মায়ের কবরের পাশে শামসুজ্জামান খানের দাফন

বাংলা একাডেমির সভাপতি ও সাবেক মহাপরিচালক, লেখক, গবেষক, শামসুজ্জামান খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গত বুধবার আসর নামাজের পর মানিকগঞ্জে মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
ওইদিন বেলা ২টায় তিনি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি দীর্ঘ দিন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বেও ছিলেন। তিনি স্ত্রী ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন। এপ্রিলের শুরুতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন অধ্যাপক শামসুজ্জামান। তার স্ত্রীও আক্রান্ত হন। দু’জনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ছিলেন।
একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান একাধারে ছিলেন লোকসংস্কৃতি ও পল্লীসাহিত্য গবেষক। তিনি একুশে পদক ছাড়াও বাংলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার, কালুশাহ পুরস্কার, দীনেশচন্দ্র সেন ফোকলোর পুরস্কার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী জাতীয় গবেষণা পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার পান।
শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্মজীবনের সূচনা। বিভিন্ন সময় মুন্সীগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ, ঢাকার জগন্নাথ কলেজ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৪ মে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হন। তার পদের মেয়াদ তিনবার বাড়ানো হয়, শেষ হয় ২০১৮ সালে।
১৯৪০ সালের ২৯ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার চারিগ্রামে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। তার রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফোকলোর চর্চা, বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা ও বর্তমান বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর সাথে আলাপ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, মুক্তবুদ্ধি, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমকাল, বাঙালির বহুত্ববাদী লোকমনীষা, মীর মশাররফ হোসেন : নতুন তথ্যে নতুন ভাষ্যে, সৃজনভুবনের আলোকিত মানুষেরা, রঙ্গরসের গল্পসমগ্র, কিশোর রচনাসমগ্র, বাংলাদেশের উৎসব, বাংলা সন ও পঞ্জিকা, ফোকলোরচিন্তা ইত্যাদি।
শামসুজ্জামান খানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।