২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


স্পিকারের কাছে হেডস্কার্ফ সংশোধনী প্রস্তাব পেশ করল ‘এ কে পার্টি’

-

ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (এ কে পার্টি) ভাইস চেয়ারপারসন ওজলেম জেনগিন বলেন, মাথার স্কার্ফ ও দাম্পত্য ইউনিয়নকে সংজ্ঞায়িত করার বিষয়ে সাংবিধানিক সংশোধনী প্রস্তাব গত শুক্রবার সংসদের স্পিকার মুস্তফা সেন্টপের কাছে জমা দেয়া হয়েছে।
রাজধানী আঙ্কারায় সংসদের গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ওজলেম জেনগিন জানান, ছয় শ’ আসনের সংসদ ডেপুটির মধ্যে ৩৬৬ জন ডেপুটি বিলটিতে স্বাক্ষর করেছেন। এর মধ্যে এ কে পার্টি এবং তার জাতীয়তাবাদী মিত্রদের এমপি রয়েছেন ৩৩৪ জন। জেনগিন বলেন, হেডস্কার্ফ ইস্যুটি এ কে পার্টির উপস্থিতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তিনি আরো বলেন, এ ইস্যুটির প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি রাজনৈতিক বিষয় নয়।


মাথার স্কার্ফ একসময় তুরস্কে গভীর বিরোধের উৎস ছিল। একসময় শক্তিশালী ধর্মনিরপেক্ষ সংগঠনগুলো এটিকে ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থার জন্য হুমকি হিসেবে দেখে আসছিল। কিন্তু ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা এ কে পার্টি সংস্কারের মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটায়।
প্রধান বিরোধী দল ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) দীর্ঘ দিন ধরে সংসদ এবং সরকারি অফিসে মেয়েদের মাথার স্কার্ফ পরার বিরোধিতা করে আসছিল। রক্ষণশীল ভোটারদের সমর্থন আকর্ষণ করতে আইন প্রণয়নের সাথে অধিকারকে সংহত করার প্রস্তাব দিয়ে গত অক্টোবরে এ কে পার্টি বিষয়টিকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। এ কে পার্টি সর্বদাই হেডস্কার্ফ পরার অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে সাংবিধানিক সংশোধনী আনতে চেয়েছিল। এক প্রস্তাবে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছিলেন, হেডস্কার্ফ আইনের সংশোধনীর মাধ্যমে পরিবারিক বন্ধন রক্ষা করারও ব্যবস্থা করা হবে।


তুরস্কে নারীদের হেডস্কার্ফ পরার প্রচলন রয়েছে। তবে হেডস্কার্ফ পরা তুর্কি নারীরা দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি চাকরিতে হেডস্কার্ফ পরার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাঁধার বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছিলেন। অন্য দিকে রিপাবলিকান পিপলস পার্টির নেতৃবৃন্দ সাধারণ জনগণের মধ্যে হেডস্কার্ফ-বিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তুলছিল এবং এটিকে নিষিদ্ধ রাখার আইনকে সমর্থন করে আসছিল। ১৯৯০ ও ২০০০ পরবর্তী দশকজুড়ে তুর্কি জনসাধারণের রাজনৈতিক বিতর্কে হেডস্কার্ফ নিষিদ্ধের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছিল।
আশির দশকে তুরস্কে মাথার স্কার্ফ নিষেধাজ্ঞা প্রথমবারের মতো ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা হয়। ১৯৯৭ সালে সামরিক বাহিনী রক্ষণশীল সরকারকে বিশেষ একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে।
তুর্কিয়ে সংসদে ২০০৮ সালে এরদোগানের একটি পদক্ষেপে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের মাথায় স্কার্ফ পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। তখনো রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) চেয়ারপারসন কামাল কিলিকদারোগলুসহ সিএইচপি আইন প্রণেতারা সাংবিধানিক আদালতে উদ্যোগটিকে বাধা দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিলেন। এরপর ২০১৩ সালে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তুরস্কের সরকার বিশেষ একটি সংস্কারের অধীনে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানেও নারীদের মাথার স্কার্ফ পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement