২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী, বেড়েছে ওএমএস’র বরাদ্দ ও আওতা

-

বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জে নিম্নআয়ের মানুষের হা-হুতাশ বাড়ছে। মানুষের আয় না বাড়লেও দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে চাল-সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম। এ অবস্থায় সরকার খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল ও আটা বিক্রির আওতা বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে শ্রমজীবী ও প্রান্তিক মানুষের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ জন্য বরাদ্দের বাইরে তিন লাখ টন চাল ও এক লাখ টন গমের বাড়তি বরাদ্দ অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলা পর্যায়ে ওএমএস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, ঢাকা মহানগরীর বরাদ্দও দ্বিগুণ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, সিটি করপোরেশন, শ্রমঘন চার জেলা, অন্যান্য জেলা সদর ও পৌরসভায় ৭০৫টি কেন্দ্রে ওএমএস কার্যক্রম চালু ছিল। গতকাল থেকে নতুন করে আরো এক হাজার ৫৯টি কেন্দ্রে ওএমএস চালু হয়েছে। দেশের সব উপজেলায় গতকাল থেকে খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল-গম বিক্রি হচ্ছে। ঢাকা মহানগরের চলমান প্রতিটি ওএমএস দোকানে ১ টন চাল বরাদ্দ ছিল। গতকাল থেকে আরো ১ টন বাড়িয়ে দুই টন করা হয়েছে। পাশাপাশি চালের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ঠেকাতে আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খাদ্যশস্যের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধে নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীকে মূল্য সহায়তা প্রদান এবং বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষে ২০১২ সালে খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল-আটা বিক্রি কার্যক্রম চালু হয়। বর্তমানে ডিলারদের দোকান ও খোলা ট্রাকের মাধ্যমে প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা ও আটা ১৮ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ক্রেতা একবারে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি করে চাল ও আটা কিনতে পারেন। গত সাড়ে ছয় মাসে বাজারের তুলনায় কম দামে চার লাখ ৫৭ হাজার ১৩৮ টন চাল ও আটা সরবরাহ করা হয়েছে। মুষ্টিমেয় লোক উপকারভোগী হলেও বাজারে পণ্যগুলোর দাম কমেনি, উল্টো বেড়েছে।
জানা যায়, চলতি অর্থবছরে ওএমএস কার্যক্রমের জন্য বাজেটে এক লাখ ৭০ হাজার টন চাল এবং তিন লাখ ৬৪ হাজার টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় শ্রমজীবী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওএমএসের চাল ও আটার চাহিদা বেড়েছে। রাজধানীর ডিলারদের দোকান ও খোলা ট্রাকে ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেখানে নিম্নআয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তদের অনেকেই লাইনে দাঁড়াচ্ছেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছর মধ্য জানুয়ারিতে সরকারি গুদামে খাদ্যশস্য মজুতের পরিমাণ ছিল সাত লাখ ২১ হাজার টন। এর মধ্যে চালের মজুদ ছিল পাঁচ লাখ ৩৭ হাজার টন, যা মজুদ হিসেবে ছিল স্মরণকালের মধ্যে তলানিতে। বর্তমানে গত ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত খাদ্যশস্যের মজুদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৭৮ হাজার টনে। এর মধ্যে চাল মজুদের পরিমাণ ১৬ লাখ ৯ হাজার টন গম ৩ লাখ ৪৪ হাজার টন, ধান ৩৮ হাজার টন।
এদিকে ঢাকা মহানগরীতে খাদ্যশস্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ওএমএসের চাল ও আটা বিতরণ কার্যক্রম (দোকান/ট্রাকসেল) সরেজমিন তদারকি/মনিটরিং করার জন্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মাৎ নাজমানারা খানুম বলেন, করোনাকালীন যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় খাদ্য মন্ত্রণালয় সরকারি গুদামগুলোতে ইতোমধ্যে খাদ্যশস্যের বাফার মজুদ গড়ে তুলেছে। এখন খাদ্যশস্যের মজুদের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ টন। এই বাফার মজুদ দেশে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি বাজার পর্যায়ে দাম সহনীয় রাখতে আমরা ওএমএস কার্যক্রমও জোরদার করছি। উদ্দেশ্য এই করোনা পরিস্থিতিতে যাতে দেশের নিম্নআয়ের মানুষ কম দামে চাল বা আটা কিনতে পারেন।


আরো সংবাদ



premium cement