মার্কিন সামরিক কর্তৃপক্ষের পর এবার সৌদি আরবকে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস। ইঙ্গিত দিয়েছেন, সৌদি জোটকে দেওয়া সামরিক সমর্থন কমানোর। ইয়েমেনে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় একের পর এক বেসামরিক হত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বাড়ার জের ধরে এই ঘোষণা দিলো দেশটি।
আগস্টের শুরুতে ইয়েমেনে একটি স্কুল বাসে হামলা চালিয়ে ৪০ শিশু হত্যার অভিযোগ ওঠে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে। ওই হামলার পর জাতিসঙ্ঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ইয়েমেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তোলে।
ইয়েমেনে সৌদি জোটের যুদ্ধাপরাধে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার অভিযোগ ওঠে। অনেকেই ইয়েমেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার নিন্দা জানান। সৌদি জোটকে সহায়তা প্রদান যুদ্ধাপরাধে অংশ নেওয়ারই শামিল বলে উল্লেখ করেন। যুক্তরাষ্ট্র সৌদি জোটের কাছে শুধু অস্ত্রই বিক্রি করছে না, সামরিক সহায়তাও দিচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এই সমালোচনার মধ্যেই মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর সৌদি আরবকে সতর্ক করে জানায়, বেসামরিক প্রাণ রক্ষায় পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ইয়েমেনে তাদের জোটকে সামরিক ও গোয়েন্দা সমর্থন কমিয়ে দেবে তারা। পেন্টাগনের এই সতর্কতা পর মঙ্গলবার জেমস ম্যাটিস বলেছেন, নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানি এড়াতে মানুষের পক্ষে সম্ভব সবকিছুই করা হবে। ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন শর্তহীন নয়।
পেন্টাগনের সতর্কতার সাথে সরাসরি জড়িত দুই মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, সৌদি জোটকে নিয়ে তাদের হতাশা বাড়ছে। ম্যাটিস ও মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক দলের প্রধান জেনারেল জোসেফ ভোটেল সৌদি জোটের বিমান হামলায় বিপুল সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক হত্যা নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।
গত কয়েকদিনে একের পর এক হামলায় বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ায় পেন্টাগন ও পররাষ্ট্র দফতর এসব প্রাণহানি নিয়ে সরাসরি সৌদি আরবের সাথে কথা বলছে। এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই ইস্যুতে যা ঘটেছে তা যথেষ্ট হয়েছে’।
মঙ্গলবার ম্যাটিস বলেন, আমরা আমাদের সহযোগী সৌদি আরবকে আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতি সমর্থন দিয়েছি। এধরনের বোমা হামলা এবং তার পুনরাবৃত্তি রোধে কেন ব্যর্থ হয়েছে তা নিরুপণ করতে সৌদি আরবের সাথে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। যখন আমরা বুঝতি পারি আমাদের অবজ্ঞা বা প্রত্যাখান করা হয়েছে তখন আমরা সাথে সাথেই উদ্বেগের কথা জানাই। আমাদের সামগ্রিক লক্ষ্য হলো ইয়েমেনের পক্ষগুলোর মধ্যে জাতিসঙ্ঘের মধ্যস্থতায় শান্তি স্থাপন।
সৌদি আরব থেকে সেনা ফিরিয়ে নিচ্ছে মালয়েশিয়া
আল জাজিরা, ২৮ জুন ২০১৮
মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুহাম্মদ সাবু বলেছেন, মালয়েশিয়ার নতুন সরকার সৌদি আরব থেকে তাদের সৈন্য ফিরিয়ে আনবে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, মুহাম্মদ সাবু বুধবার এক বক্তব্যে বলেছেন সৌদি আরবে মালয়েশিয়ান সৈন্যের উপস্থিতি দেশটিকে আঞ্চলিক দ্বন্দ্বে ফেলে দিচ্ছে।
সাবু বলেন, মালয়েশিয়ান সৈন্যরা সৌদি আরবের প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনে যুদ্ধ করছেনা।
সাবু দেশটির সরকারি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, মালয়েশিয়া সব সময় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বদ্ধ পরিকর। তারা কখনো আক্রমণাত্বক বৈদেশিক নীতির পথে চলে না।
সেনা প্রত্যাহরের সিদ্ধান্তটি গত সপ্তাহে নেয়া হয়েছিল উল্লেখ করে সাবু বলেন, সেনা প্রত্যাহারের সময় নির্ধারণের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে শীঘ্রই আলোচনা শুরু হবে।
ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের সমর্থনে ২০১৫ সালে সৌদি আরব, একাধিক আরব রাষ্ট্রগুলোকে সাথে নিয়ে সামরিক অভিযান শুরু করে। ২০১৪ সালে হুতি বিদ্রোহীরা দেশটির অধিকাংশ এলাকা দখল করার পর তোদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
অধিকাংশ দেশ মার্কিন সমর্থিত জোট থেকে বেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ইয়েমেনে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘ বলেছে, সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট গত বছরে ইয়েমেনে নিহত অধিকাংশ শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী।
মালয়েশিয়ার কতজন সেনা সৌদি আরবে অবস্থান করছে তা জানা যায়নি। ২০১৫ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের আরব উপদ্বীপের দেশটিতে সেনা পাঠায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা