২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রায়পুরায় ২ গ্রুপের সংঘর্ষে গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে নিহত ৩, আহত ৩০

-

দীর্ঘদিন বিরতির পর আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চল। রায়পুরা উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গত দুই দিনে গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হয়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ হয়। নিহতরা হলো- হবি মিয়ার ছেলে ইয়াছিন মিয়া (১৩), আশ্রাব উদ্দিনের ছেলে জহির মিয়া (২৮) ও নুরু মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫)। রায়পুরা উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের কাচারীকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন। অন্তত ২০টি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, মালামাল ও গবাদিপশু লুটপাট হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ এ ঘটনায় একনালা দুইটি বন্দুক ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাড়াতলী ইউপি সদস্য শাহ আলম মিয়া ও সাবেক ইউপি সদস্য মরহুম ফজলু মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই জেরে গত কয়েক দিন ধরে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। গত সোমবার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। প্রথমে ফজলু মেম্বারের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায় শাহ আলম মেম্বারের লোকজন। এ সময় ফজলু মিয়ার সমর্থক হবি মিয়ার ছেলে ইয়াছিন (১৩) বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে জহির মিয়া (২৮) মুখে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান এবং দুপুরে চোখে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে শফিকুল ইসলাম (২৫) হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। নিহতরা সবাই মরহুম ফজলু মেম্বারের সমর্থক।
পুলিশ লাশ তিনটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। আহতদের ভৈরব, নবীনগর, নরসিংদীসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) রাসেল শেখ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক দেবদুলাল দে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করা হয়েছে এবং অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৩ মে রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষ্মার দড়িগাঁও গ্রামে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে লাঠিয়ালদের হাতে টেঁটাবিদ্ধ হন রায়পুরা থানার চার পুলিশ সদস্য। ঘটনার দিন রাতে পুলিশ দড়িগাঁও গ্রামে পৌঁছলে লাঠিয়ালদের মুখোমুখি হয়। এ সময় লাঠিয়ালরা পুলিশের ওপর হামলা চালালে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে আহত হন রায়পুরা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ নাসির (৪৫), নায়েক বাবুল আলী (২৯), সিপাহি শফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম। চার দিন নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর গত সোমবার তারা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।

 


আরো সংবাদ



premium cement