২৫ মার্চের গণহত্যার নীলনকশা চূড়ান্ত করে চলমান আলোচনা অসমাপ্ত রেখে পশ্চিম পাকিস্তানি জেনারেলরা করাচির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে। ১৫ মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকা আসেন এবং ১৬ মার্চ প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে বৈঠকে বসেন। পরবর্তীতে ইয়াহিয়া খানের সাথে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এসে যোগ দেন উচ্চপদস্থ জেনারেলরা। তারও পরে আসেন পিপিপি নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো। আলোচনার নামে প্রহসন চালিয়ে তারা মূলত এখানে বসে গণহত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করেছেন এবং ১২ দিনের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে বিদায় জানিয়ে তারা ঢাকা ত্যাগ করলেন। পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে অস্ত্রের জোরে মদমত্ত হঠকারী শাসকগোষ্ঠী বন্দুকের নলের সাহায্যে প্রতিবাদী জনতার কণ্ঠরোধ করার সিদ্ধান্ত নিল। অনিবার্য করে তোলে পাকিস্তানের ভাঙন।
১৯৭১ সালের আজকের এই দিনেও বঙ্গবন্ধুর সাথে ইয়াহিয়ার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা সমস্যার কোনো সমাধান ছাড়াই এই বৈঠক বাতিল করে করাচি পাড়ি জমালেন। ২৫ মার্চ চূড়ান্ত গণহত্যা শুরুর আগেই আজ থেকে ঢাকার বাইরে অনেক জায়গায় হত্যা এবং ধ্বংসলীলা শুরু করে পাকিস্তানি সৈন্যরা। সৈয়দপুরে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে ১৬ জন নিহত হয়।
চট্টগ্রামে পোর্টের ১৭ নম্বর জেটি থেকে এম ডি সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র নামানোর সময় বাংলাদেশের মানুষ তাতে বাধা দেয়। চট্টগ্রামে তারা ব্যারিকেড গড়ে তোলে। বাংলাদেশী সৈন্যরাও যোগ দেয় সাধারণ জনগণের সাথে। এখানে কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলিতে নিহত হয়।
পাকিস্তানি নেতাদের ঢাকা ত্যাগের পরপরই ২৫ মার্চের গণহত্যার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের মিশনে নামে এখানে অবস্থানরত উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা। জেনারেল খাদেম হোসেন রাজা ও রাও ফরমান আলি দু’টি হেলিকপ্টার নিয়ে সব কয়টি ক্যান্টনমেন্ট সফর করেন। তারা সেখানে গিয়ে ব্রিগেড প্রধানদের নীলনকশা সম্পর্কে নির্দেশ দিয়ে বিকেলে ঢাকায় ফিরে আসেন।
তখন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক ছিলেন ব্রিগেডিয়ার মজুমদার। জরুরি বৈঠকের কথা বলে জেনারেল টিক্কা খান তাকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। তার সাথে ছিলেন ক্যাপ্টেন আমিন আহমেদ চৌধুরী। তাদের ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করে রাখা হয়।
আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে থাকে। আওয়ামী লীগের নির্দেশে ড. কামাল হোসেন রাষ্ট্রের নাম কনফেডারেশন অব পাকিস্তান নামকরণের প্রস্তাব করেন। তাজউদ্দীন আহমেদ ও ড. কামাল হোসেন আগামীকাল সময়সূচি ও ঘোষণা চূড়ান্তকরণ সম্পর্কে জানতে চান। টেলিফোনে চূড়ান্ত করা হবে বলে তাদের বলা হয়। কিন্তু সে টেলিফোন আর আসেনি। ২৫ মার্চ রাতে আসে নিরীহ মানুষের বুক ঝাঁঝরা করা বুলেটের আঘাত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা