৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


শাহজালালে ৪ ফ্লাইটের পৌনে ২০০ যাত্রীর যাত্রা বাতিল

ভিজিট ভিসায় এসব যাত্রী মালয়েশিয়া, দুবাই, আবুধাবি ও শারজাহ যাচ্ছিলেন
-

দুবাই-শারজাহ-আবুধাবি ও মালয়েশিয়াগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কয়েকটি ফ্লাইটে ওঠার আগেই ‘সন্দেহজনক’ পৌনে ২০০ যাত্রীর যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। তবে কী কারণে তাদের যাত্রা বাতিল হয়েছিল সেই ব্যাপারে জানতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের পরও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মালয়েশিয়া, দুবাই, আবুধাবি ও শারজাহগামী মোট ৪টি ফ্লাইটের যাত্রীদের ইমিগ্রেশনে যাওয়ার পর আটকে দেয়া হয় বলে বিমানবন্দর টার্মিনাল সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে গতকাল সোমবার রাত সোয়া ৭টার দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনালের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা) জেনারেল ম্যানেজার (ট্রাফিক) মো: রাশেদুল করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, গত ১০ এপ্রিল ৪টি ফ্লাইটের যাত্রীরা ইমিগ্রেশন অতিক্রম না করতে পারার কারণে তাদের যাত্রা বাতিল হয়েছিল। তবে এই সংখ্যা আসলে কত তা তালিকা না দেখে বলতে পারব না। তিনি বলেন, যাত্রীরা ইমিগ্রেশন ক্রস করতে না পারায় আমাদের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের সিটগুলো খালি গেছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ফ্লাইট শিডিউল ঠিক থাকার পরও যদি কোনো যাত্রী বিমানবন্দরে কোনো কারণে অফলোড করা হয় তাহলে প্রথমেই আমাদের বিমান ছাড়তে বিলম্ব হয়ে যায়। কারণ পরবর্তীতে তাদের (যাত্রী) ব্যাগেজ অফলোড করতে হয়। আর কনটেনার থেকে ব্যাগেজ খুঁজতে গিয়ে কিছুটা সময় লেগে যায়। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যাত্রীদের ভিসার সব তথ্য কিন্তু আমাদের কাছে থাকে না। থাকার কথাও নয়। এয়ারলাইন্সের টিকিট সংক্রান্ত তথ্য থাকে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনালের দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা ওই দিনের যাত্রীদের যাত্রা বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তকে বলেন, গত ১০ এপ্রিল বুধবার রাত ৯টায় বিমানের আবুধাবিগামী ফ্লাইট (বিজি-২২৭) থেকে ৪৮ জন, একই দিন রাত সাড়ে ৮টায় শারজাহগামী ফ্লাইটের ৪০ জন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (বিজি-৩৪৭) দুবাইগামী ফ্লাইটের ৭৩ জন যাত্রী ও একই দিন রাত সাড়ে ৮টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কুয়ালালামপুরগামী (বিজি-৩৮৬) ফ্লাইটের ৪ যাত্রী উড়োজাহাজে ওঠার লক্ষ্য ইমিগ্রেশন করাতে গেলে তাদের আটকে দেয়া হয়। সবমিলিয়ে ওই দিন ৪টি ফ্লাইটের মোট ১৬৫ জন যাত্রীর যাত্রা বাতিল হয়েছে বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে।
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে গতকাল সোমবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের ওসি (এএসপি) পলাশ সাহার সাথে এ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি কয়েক দিন হলো এখানের দায়িত্ব আছি। আমার শিফটে কোন যাত্রী অফলোডের ঘটনা ঘটেনি। ১০ এপ্রিল সম্ভবত ‘ক’ পালার দায়িত্বে ছিলেন এএসপি আতিক সাহেব।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যার আগে এএসপি মোহাম্মদ আতিক এর সাথে যোগাযোগ করে ১০ এপ্রিল ৪ ফ্লাইটের মোট ১৬৫ যাত্রীর যাত্রা বাতিল হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইতে তিনি প্রথমে বলেন, এই বিষয়টি আমার সিনিয়র স্যাররা অবগত আছেন। তবে অফলোডের সংখ্যা এত বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে না। এরপর তিনি বলেন, আমি স্যারদের সাথে কথা বলে জানাচ্ছি। পরবর্তীতে আবার তার সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি আর সাড়া দেননি।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে ভিজিট ভিসার নামে দেদার মানবপাচার বেড়ে গেছে। ঢাকা এবং দুবাইসহ বিভিন্ন দেশের দালাল চক্রের প্রলোভনে পড়ে গ্রামের অসহায় অনেকেই বৈধপথে বিদেশ না গিয়ে অবৈধপথে পাড়ি জমাচ্ছেন। বিশেষ করে দুবাই গিয়ে অনেকেই আর দেশে ফিরছে না। সেখান থেকে ইউরোপের উদ্দেশ্য কেউ লিবিয়া, আবার কেউ অন্যপথে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। এতে অনেকেই সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কিছুটা নজরদারি বাড়ানোর ফলে ওই দিন যাত্রী অফলোডের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন বিমানবন্দরের দায়িত্বশীলরা।


আরো সংবাদ



premium cement