২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের খোঁজে দুদক

স্বাস্থ্য অধিদফতর
-

স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রায় অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবৈধ সম্পদের বিষয় অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানে এরই মধ্যে তাদের বেশির ভাগেরই অঢেল সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে অর্থপাচারেরও অভিযোগ রয়েছে।
ইতোমধ্যে এসব ব্যক্তির সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে। আবার অনেককে তলব করে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এদের মধ্যে র্যাবের হাতে গ্রেফতার স্বাস্থ্যের আলোচিত ড্রাইভার মালেকের অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলার তদন্ত চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুদক উপপরিচালক মো: সামছুল আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বিশেষ টিম অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন- উপসহকারী পরিচালক মো: সহিদুর রহমান ও ফেরদৌস রহমান।
এ বিষয়ে দুদকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী সিন্ডিকেট করে দুর্নীতি করছে, এমন অভিযোগের বিষয়ে ২০১৯ সাল থেকে আমরা একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক আব্দুল মালেকসহ প্রায় অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্ত চলমান রয়েছে।
যাদের অনুসন্ধান চলছে তাদের মধ্যে রয়েছেন- জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সী সাজ্জাদ হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর মহাখালী অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কবির আহমেদ চৌধুরী ও মো: হুমায়ুন কবীর, কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: আলীমুজ্জামান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিক্যাল এডুকেশন শাখার অফিস সহকারী খাইরুল আলম, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের হিসাব রক্ষক মো: মজিবুর রহমান, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: ওয়াহিদুজ্জামান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখার উচ্চমান সহকারী রেজাউল ইসলাম, মহাপরিচালক দফতরের সহকারী প্রধান মো: জোবায়ের হোসেন, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারী এম কে আশেক নওয়াজ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ইপিআই ভবন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর তোফায়েল আহমেদ ভূঁইয়া, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার অফিস সহকারী কামরুল হাসান, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (ইপিআই) মো: মজিবুল হক মুন্সি, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: ওবাইদুর রহমান, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিসাব রক্ষক মো: ইমদাদুল হক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের আলোচিত গাড়িচালক আব্দুল মালেক, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: মাহমুদুজ্জামান, শহীদ তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্টোর অফিসার মো: নাজিম উদ্দিন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিসাব রক্ষক মো: আনোয়ার হোসেন, বরিশাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক কার্যালয়ের সহকারী প্রধান পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মীর রায়হান আলী, গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজের স্টেনোগ্রাফার-কাম-কম্পিউটার অপারেটর মো: সাইফুল ইসলাম, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের হিসাব রক্ষক এ টি এম দুলাল, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, মুগদা মেডিক্যাল কলেজের হিসাব রক্ষক আবদুল্লাহ হেল কাফি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: ফারুক হাসান, প্রধান সহকারী মো: আশরাফুল ইসলাম, মো: সাজেদুল করিম, উচ্চমান সহকারী মো: তৈয়বুর রহমান, উচ্চমান সহকারী মো: সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য অধিদফতরের উচ্চমান সহকারী মো: ফয়জুর রহমান, রংপুর মেডিক্যাল কলেজের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আলিমুল ইসলাম, সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের ল্যাব সহকারী আব্দুল হালিম ও সুব্রত কুমার দাস, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সচিব মো: আনায়ার হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক মো: শাহজাহান, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের স্টোর কর্মকর্তা মো: দেলোয়ার হোসেন, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের হিসাব রক্ষক আব্দুল মজিদ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্টোর ম্যানেজার ইপিআই হেলাল তরফদার, ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা: আবুল কালাম আজাদ, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের স্টোর কিপার সাফায়েত হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র স্টোর কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম এবং কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের হিসাব রক্ষক আব্দুল মজিদ।
দুদক সূত্র জানায়, এদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক মালেকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। তাদের মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। এ ছাড়া বাকিদের বিভিন্ন সময় নোটিশ দেয়া হয়েছে। অনেককে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। শিগগিরই আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement