ফেনীর নিজ গ্রামে চিরনিদ্রায় মকবুল আহমাদ

অসংখ্য দলীয় নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মকবুল আহমাদ। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ওমরাবাদ আমিন বাড়িসংলগ্ন মাঠে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।
জানাজা-পূর্ব বক্তব্য রাখেন জামায়াতের বর্তমান আমির ডা: শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম, নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিচালক আবদুর রব, কর্মপরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, কুমিল্লা মহানগরী আমির দ্বীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিস শূরা সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঞা, ফেনী জেলা আমির এ কে এম সামছুদ্দীন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমির খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা আমির অধ্যাপক আশ্রাফ আলী, নোয়াখালী জেলা আমির মাওলানা আলাউদ্দিন, লক্ষ্মীপুর জেলা আমির রুহুল আমির, ফেনী জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক আবু ইউসুফ, দাগনভূঞা উপজেলার সাবেক আমির এ এস এম নুর নবী দুলাল, পৌর আমির মাওলানা কামরুল হাসান, দাগনভূঞা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন চৌধুরী, পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রায়হান, সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন সোহেল, পূর্বচন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়ন আমির মাওলানা আবদুল ওহাব, মরহুমের ছোট ভাই খিজির আহম্মদ, বড় ছেলে আবদুল্লাহ আল মাসুদ।
দাগনভূঞা উপজেলা আমির গাজী সালেহ উদ্দিনের পরিচালনায় জানাজায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমির আ জ ম ওবায়াদুল্লা ও শাহজাহান চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তর সেক্রেটারি রেজাউল করিম, সহকারী সেক্রেটারি ডা: ফখরুদ্দীন মানিক, দক্ষিণ সহকারী সেক্রেটারি আবদুল জব্বারসহ বিপুলসংখ্যক নেতৃবৃন্দ ও মুসল্লি অংশ নেন। শেষে জন্মভূমির মাটিতেই বর্ষিয়ান এ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার রাজনৈতিক অনুজ সহযোদ্ধা ও নেতাকর্মীরা।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর ইবনেসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
মকবুল আহমাদ ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ, ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে ফেনী-২ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, নায়েবে আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুল ও শরিষাদী হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। তার গ্রামের বাড়ি দাগনভূঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ওমরাবাদ গ্রামে।
মকবুল আহমাদ জামায়াতের তৃতীয় নির্বাচিত আমির। এর আগে গোলাম আযম ও মতিউর রহমান নিজামী দলটির নির্বাচিত আমির ছিলেন। এর বাইরে বিভিন্ন সময় আব্বাস আলী খান, মাওলানা আবদুর রহিম দলটির ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্বে পালন করেন। তৃতীয় ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবেও মকবুল আহমাদ দীর্ঘসময় দায়িত্ব পালন করেছেন।
জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতিতে মকবুল আহমাদ ২০১০ সালের ২৯ জুন থেকে ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত আমির ছিলেন। ২০১৭ সাল থেকে নির্বাচিত আমিরের দায়িত্বে ছিলেন। পরে ২০১৯ সালে তার স্থলে নতুন আমির হন ডা: শফিকুর রহমান।