৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মলদ্বার ও কোলনের রোগ উপসর্গ

মলদ্বার ও কোলনের রোগ উপসর্গ - ছবি : সংগ্রহ

পাইলস
রক্তপড়া (তাজা এবং অনেক সময় ফিনকি দিয়ে বের হয়ে আসা), মাঝে মধ্যে রক্তপড়া, সাধারণত ব্যথা থাকে না, মাংসপিণ্ড ঝুলে পড়া, অনেক সময় শুধু মাংস ঝুলে পড়ে এবং চুলকানি হয়।
এনাল ফিশার
মলত্যাগে প্রচণ্ড ব্যথা, জ্বালা যন্ত্রণা, পায়খানা গায়ে লেগে রক্ত যাওয়া বা টিস্যু পেপারে রক্ত দেখা এবং হাতে গেজের মতো লাগা।

ফিস্টুলা
মাঝে মধ্যে ব্যথা হওয়া, ফুলে যাওয়া, পুঁজ রক্ত পড়া, হাতের মধ্যে শক্ত কিছু একটা লাগা।
ক্যান্সার
কোলনের ডান পাশে ক্যান্সার- পেটের ডান পাশে ও নিচে সাধারণত চাকা নিয়ে রোগীরা আসে। শারীরিক দুর্বলতা বেশি থাকে।
কোলনের বাম পাশে- হঠাৎ খাদ্যনালী বন্ধ হয়ে পেট ফোলা নিয়ে এই রোগীরা আসে। বাম পাশের নিচের দিকে হলে পায়খানার সাথে মিশানো রক্ত নিয়ে রোগীরা আসতে পারে। অনিয়মিত পায়খানা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি উপসর্গ নিয়েও রোগীরা আসে।

রেকটাম ক্যান্সার
মলত্যাগের সময় রক্তপড়া (পায়খানার সাথে মিশানো) মলত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন, ঘন ঘন মলত্যাগ, সব সময় মলত্যাগের ইচ্ছা এবং মলদ্বার খালি না হওয়া ইত্যাদি উপসর্গই প্রধান। পুরাতন হলে মলদ্বারে ব্যথা, মাজার ব্যথা, পায়ে ব্যথা নিয়েও আসতে পারে।

ছড়িয়ে পড়া ক্যান্সার
পেটে পানি, পেটে চাকা, জন্ডিস, শ্বাসকষ্ট, কাশি, হাতে-পায়ে ব্যথা, মাজার ব্যথা ও ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি।

লেখক : বৃহদন্ত্র ও পায়ুপথ বিশেষজ্ঞ, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, (অব:) কলোরেকটাল সার্জারি বিভাগ, বিএসএমএমইউ, ঢাকা।
চেম্বার : ইডেন মাল্টি-কেয়ার হসপিটাল, ৭৫৩, সাত মসজিদ রোড, (স্টার কাবাব সংলগ্ন) ধানমন্ডি, ঢাকা।
ফোন : ০১৭৫৫৬৯৭১৭৩-৬


জন্মগত হৃদরোগ : কিভাবে বুঝবেন, কী করবেন

ডা: মুহম্মদ আশিকুর রহমান

‘জন্ম হোক যথা-তথা কর্ম হোক ভালো’... এ কথার সাথে আমি একমত নই। জন্মগত হৃদরোগ কেবল কোনো জন্মদাতা বাবা- মায়ের সঠিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারাই বহুলাংশে দায়ী। হার্টের জন্মগত ত্রুটি হার্টের ভেতরে স্বাভাবিক রক্ত চলাচলকে ব্যাহত করে। এর ফলে নবজাতকের শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। জন্মগত হৃদরোগের কিছু প্রধান কারণ হলো-

ক্স জন্মগত হৃদরোগ বংশগতভাবে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে পরিবারের অন্য সদস্যদের রোগটি থাকতে পারে। পারিবারিকভাবে নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর স্বল্পসময়ের ব্যবধানে মৃত্যুর ইতিহাস ওই পরিবারে জন্মগত হৃদরোগ বংশগতভাবে থাকার ইঙ্গিত বহন করে। কাজিন ম্যারেজ ও আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে অনেক সময় জন্মগত হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

ক্স সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের সঠিক ওষুধ না খাওয়ার জন্য জন্মগত হৃদরোগ হতে পারে। সে জন্য সব গর্ভবতী মায়ের উচিত যেকোনো কারণে চিকিৎসা গ্রহণের আগে অবশ্যই ডাক্তারকে জানানো উচিত যে তিনি গর্ভবতী। সে ক্ষেত্রে গর্ভকালীন সময়ে যে সব ওষুধ জন্মগত হৃদরোগ সৃষ্টি করতে পারে, সেসব ওষুধ লেখা থেকে ডাক্তারকে বিরত থাকতে হবে। ব্রণের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ভিটামিন ‘এ’ এনালগ এবং মুড ডিস-অর্ডারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত লিথিয়াম ব্যবহারকারী মায়ের গর্ভের সন্তানের জন্মগত হৃদরোগ হতে পারে।
ক্স গর্ভকালীন অভ্যাসগত কারণে মা যদি অ্যালকোহল অথবা অবৈধ নেশাজাতীয় ড্রাগ সেবন করে তবে তা-ও নবজাতকের জন্য জন্মগত হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

ক্স গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস হচ্ছে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময়। এ সময় গর্ভবতী মা রুবেলাসহ অন্যান্য ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হলে তা নবজাতকের জন্মগত হৃদরোগের কারণ হতে পারে। সে জন্য গর্ভকালীন গর্ভবতী মায়ের উচিত কোলাহলপূর্ণ স্থান ও সামাজিক মেলামেশা থেকে নিজেকে বিরত রাখা। অনেক সময় মা নিজেও জানেন না তিনি গর্ভবতী। তাই এ ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধিই একমাত্র প্রতিকারের উপায়।

ক্স চল্লিশোর্ধ্ব বা বয়স্ক মায়ের গর্ভজাত সন্তান মানুষিকভাবে বিকলাঙ্গ হতে পারে এবং তাদের জন্মগত হৃদরোগ সাথী হিসেবে থাকে। এর মধ্যে ‘ডাউন সিনড্রোম’ একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তাই ছেলে সন্তানের আশায় চল্লিশ বছরের পর মায়েদের গর্ভধারণ থেকে নিজেকে বিরত রাখাই বাঞ্ছনীয় হবে।

তাই সবশেষে জীবনের বন্ধন যথাতথা না করে বা তাড়াহুড়া পরিহার করে সঠিক খোঁজখবরের মাধ্যমে করা উচিত। জন্ম যথা-তথা হলে কর্ম ফলাফল হিসেবে জন্মগত হৃদরোগ ললাটের লিখন হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ‘জনম্ সামঝা করো, ‘উক্তিটির সাথে আমি একমত পোষণ করছি।

লেখক : সিনিয়র কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট, বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।


আরো সংবাদ



premium cement