ক্রমেই গোপনে নিজের শক্তি বাড়িয়ে চলছে চীন। আরো আধুনিক করছে বাহিনীকে। ক্ষেপণাস্ত্রের ভাণ্ডারও আরো বৃদ্ধি করছে। এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দফতর পেন্টাগন।
সম্প্রতি পেন্টাগন জানিয়েছে, চীনের ভান্ডরে পাঁচ শতাধিক পারমাণবিক বোমা রয়েছে। তবে এতে থেমে নেই চীন। আরো ‘ইন্টার-কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল’ (আইসিবিএম) তৈরি করছে চীন, যা স্থলভাগের ওপর দিয়ে ছুঁটে গিয়ে পাঁচ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসকে একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তাতে জানিয়েছে, আগামী ১০ বছরে চীন নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডারকে আরো আধুনিক করতে চলেছে।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আইসিবিএমকে আরো আধুনিক করে তুলছে চীন। নতুন নতুন অস্ত্রও তৈরি করছে তারা।
পেন্টাগনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্ষেপণাস্ত্রের পরিসর আরো বাড়াতে চলেছে চীন। এর ফলে চীনের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র সোজা গিয়ে আঘাত হানতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র, হাওয়াই বা আলাস্কায়। ২০২২ সাল থেকেই পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার বৃদ্ধির কাজ শুরু করেছে চীন। ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, তাদের কাছে ৫০০টি পরমাণু বোমা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ধারণা, ২০৩০ সাল পর্যন্ত চীনের ভাণ্ডারে সক্রিয় পরমাণু বোমার সংখ্যা বেড়ে হবে এক হাজার। ২০৩৫ সালে ওই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।
মনে করা হচ্ছে, পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার আধুনিকীকরণের কাজ শেষ হবে ওই বছরেই। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের লক্ষ্য, ২০৪৯ সালের মধ্যে চীনের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বিশ্বমানের করে গড়ে তোলা। এই লক্ষ্যের দিকেই এগিয়ে চলেছে চীন।
পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজন প্লুটোনিয়াম। সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত প্লুটোনিয়াম তৈরি করতে পারে এমন রিয়্যাকটর ব্যবহার করছে চীন।
যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্ট বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র সঞ্চয় এবং উৎক্ষেপণের জন্য ২০২২ সালে তিনটি নতুন ‘সিলো ফিল্ড’ তৈরি করেছে শি জিংপিংয়ের দেশ। ওই ‘সিলো ফিল্ড’ মাটির নিচে তৈরি করা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, নতুন সিলো ফিল্ডে ৩০০টি আইসিবিএম রয়েছে। এই সিলো ফিল্ডে ডিএফ-৩১ এবং ডিএফ-৪১ শ্রেণির আইসিবিএম রাখা যাবে। ডিএফ-৩১ শ্রেণির ক্ষেপণাস্ত্র সাত হাজার ২০০ থেকে আট হাজার কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। আধুনিক ডিএফ-৪১ ক্ষেপণাস্ত্র দুই হাজার ৫০০ কেজি পর্যন্ত বহন করতে সক্ষম।
রিপোর্ট বলছে, রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা পাঁচ ৮৮৯। আর যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা পাঁচ ২৪৪।
তারপরেও চীনের এই অস্ত্রভাণ্ডার বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও চীন নিজের পুরনো নীতিতেই অনড়। অন্য রাষ্ট্র পারমাণবিক হামলা চালালে তবেই তারা পাল্টা আক্রমণ করবে তারা, প্রথমে পারমাণবিক হামলা করবে না।
শুক্রবার একটি সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের এই রিপোর্টের সত্যতা খারিজ করেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং। তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টের কোনো ভিত্তি নেই। সবটাই মনগড়া। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে যতটুকু পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োজন, ততটাই রাখে চীন। অন্য কোনো দেশের সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে চায় না।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা