গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কিছু কিছু ভালো কাজ করেছেন। যেমন- মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করেছেন। কিন্তু দুটি কাজ ভুল করেছেন। একটি আব্দুল কাদের মোল্লা, আরেকটি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারটা সঠিক হয়নি। এ জন্য আপনি যতটা দায়ী, তার চেয়ে বিচারকরা বেশি দায়ী। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি) আয়োজিত রাজবন্দীর মুক্তি দাও শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মাওলানা সাঈদী আমার প্রিয় মানুষ নন। তিনি ওয়াজ করতেন। মাঝে মাঝে ভালো কথা বলতেন। পিতা-মাতার সেবা করার কথা বলতেন। অভিযোগ করা হয়েছেÑ তিনি হুমায়ূন আহমেদের বাবা পুলিশ অফিসারকে হত্যা করেছেন। হুমায়ূন আহমেদের মা একটি বই লিখেছেন, তিনি সাঈদীকে অভিযুক্ত করেননি। সেখানে তিনি বলেছেন, তখন সাঈদীর বয়স ১৪ বছর। তিনি এখনো জেলে আছেন। এটি খুবই খারাপ কাজ। যেমনভাবে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছেন, তাও ঠিক নয়।
তিনি বলেন, আপনি আব্দুল কাদের মোল্লাকে ‘কসাই’ কাদের নাম দিয়ে ফাঁসি দিয়েছেন। তিনি তো ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। উনি তো ছাত্রশিবিরও করেননি। এখনো মতিয়া চৌধুরী বেঁচে আছেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ বেঁচে আছেন। তাদেরকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়নি। এমন একটি ব্যক্তিকে বিচারকরা বিচার না করে কেবল জোয়ারের ভাটায় নৌকা উঠিয়ে দিয়ে ফাঁসি দেয়াটা কতটা অন্যায় কাজ সেটা আল্লাহ বিচার করবে।
আলেম সমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, আলেম-ওলামা (মামুনুল হক বাদে) যাদের আটক করে রেখেছেন তারাও নির্দোষ। আজ আলেম সমাজ রাস্তায় নামেন না। তারা যদি রাস্তায় নামেন, তাহলে আমিও তাদের সাথে থাকব। তিনি বলেন, জনগণের মধ্যে প্রচলিত আছে, গত কয়েক বছরে লবিস্টের জন্য জয় ৯ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন। এর উত্তর সরকারের দেয়া উচিত। এ ছাড়া তথ্য উপদেষ্টা হিসেবে তিনি মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার ভাতা পেয়ে থাকেন। এটা সত্য কি না, তাও পরিষ্কার করা উচিত সরকারের।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমাদের যে সেলফোন আছে, তা থেকে সরকারের যা আয় হয়, সেখান থেকে সাড়ে ৭ ভাগ ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস পায়। যার প্রধান বাংলাদেশে সালমান এফ রহমান এবং আমেরিকায় হলেন জয়। এটা সত্য কি না, সরকারের উচিত তা প্রকাশ করা।
প্রতিবাদ সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০২২ সাল ঘটনাবহুল হবে। ২০২২ সালে অনেক কিছু দেখতে পাবেন। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে শুরু হয়েছে মাত্র। আরো অনেক ঘটনা বাকি, এই সাল হবে ঝঞ্ঝার, আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হতে পারে। সেখানে সব শ্রেণীর মানুষের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। মাঠে নামার প্রস্তুতি নিন। যে আন্দোলনে আলেমরাও থাকবেন, আমরাও থাকব, জিন্সের প্যান্টও থাকবে, পাঞ্জাবিও থাকবে। আর সেটি হবে গণ-আন্দোলন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কখনো নির্বাচনে দাঁড়িয়ে পরাজিত হননি। তার এ জনপ্রিয়তার কারণেই তাকে জেলে পুরে রাখা হয়েছে। যে টাকা খরচই হয়নি উল্টো বেড়েছে, তার জন্য তাকে দিনের পর দিন জেলে রাখা হচ্ছে। এ অবস্থা আর কতদিন চলবে, এরও অবসান হবে। নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সার্চ কমিটির নামে যা হচ্ছে তা নাটক। তিন বছর আগেই শেখ হাসিনা সার্চ কমিটি করে রেখেছেন।
তিনি আরো বলেন, নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে কিছু দানবের বিরুদ্ধে যারা নরহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। কিন্তু যারা এই নরহত্যার নির্দেশ দিয়েছে তাদেরকে তো এখনো নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। যারা এই সরকারি বাহিনীকে এসব কাজে যুক্ত করে তাদেরও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা উচিত। সরকার আলেমদের শাস্তি দিয়ে বিশ্বকে দেখাচ্ছে আমরা জঙ্গিবাদ দমন করতেছি। সরকারের এমন চিন্তায় দেশের অনেক কৃতী সন্তান কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপির) চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহেরের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য দেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক, গণফোরামের মহাসচিব সুব্রত চৌধুরী, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা