০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় হানিফের ভিন্নধর্মী লড়াই

-

ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকার এবং নির্বিঘœ ভোটের পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে ‘টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া’ একক পদযাত্রায় নেমেছেন হানিফ বাংলাদেশী। গত ১৪ মার্চ পদযাত্রা শুরুর পর ৩৫০ কিলোমটিার পথ পাড়ি দিয়ে তিনি এখন কুমিল্লায় পৌঁছেছেন। এ পথ অতিক্রম করতে তাকে নানা ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করতে হয়েছে। তারপরও থেমে যাননি হানিফ। তেঁতুলিয়া পর্যন্ত পথে পথে মানুষের কাছে তার আহ্বান পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর তিনি।
হানিফ গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, বর্তমানে মানুষের ভোটের প্রতি অনীহা তৈরি হয়েছে। মানুষ এখন আর ভোট দিতে যেতে চাচ্ছেন না। মূলত দলীয় সরকারের অধীনে মানুষ ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছেন। মানুষের মনে আতাঙ্ক বিরাজ করছে। মানুষ বলছে ভোট দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। এ জন্য আমি নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকার এবং নির্বিঘœ ভোটের পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলা থেকে একক পদযাত্রা শুরু করেছি। দীর্ঘ ৩৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বর্তমানে আমি কুমিল্লায় রয়েছি। আসার পথে মানুষের সাথে কথা বলেছি এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি সংবলিত লিফলেট বিতরণ করেছি। এ পদযাত্রায় নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হচ্ছে জানিয়ে হানিফ বাংলাদেশী বলেন, কক্সবাজারের একটি স্থানে কিছু লোক তার পথ রোধ করে নানা বিদ্রƒপাত্মক কথা বলতে থাকে। সাথে থাকা প্ল্যাকার্ড ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পরে এলাকার সচেতন লোকজন আমার পক্ষে এগিয়ে আসেন। তারা আমার দাবির প্রতি সমর্থন জানালে বাধাদানকারীরা আমার প্ল্যাকার্ড ও মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়। এরপর কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ঢুকে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাইলে আমাকে বাধা দেয়া হয়। ফলে সেখান থেকে আমি ফিরে আসতে বাধ্য হই।
হানিফ বলেন, বাধার পরও আমি আমার সংকল্প থেকে পিছু হটিনি। আমি নাগরিকদের ভোটাধিকারের দাবিতে আমার পদযাত্রা অব্যাহত রেখেছি। তিনি বলেন, মানুষ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করল, কিন্তু মানুষের মূল যে নাগরিক অধিকার সেই ভোট দিতে পারছে না। এটা মেনে নেয়া যায় না। এ দাবিতে সবার সোচ্চার হওয়া উচিত। পথে পথে মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে হানিফ বলেন, জেলায় জেলায় আমি হাট-বাজারে মানুষের সাথে কথা বলছি। তারাও আমার সাথে একমত পোষণ করছেন। কিন্তু তারা ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না। তবে সবাই চায় নিরপেক্ষ নির্বাচন। সবাই ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়।
হানিফ তার নিজের পরিচয় তুলে ধরে বলেন, ২০১৬ সালের ২০ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া গঠিত হয়। তখন তিনি জাতীয় যুব ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ফরোয়ার্ড পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। গত জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া পরবর্তীতে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সরকারের কাছে সাত দফা দাবি পেশ করেছিল। তাতে প্রথম দাবি ছিল দলনিরপেক্ষ সরকার। কিন্তু সরকার আমাদের একটি দাবিও মানেনি। এর প্রতিবাদে আমি এককভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করে প্রতিবাদ করেছিলাম। তখন ড. কামাল হোসেনও আমার ওপার রাগ করেছিলেন। কিন্তু আমি বলেছিলাম দলনিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। এরপর থেকেই আমি এ দাবিতে অনড় রয়েছি। পদযাত্রার খরচ নিজে এবং বন্ধুরা বহন করছে বলেও জানান হানিফ বাংলাদেশী।


আরো সংবাদ



premium cement