৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত হারুনের হাতে ভিক্ষার থালা

কাজী হারুন -

যার হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় স্বপ্নের রানীরূপে পর্দায় হাজির হয়েছেন নায়িকারা। নিজের কৃতিত্বে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। সেই হাতে আজ ভিক্ষার থালা। চিকিৎসা আর সংসারের অর্থ যোগানে তাকে নামতে হয়েছে পথে। তার নাম কাজী হারুন।
‘বেদের মেয়ে জোছনা’র মতো ব্যবসাসফল এবং জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের তিনি মেকআপম্যান ছিলেন। গুণী এই মেকাপম্যান ‘অন্য জীবন’, ‘শঙ্খমালা’, ‘গোলাপী এখন ঢাকা’, ‘জীবন সংসার’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। দীর্ঘ দিনের ক্যারিয়ারে পেয়েছেন নানা স্বীকৃতিও। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’ ছবিতে কাজের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর ফরিদাবাদ বস্তিতে স্ত্রী মহুয়া আকতারকে নিয়ে বসবাস করেন তিনি। তিনটি বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে ঘরভাড়া দেন স্ত্রী মহুয়া, অপর দিকে ভিক্ষা করে জীবনধারণের খরচ চালান কাজী হারুন। তবে শুধু দারিদ্র্যই নয়, হারুনের আরো এক প্রতিপক্ষ হলো তার শারীরিক অসুস্থতা। যার সুচিকিৎসা তিনি করাতে পারছেন না অর্থের অভাবে। চলচ্চিত্র নির্মাণে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না অনেক দিন। তাই ভিক্ষার টাকাতেই কোনোমতে চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মেকআপম্যান হারুনের সংসার চলে এখন ভিক্ষা করে। গত বছর এমন খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রী ডেকে নিয়ে তাকে পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দেন। সেই সাথে সুপার শপ ‘স্বপ্ন’ এক বছরের জন্য প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা সমমানের গৃহস্থালি পণ্য দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছে। তবে সেই সাহায্য বন্ধ হয়েছে কয়েক মাস আগে। এদিকে সরকারি অনুদানের টাকায় চিকিৎসা ও সাংসারিক ব্যয় চালিয়ে সেটাও শেষ। তাই আবারো টিকে থাকার যুদ্ধে নামতে হয়েছে বৃদ্ধ এই মেকআপশিল্পীকে। আবারো থালা হাতে পথে পথে ভিক্ষা করছেন তিনি।
জানা গেছে, জীবন ও নিজের ওপর অভিমান করে হঠাৎ বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ একমাস পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ রাখেননি। কমলাপুর রেলস্টেশনে দিন-রাত ভিক্ষা করে, রাতে ইট মাথায় দিয়ে ঘুমিয়েছেন। পাঁচ হাজার টাকা জমিয়ে বাসায় ফিরে গিয়েছিলেন। এরপর থেকে আবারো নিয়মিত ভিক্ষা করেই সংসার চালাচ্ছেন তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement