনসম্মুখে হয়রানির শিকার হননি।

 


আরো সংবাদ



premium cement