২২ মে ২০২৪, ০৮ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলকদ ১৪৪৫
`


ইসির কঠোর নির্দেশনা

নির্বাচনে ব্যয়ের যথাযথ হিসাব দাখিল না করা অর্থ আত্মসাতের শামিল

-


নির্বাচনী কাজে প্রাপ্ত অর্থের ভাউচার দ্রুত প্রেরণের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছে। কারণ অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, নির্বাচন সংক্রান্ত এসব কাজের জন্য প্রাপ্ত অর্থের কোনো ভাউচার দ্রুত প্রেরণ করা হয় না। ফলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে ব্যয়িত এ অর্থের বিষয়ে অডিট আপত্তি উত্থাপিত হয়। অনেক আপত্তি বছরের পর বছর অনিষ্পন্ন থাকে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। বরাদ্দকৃত অর্থ দ্রুত এবং ব্যয়ের এক মাসের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য সবাইকে তাগিদ দিয়ে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ইসি। তাতে এও বলা হয়েছে, সরকারি অর্থ খরচের সপক্ষে যথাযথ হিসাব দাখিল না করা অর্থ আত্মসাত করার শামিল বলে গণ্য হতে পারে।
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাশাপাশি নির্বাচনের সময় সব ধরনের প্রভাবের ঊর্ধ্বে থেকে যাবতীয় কাজ সম্পাদন করার জন্যও ইসির প্রকাশিত পরিপত্রে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা-২ (অধিশাখা) এর উপসচিব আতিয়ার রহমানের সই করা এ সংক্রান্ত ইসির নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, বিশেষ মহলের যেকোনো প্রকার প্রভাব বা হস্তক্ষেপের কারণে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা যাতে ক্ষুণœ না হয়, সেটি আইন ও আচরণ বিধিমালার আলোকে নিশ্চিত করতে হবে।
নির্বাচনী অর্থ ব্যয়ের বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারদের ইসি বলেছে, রিটার্নিং অফিসারগণ নির্বাচনী কাজের জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে প্রাপ্ত বা গৃহীত অর্থের হিসাব ও ভাউচার প্রদান ও সমন্বয়ের জন্য দায়ী থাকবেন। এ সংক্রান্ত কোনো অডিট আপত্তি উত্থাপিত হলে তা নিষ্পত্তির জন্যও তিনি দায়ী থাকবেন। রিটার্নিং অফিসারগণ প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে অর্থ প্রদানের সময় ওই অর্থ খরচের সপক্ষে দুই প্রস্থ করে ভাউচার প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করবেন। প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে প্রদত্ত অর্থ, রিটার্নিং অফিসারদের অনুকূলে বরাদ্দকৃত অন্যান্য খরচের অর্থ ব্যয়ের সপক্ষে দুই প্রস্থ করে ভাউচার যথাযথভাবে প্রস্তুতকরত খরচের সমন্বয় সাধন করতে হবে। সমুদয় অর্থের হিসাব বিবরণী নির্বাচন সমাপ্তির দুই সপ্তাহের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের কাছে দাখিল করতে হবে।
আর নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় নির্বাহের জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে রিটার্নিং অফিসারের অনুকূলে যেসব অগ্রিম অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হবে তিনি সেসব অর্থ ব্যয়ের সপক্ষে যথাযথ ভাউচার চূড়ান্ত হিসাব সংরক্ষণ করবেন। এতদ্ব্যতীত ওই হিসাব নির্বাচন সমাপ্তির পরপরই নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রেরণ করতে হবে। তিনি অগ্রিম উত্তোলিত অর্থের ভাউচার সংশ্লিষ্ট হিসাবরক্ষণ অফিসে দাখিল করে অগ্রিম উত্তোলিত অর্থের প্রত্যয়নপত্র (সিটিআর) সংগ্রহ করবেন।

অর্থ বরাদ্দ নিয়ে ইসি বলছে, নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যয় মেটানের জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা যেমন- রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, বিভাগীয় কমিশনার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার/জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাচন অফিসার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হয়। অগ্রিমও বরাদ্দ করা হয়।
নির্বাচনী অর্থবিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসারদের দায়িত্ব : প্রিজাইডিং অফিসারগণ ভোটকেন্দ্রের বেষ্টনী নির্মাণ, নির্বাচনী দ্রব্যাদি পরিবহন ও অন্যান্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভ্রমণ/দৈনিক ভাতাসহ অন্যান্য খাতে প্রাপ্ত/গৃহীত অর্থ ব্যয়ের সপক্ষে ‘দুই প্রস্থ যথাযথ ভাউচার’ অব্যশই ভোটগ্রহণ শেষে রিটার্নিং অফিসার/সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেবেন। নির্বাচনী অর্থব্যয়ের সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাদের অনুকূলে বরাদ্দপ্রাপ্ত অর্থের ব্যয়ের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওই অর্থের হিসাব, ভাউচার প্রদান ও সমন্বয়ের জন্য দায়ী থাকবেন। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্বাচন সমাপ্তির পরপরই এসব অর্থের সমন্বয় সাধন করে চূড়ান্ত হিসাব বিবরণী ইসি সচিবালয়ে প্রেরণ করতে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
ইসি হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছে, সরকারি অর্থ খরচের সপক্ষে যথাযথ হিসাব দাখিল না করা অর্থ আত্মসাৎ করার শামিল বলে গণ্য হতে পারে। তাছাড়া সরকারি অর্থব্যয়ের সপক্ষে যথাসময়ে ভাউচার দাখিল না করা, হিসাব প্রদান না করা আর্থিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী। অতএব, এ বিষয়ে যতœবান হতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement