২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন

জাতীয়তাবাদী বিজয়ীদের দায়িত্ব গ্রহণে বিরত থাকতে চিঠি, খোকনের না

-


মারামারি ও মামলার মধ্য দিয়ে শেষ হওয়া সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতিসহ চারটি পদে বিজয়ী বিএনপি প্রার্থীদের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচন দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল বুধবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ও মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইস্যু করেন।
চিঠিতে নতুন নির্বাচিত সভাপতিসহ চারটি পদে বিজয়ীদের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাদের নামকাওয়াস্তে বিজয়ী দেখানো হয়েছে। বিজ্ঞ আইনজীবী সমাজ ও দেশের আপামর জনগণ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র কেন্দ্রীয় নেতা, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি/সম্পাদকদের এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিগত ৬ ও ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের পর গত ১০ মার্চ ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ন্যায়সঙ্গত যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, আপনাকে/আপনাদের এই মর্মে জানানো যাচ্ছে যে, আপনি/ আপনারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ এর মেয়াদকালের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। আপনি/আপনারা দলের দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে দলীয় এই সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে পালন করবেন।’

তবে সংগঠনের দেয়া চিঠিতে পুনর্নির্বাচনের দাবির সাথে একমত পোষণ করলেও দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন কি না সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ভোট গণনায় জালিয়াতি হয়েছে। আমি কিন্তু ওই দিনই ভোট পুনঃগণনার দাবি করেছি। আমার সেই আবেদন তখন কমিশন গ্রহণ করেনি। পুরো প্যানেলে আমরা কমপক্ষে ১২ জন এগিয়ে ছিলাম। পুনর্নির্বাচনের দাবিতে আমরা এখনো অটল। আমার সভাপতি পদেও আমি পুনর্নির্বাচন চাই। পুনর্নির্বাচন হলে আমি খুশি হবো, আইনজীবীরা খুশি হবেন। আর পুনর্নির্বাচন যদি না হয়, আমি সভাপতি পদসহ চারটি পদে বিজয় হয়েছি, এখনতো আর পদত্যাগের সুযোগ নাই, শুধু এই চার পদে পুনর্নির্বাচনেরও সুযোগ নাই।

এ সময় তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের একজন নেতার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার ভূমিকা রহস্যজনক।
আওয়ামী লীগকে পুরো প্যানেল দিতে ওই নেতা ভোট গণনার সময় বিরত থাকতে অনুরোধ করেছিলেন। ভোট যাই হোক গণনা সুষ্ঠু হলে কম করে হলেও আমরা ১৩টি পদে জয়ী হতে পারতাম।
কে কী বলল, সেটার দেখার বিষয় নয়। আমার পরাজয়ে কোনো ইতিহাস নাই। সে সময় তারা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা না হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে আমরা জয়ী হতে পারতাম।
দায়িত্ব না নেয়ার জন্য সংগঠনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত, দায়িত্ব নেয়া বা না নেয়ার কী আছে।
গত ৬ ও ৭ মার্চ দু’দিনব্যাপী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনজীবীদের মধ্যে মারামারি, হামলা মামলার ঘটনাও ঘটে। পরবর্তীতে ৯ মার্চ ভোট গণনা করে ফল ঘোষণা করা হয়। যেখানে সভাপতিসহ চারটি পদে বিএনপি এবং ১০ পদে আওয়ামী লীগ জয় পায়। আগামী ৩১ মার্চের পরে নতুন কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
নির্বাচনে সভাপতি পদে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হন। অন্যদিকে সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ তথা সরকার-সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ (সাদা প্যানেল) থেকে অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনে সম্পাদক, দুই সহ-সভাপতি, দুই সহ-সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ ও সদস্য পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ তথা সাদা প্যানেলের ১০ জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে সভাপতিসহ ও তিনটি সদস্যসহ চার পদে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য (নীল) প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement