২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সংসদে প্রধানমন্ত্রী

গণতন্ত্র আছে বলেই দেশের উন্নতি

-

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণমানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিজেদের অর্থায়নে করতে পেরেছি। এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হবে না। কারো কাছে হাত পেতে চলবে না। ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই দেশের উন্নতি হচ্ছে।
জাতীয় সংসদ অধিবেশনে গতকাল বৃহস্পতিবার অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত করেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ। আলোচনায় আরো অংশ নেন উপদেষ্টা মণ্ডলীর আরেক সদস্য আমির হোসেন আমু।
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তান নামক দেশটি যেভাবে আমাদের শোষণ করে যাচ্ছিল ২৩ বছরের সংগ্রাম ও জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীন জাতি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশ নামটিও বঙ্গবন্ধুর দেয়া। তিনি বলেন, দলটিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে তোলার জন্য ১৯৫৫ সালের কাউন্সিলে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। আর স্বাধীন বাংলাদেশে কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগের নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট আমরা কেবল জাতির পিতাকে হারাইনি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনাকেও হারিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি হয়েছিল। জয়বাংলা স্লোগান নির্বাচিত হয়েছিল। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে আসে। পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার সরকারে আসে। সরকারে আসার পর আজকে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। জনগণের সেবা করার সুযোগ পেলে অবশ্যই আগামীতে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ২১০০ সালের ডেল্টাপ্লান করে দিয়েছি। ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ যাতে হয় সেই পরিকল্পনাও তৈরি করে দিয়েছি। এই ধারাবাহিকতা নিয়ে দেশ চলতে থাকলে এ দেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ থামাতে পারবে না, রুখতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঝড় বৃষ্টি, বন্যা-খরাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব সময় দেশের মানুষের পাশে আছে। সরকারে থাকি আর বিরোধী দলে থাকি- যখনই বাংলার মানুষ কোনো সমস্যায় পড়েছে, তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে এবং মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এবার সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যায়ও সবার আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গিয়েছে। তাদের সাহায্য করেছে। এটা আমাদের আদর্শ। এটাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে জনগণের সেবা করার অধিকার পেয়েছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিজেদের অর্থায়নে করতে পেরেছি। সেটাও গণমানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা করেছি। বাংলাদেশের জনগণকে আমি স্যালুট করি। আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।
শেখ হাসিনা বলেন, বাবা-মা-ভাই সব হারিয়ে আমি ফিরে এসেছিলাম। আওয়ামী লীগ আমাকে সভানেত্রী নির্বাচিত করেছিল। পাশাপাশি জনগণের আশ্রয়েই আমি এসেছিলাম। তাদের মাঝে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম হারানো বাবা-মায়ের স্নেহ। হারানো ভয়ের স্নেহ। কাজেই এ দেশের মানুষের জন্য যেকোনো ত্যাগে আমি সবসময় প্রস্তুত। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলা ভাষায় কথা বলা, আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ অর্থ, উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।


আরো সংবাদ



premium cement