রাজধানীতে ভুয়া চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞসহ গ্রেফতার ৩
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৪ জুলাই ২০২০, ০০:০০
রাজধানীতে গত তিন বছর থেকে ভুয়া চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছিলেন শওকত হোসেন। কিন্তু বিষয়টি এতদিন রোগী ও তাদের স্বজনরা কিছুতেই আঁচ করতে পারেননি। অবশেষে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে তা বের হয়ে এসেছে। এ ঘটনায় ওই ভুয়া চিকিৎসককসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেনÑ ভুয়া চিকিৎসক শওকত হোসেন সুমন, ল্যাব টেকনোলজিস্ট অসীম মণ্ডল ও ফার্মেসি ইনচার্জ কাকন মিয়া। গত রোববার রাতে ডেমরা থানার এসএইচএস হেলথ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিকে অভিযান চালায় র্যাব-৩। এতে নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। পরে তাদের তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানা করেন ম্যাজিস্ট্রেট। ওই প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও চেয়ারম্যান ছিলেন ভুয়া চিকিৎসক শওকত হোসেন সুমন
ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, শওকত চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ হিসেবে গত তিন বছর ধরে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। রোগীও আসেন তার চেম্বারে। কিন্তু নিজের না আছে বিশেষ কোনো ডাক্তারি বিদ্যা কিংবা সনদ। না আছে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো অনুমোদন। তবুও তিন বছর ধরে ‘বিশেষজ্ঞ ডাক্তার’ হিসেবে এসএইচএস হেলথ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগোনস্টিকে সেবার নামে প্রতারণা করে যাচ্ছেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।
অভিযানে জানা যায়, হাসপাতালটি অনুমোদনহীন ভ্যাকসিন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ, সরকারি ওষুধ, নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রি করে আসছিল। এ ছাড়া অপরিষ্কার, অস্বাস্থ্যকর ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রীবিহীন রুমকে আইসিইউ রুম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। পরে এসব অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে এসএইচএস হেলথ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগোনস্টিকের চেয়ারম্যান ভুয়া চিকিৎসক শওকত হোসেন সুমনকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপাশি ল্যাব টেকনোলজিস্ট অসীম মণ্ডলকে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ফার্মেসি ইনচার্জ মো: কাকনকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। পরে এসএইচএস হেলথ কেয়ার হসপিটালকে সিলগালা করে দেয়া হয়।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরো বলেন, অভিযানকালে ভুয়া ডাক্তার সুমনকে রোগীর ব্যবস্থাপত্র প্রদানকালে হাতেনাতে আটক করা হয়। কিন্তু তিনি জিজ্ঞাসাবাদে ডাক্তারি সপক্ষে কোনো সার্টিফিকেট বা বৈধ কাগজ প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হন। পরে হাসপাতালের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ এক বছর আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালে যে সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার চিকিৎসা প্রদান করেন বলে দাবি করা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে তাদের কেউই সেখানে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন না। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পরীক্ষা না করেই বিভিন্ন ডাক্তারের স্বাক্ষর জাল করে রিপোর্ট প্রদান, মেয়াদোত্তীর্ণ অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার এবং কার্বন-ডাই অক্সাইড সিলিন্ডারকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডারে পরিবর্তন করে মুমূর্ষু রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে আসছিল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা