১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


গাজায় ইসরাইলি অবরোধ যুদ্ধাপরাধ : জাতিসঙ্ঘ

গাজা শহরে ইসরাইলি বিমান হামলায় ধ্বংস হওয়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা : ইন্টারনেট -

- গাজায় বাস্তুচ্যুত আড়াই লক্ষাধিক
-হিজবুল্লাহ ও সিরিয়া থেকে ইসরাইলে হামলা
-ইসরাইলে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম

গাজায় ইসরাইলি অবরোধের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। গত মঙ্গলবার জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র রাবিনা শ্যামদাসানি এক বিবৃতিতে এ ধরনের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কমিশন বা ইউএনএইচসিআর-এর নিজস্ব যেসব পর্যবেক্ষক রয়েছেন তাদের মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছেন যে, ইসরাইলি হামলায় আহতদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ঘাটতি দেখা দিয়েছে। খবর আলজাজিরা, মিডল ইস্ট মনিটর, আনাদোলু এজেন্সি, এএফপি ও রয়টার্সের।
এ দিকে মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার জনবহুল এলাকায় ‘সাদা ফসফরাস’ বোমা নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে। ১৯৮০-জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই বোমা ব্যবহার নিষিদ্ধ। তা ছাড়া স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে স্থল অভিযান পরিচালনা করার জন্য গাজা উপত্যকার কাছে হাজার হাজার সেনাকে জড়ো করছে দখলদার বাহিনী। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জোনাথান কনরিকাস জানিয়েছেন এ তথ্য।

ইতোমধ্যে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সাঁড়াশি অভিযান ও ইসরাইলের পাল্টা বিমান হামলায় উভয় পক্ষে নিহতের সংখ্যা ২২০০ ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া গৃহহীন হয়ে পড়েছে আড়াই লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
অন্য দিকে জাতিসঙ্ঘের বৈশ্বিক সংস্থার মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভল্কার তুর্ক মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, গাজা উপত্যকার ওপর সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করা যুদ্ধাপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনি ওই উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি এমনিতেই খারাপ ছিল। ফলে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপে সেখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে পড়বে। তুর্ক তার বিবৃতিতে বলেন, গাজায় ইসরাইলি হামলায় প্রতি মুহূর্তে হতাহত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আহতদের চিকিৎসাসেবা দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
ভল্কার তুর্ক বলেন, গাজা উপত্যকার সাথে বহির্বিশ্বের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার ফলে সেখানকার মানুষের পক্ষে খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করা সম্ভব হবে না। এ ধরনের পরিস্থিত সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ বলে তিনি মন্তব্য করেন। গত শনিবার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘আল-আকসা স্টর্ম’ নামক অভিযান শুরু করার পর গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ, পানি, খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহের সবগুলো রুট বন্ধ করে দিয়েছে তেল আবিব।

এরপর জাতিসঙ্ঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এলডার গাজা উপত্যকার ওপর কঠোর অবরোধের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, গাজার বিদ্যুৎ, খাদ্য, পানি ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় ইউনিসেফ ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করছে।
পাল্টাপাল্টি হামলায় নিহত ২২০০ : ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সাথে ইসরাইলি বাহিনীর পাল্টাপাল্টি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় আট হাজারেরও বেশি মানুষ। বুধবার আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ফিলিস্তিন রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি ও ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। এর মধ্যে ইসরাইলের হামলায় পশ্চিমতীরে ২৩ জনসহ গাজায় ১০৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সাথে গাজা ও পশ্চিমতীরে যথাক্রমে আহতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ও ১৮৪ জন। এ দিকে হামাসের হামলায় ইসরাইলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২০০ জনে। আহত হয়েছেন তিন হাজার সাতজন। গত শনিবার সকালে গাজা থেকে ইসরাইলে হামলা চালায় হামাস। কয়েক হাজার রকেট হামলা চালানোর পাশাপাশি ইসরাইলের ভূখণ্ডে ঢুকে হত্যাকাণ্ড চালায় তারা। জবাবে গাজায় বিমান থেকে বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল।

গাজায় নিঃস্ব আড়াই লাখ : জাতিসঙ্ঘ জানিয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনের ছিটমহলে স্থল, নৌ ও আকাশপথে ইসরাইলি বাহিনীর প্রচণ্ড বোমাবর্ষণে দুই লাখ ৬০ হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসঙ্ঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ মঙ্গলবার বলেছে, ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় দুই লাখ ৬৩ হাজার ৯৩৪ জন তাদের বাড়িঘর হারিয়েছেন। এ ছাড়া সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, এই সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে ওসিএইচএ জানায়, বোমাবর্ষণে এক হাজারের বেশি বাড়িঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ৫৬০টি বাড়ি এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলোতে আর বাসবাস করা যাবে না। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা করে এমন একটি সংস্থা ইউএনআরডব্লিওএ জানিয়েছে, প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার বাস্তুহারা মানুষ ৮৮টি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া ১৪ হাজার ৫০০ লোক ১২টি সরকারি স্কুলে পালিয়ে এসেছেন। পাশাপাশি ৭৪ হাজার লোক আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী অথবা উপাসনালয় ও অন্যান্য স্থাপনায় আশ্রয় নিয়েছেন।
ইসরাইলে হামলা হিজবুল্লাহর : ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সাথে চলমান থযুদ্ধের সমর্থনে ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে লেবাননের ইরান-সমর্থিত শিয়াপন্থী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। বুধবার ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে নিশানায় নিখুঁত আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে লেবাননের এই গোষ্ঠী। এর আগে মঙ্গলবার লেবানন সীমান্তে ইসরাইলের হামলায় হিজবুল্লাহর তিন সদস্য ও ইসরাইলের এক কমান্ডারের প্রাণহানি ঘটে।

সিরিয়া থেকে গোলাবর্ষণ : সিরিয়া থেকে ইসরাইলে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। পাল্টা জবাবে ইসরাইলি সেনারা কামান দিয়ে হামলা করেছে। ইসরাইলের সেনাবাহিনী এ তথ্য দিয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, ‘ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলেছে যে, সিরিয়া থেকে গোলান মালভূমিতে গোলাবর্ষণের পর তারা কামানের গোলা নিক্ষেপ করেছে।’ ১৯৬৭ সালে থেকে ইসরাইল সিরিয়ার এ গোলান মালভূমি অঞ্চল দখল করে রেখেছে।
হামলা চালাবে হাউছি : ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে চার দিন ধরে যুদ্ধ চলছে। এই সঙ্ঘাত আপাতত থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এতে ইসরাইলকে সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এ ব্যাপারে এবার সামনে এলো ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীরা। হাউছি নেতা আবদুল-মালেক আল-হাউছি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি সরাসরি গাজায় হস্তক্ষেপ করে তাহলে তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেবে। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হতে পারে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
পুরোপুরি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন গাজা : পুরোপুরি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। গাজার বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান জালাল ইসমাইল এ বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ দিন সকালে জানানো হয়েছিল গাজার একমাত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আর মাত্র ১২ ঘণ্টা সচল রাখার জ্বালানি রয়েছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে উপত্যকার বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, আর তিন ঘণ্টা পরই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে সেখানকার সাধারণ মানুষ।

স্থল অভিযান শুরু যেকোনো সময় : ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে স্থলযুদ্ধ করার জন্য গাজা উপত্যকার কাছে হাজার হাজার সেনাকে জড়ো করছে ইসরাইল। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জোনাথান কনরিকাস জানিয়েছেন এ তথ্য। বর্তমানে গাজার কাছে প্রায় তিন লাখ সেনা অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রয়টার্স মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গাজার কাছে অবস্থানরত ইসরাইলি সেনাদের বলেছেন, ‘আমরা আকাশ থেকে হামলা শুরু করেছি। পরবর্তী সময়ে আমরা স্থল দিয়েও আসব। আমরা দ্বিতীয় দিন থেকে এ অঞ্চলগুলো নিয়ন্ত্রণ করছি এবং আমরা আক্রমণাত্মক অবস্থায় আছি। এটির তীব্রতা শুধু বদ্ধি পাবে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘হামাস একটি পরিবর্তন চেয়েছিল এবং তারা একটি পরিবর্তন পাবেও। গাজায় যা এখন আছে তা শুধু পরবর্তী সময়ে থাকবে না।’

নতুন করে রকেট ছুড়ল হামাস : ইসরাইলের আসকেলন শহরকে লক্ষ্য করে নতুন করে রকেট হামলা চালিয়েছে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার মধ্যে আসকেলন থেকে বেসামরিক মানুষকে সরে যাওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেয় তারা। আর নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার পরই সেখানে মুহুর্মুহু রকেট ছোড়ে গাজার স্বাধীনতাকামী বাহিনী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সাংবাদিক অ্যালিস কাডি আসকেলন থেকে জানিয়েছেন, বিকেল ৫টার কিছু পরই গাজা উপত্যকা থেকে একসাথে কয়েক শ’ রকেট ছোড়া হয়।
ইসরাইলে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম : মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম বহনকারী প্রথম বিমানটি সম্প্রতি দক্ষিণ ইসরাইলের নেভাটিম এয়ারবেসে পৌঁছেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য দিয়েছে। অপর দিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সমালোচনা করেছে হামাস। ইসরাইলি সেনাবাহিনী সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের দুই দেশের (ইসরাইল-আমেরিকা) সামরিক বাহিনীর মধ্যেকার সহযোগিতা যুদ্ধের সময়ে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।’ এ ছাড়া বিমানবাহী মার্কিন রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড স্ট্রাইক গ্রুপও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে এসেছে। অপর দিকে হামাস মার্কিন নীতির সমালোচনা করেছে। তারা আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সর্বশেষ বিবৃতিকে ‘কঠোরভাবে’ প্রত্যাখ্যান করেছে। হামাস বলেছে, জো বাইডেনের এ মন্তব্য মূলত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলি সরকারের অপরাধ ও উগ্রবাদ ঢাকার প্রচেষ্টা।

গাজায় বিষাক্ত ‘সাদা ফসফরাস’ বোমা : মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার জনবহুল এলাকায় ‘সাদা ফসফরাস’ বোমা নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে ইসরাইলের বিরুদ্ধে। যদিও ১৯৮০- জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই বোমা ব্যবহার নিষিদ্ধ। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনের উত্তর গাজার কারামা এলাকায় আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ ‘সাদা ফসফরাস’ বোমা নিক্ষেপ করেছে।
ইউরোপিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের প্রতিষ্ঠাতা রামি আবদুর এক্স প্ল্যাটফর্মে একটি ভিডিও ক্লি¬প পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, ইসরাইলের সামরিক বাহিনী গাজা শহরের উত্তর-পশ্চিমে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিষাক্ত সাদা ফসফরাস ব্যবহার করছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement