২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকী আজ

-

আজ কবি বেগম সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকী। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান এই মহিলা কবি ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় ইন্তেকাল করেন।
কবি বেগম সুফিয়া কামালের সৃজনশীলতা ছিল অবিস্মরণীয়। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চলেছে তার সাহিত্যচর্চা। ১৯৩৮ সালে কবি সুফিয়া কামালের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সাজের মায়া’ প্রকাশিত হয় ওই গ্রন্থের মুখবন্ধ লেখেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। যা সেই সময়ের পাঠকসহ লেখকদের ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। দেশ, প্রকৃতি, গণতন্ত্র, সমাজ-সংস্কার, নারীমুক্তি এবং শিশুতোষ রচনাসহ বিভিন্ন বিষয় তার লেখনীতে সমৃদ্ধ হয়েছে। কবি বেগম সুফিয়া কামাল এক দিকে ছিলেন আবহমান বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি, অন্য দিকে বাংলার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ছিল তার আপসহীন এবং দৃপ্ত পদচারণা। তার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী গতকাল পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাসস জানায়, রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ বলেছেন, কবি সুফিয়া কামালের জীবন ও আদর্শ এবং কালোত্তীর্ণ সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মের প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে। নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকীতে রাষ্ট্রপতি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদের এক অভিজাত পরিবারে তার জন্ম। তৎকালে বাঙালি মুসলমান নারীদের লেখাপড়ার সুযোগ একেবারে সীমিত থাকলেও তিনি নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া শেখেন এবং ছোটোবেলা থেকেই কবিতাচর্চা শুরু করেন। সুললিত ভাষায় ও ব্যঞ্জনাময় ছন্দে তার কবিতায় ফুটে উঠত সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও সমাজের সার্বিক চিত্র। তিনি বলেন, কবি সুফিয়া কামাল রচিত সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মকে গভীর দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করে। রাষ্ট্রপতি এ মহীয়সী নারীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
পৃথক এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার চিন্তাধারা ও প্রতিজ্ঞা কবি সুফিয়া কামালের জীবনে সঞ্চারিত হয় ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। তার দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রীনিবাসের নাম রোকেয়া হল রাখা হয়। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকার বেতারে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার নিষিদ্ধ করলে এর প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তোলেন। শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলার তিনি প্রতিষ্ঠাতা। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণ-অভ্যুত্থান, ৭১’র অসহযোগ আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলাদেশে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামসহ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার প্রত্যক্ষ উপস্থিতি তাকে জনগণের ‘জননী সাহসিকা’ উপাধিতে অভিষিক্ত করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার স্মরণে আওয়ামী লীগ সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য বেগম সুফিয়া কামাল হল নির্মাণ করে।
কালজয়ী কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১১০তম জন্মদিনে তার জীবনদর্শন ও সাহিত্যকর্ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পাঠকের হৃদয় আলোকিত করবেÑ এই প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।
আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার : আজ বেলা ৩টায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে বেগম সুফিয়া কামালের ১১০তম জন্মদিন উপলক্ষে এক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে। আলোচনার বিষয় হচ্ছে : ‘বাংলাদেশে নারী নির্যাতনে মৌলবাদের ভূমিকা : আমাদের করণীয়’।
ওয়েবিনারে নির্মূল কমিটি বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মির্জা আহসানুল হক দুলালের সভাপতিত্বে ও নির্মূল কমিটি বগুড়া জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল ইসলামের সাঞ্চলনায় আলোচক হিসেবে থাকবেন নির্মূল কমিটির আইন সহায়ক কমিটির সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শহীদ ভাষাসৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পৌত্রী সমাজকর্মী আরমা দত্ত এমপি, নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সমাজকর্মী কাজী মুকুল, সর্ব ইউরোপীয় নির্মূল কমিটির কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানবাধিকারকর্মী আনসার আহমদউল্লা ও নির্মূল কমিটি অস্ট্রেলিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক সমাজকর্মী জুয়েল তালুকদারসহ জেলার নেতৃবৃন্দ।


আরো সংবাদ



premium cement