সোমালীয় উপকূলে জিম্মি বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর অদূরে আন্তর্জাতিক সামরিক উপস্থিতির মাঝেই দস্যুদের সাথে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে জাহাজ মালিকপক্ষ। যদিও মালিকপক্ষ বলছে এখনো দস্যুরা মুক্তিপণ দাবি করেনি। পাশাপাশি জিম্মি নাবিকদের সাথে জাহাজ মালিকপক্ষ এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যোগাযোগের একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই যোগাযোগের সূত্রে জাহাজটিতে সুপেয় পানির সঙ্কট দেখা দেয়ার তথ্য উঠে এসেছে।
জাহাজ মালিকপক্ষ এবং নাবিকদের কয়েকজন স্বজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার নাবিকদেরকে স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে বাংলাদেশে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলতে দেয় জলদস্যুরা। ওই কথাবার্তায় জাহাজে সুপেয় পানির সঙ্কটের বিষয়টি উঠে আসে। তবে নাবিকরা সুস্থ ও নিরাপদ থাকার তথ্যও জানিয়েছেন। দস্যুরা নাবিকদের পানির ব্যবহার সীমিত করে দিয়েছে বলেও জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নাবিকদের মুক্তি ও জাহাজ উদ্ধারের বিষয়ে জলদস্যুদের সাথে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা তথা দরকষাকষি চলছে। একটা সম্মতিতে পৌঁছার পর আনুষ্ঠানিক আলোচনা হতে পারে বলে সূত্র জানায়।
সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড অঞ্চলের গদভজিরান উপকূলে নোঙর করে রাখা আছে এমভি আব্দুল্লাহ। কয়েক দিন আগে গত সোমবার সোমালি পুলিশের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পান্টল্যান্ডের জলদস্যু অধ্যুষিত আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের পুলিশ বাহিনী এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করা জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে প্রস্তুত রয়েছে। রয়টার্সের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের পরিকল্পনা করছে এমন তথ্য পেয়ে পান্টল্যান্ডের পুলিশ বাহিনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করা জলদস্যুদের কাছে মাদক সরবরাহের সময় একটি গাড়ি পান্টল্যান্ড পুলিশ কর্তৃক জব্দ করা হয়েছে বলেও ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এক দিকে সোমালীয় পান্টল্যান্ড পুলিশের দস্যুবিরোধী অভিযান এবং অন্য দিকে জাহাজটির অদূরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্সের যুদ্ধজাহাজ টহল দেয়ায় দিনের বেশির ভাগ সময় নাবিকদের ব্রিজে নিয়ে রাখা হচ্ছে বলেও নাবিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে সূত্র জানিয়েছে।
এ দিকে সোমালিয়ার ভূমি থেকে তারা যাতে কোনো সহযোগিতা না পায়, সে জন্যই দেশটির পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়। পাশাপাশি ইউরোপীয় নেভাল ফোর্সের আটলান্টা অপারেশনের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন দস্যুদের ওপর এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করছে বলে শিপিং সংশ্লিষ্টদের ধারণা।
এমভি আবদুল্লাহর মালিক প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মাদার অর্গানাইজেশন কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হলো জিম্মি নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে দস্যুদের সাথে অনানুষ্ঠানিক কথাবর্তা চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান। নাবিকদের সাথে জাহাজ কর্তৃপক্ষ এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
প্রসঙ্গত গত ১২ মার্চ প্রায় ৮০ কোটি টাকা মূল্যের ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা বোঝাই করে মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাবার পথে ভারত মহাসাগর থেকে বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে ২৩ নাবিকসহ নিজেদের জিম্মায় নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি কয়েক দফায় স্থান পরিবর্তন করে এখন সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করা আছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা