২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টিকায় শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষক ও অভিভাবকদের অগ্রাধিকার দেয়ার দাবি

-

করোনার টিকা প্রাপ্তিতে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষক ও অভিভাবকদের অগ্রাধিকার দেয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক সংগঠন ও অভিভাবক ফোরামের নেতারা। একই সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদেরও টিকা নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় শুধু শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে করোনার ঝুঁকি কমানো যাবে না বলেও মত দিয়েছেন শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ।
এদিকে দীর্ঘ ১৪ মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিও ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। প্রয়োজনে করোনা ভ্যাকসিনের (টিকা) আওতায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও অগ্রাধিকার দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করার তাগিদ দিয়েছেন তারা। দীর্ঘ দিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় একদিকে যেমন পড়ালেখার অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে তেমনি ছেলেমেয়েদের মানসিক বিকাশও চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে কিন্ডারগার্টেনগুলো বন্ধ থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান চিরতরে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে দেশের শতকরা ৯৭ ভাগ অভিভাবকই চান অতি দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হোক। কেননা গবেষণায় উঠে এসেছে করোনা এবং কয়েক দফা লকডাউনের কারণে প্রাইমারিতে ১৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিকে ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী নিয়মিত পড়াশোনার বাইরে রয়েছে। এই অবস্থায় আর কিছু দিন চলতে থাকলে এসব নিয়মিত শিক্ষার্থীকে আর পড়াশোনায় ফেরানো সম্ভব হবে না। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) যৌথ গবেষণা জরিপে ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেছেন, স্কুল খুললে তারা সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন। আর মাধ্যমিকের ৯৬ শতাংশ অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর পক্ষে মতো দিয়েছেন। তবে তারা প্রত্যেকেই শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় এনে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি আগে নিশ্চিত করারও তাগিদ দেন।
কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী নয়া দিগন্তকে জানান, আমরা প্রায় ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাবো টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষক ও অভিভাবকদেরও টিকার আওতায় এনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেন খুলে দেয়া হয়। লক্ষাধিক শিক্ষক এক বছর ধরেই খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি খুলে দেয়া না হয় তাহলে সামনে আমাদের প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবির দুলু নয়া দিগন্তকে জানান, চীন থেকে যে টিকা আসছে আমাদের দাবি থাকবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবকদেরও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিয়ে স্কুল কলেজ খুলে দিতে হবে। টিকা নিশ্চিত না করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না। সরকারকে এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রাখতে হবে।
যদিও মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আনার প্রক্রিয়া চলছে। সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া। তিনি উল্লেখ করেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা আসছে। যদি ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে দিতে পারি তারপর ইনশাআল্লাহ তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও টিকা দিয়ে সেগুলো খুলে দিতে পারব।
এর আগে গত রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানানো হয় চীন থেকে যে টিকা আসছে সে টিকা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন চীনে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি যেসব শিক্ষার্থী পড়ালেখা করতে নতুন করে চীনে যেতে চাইবে তারাও টিকা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement