২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


খালেদা জিয়ার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন ফের রক্তক্ষরণ

-

রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা আবারো ‘সঙ্কটাপন্ন’ বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বুধবার সকালে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব এই কথা জানিয়ে বলেন, আমি মঙ্গলবার রাতে গিয়েছিলাম হাসপাতালে। সব চিকিৎসকই সেখানে ছিলেন। তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) আবার সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছেন। আবার তার রক্তক্ষরণ হয়েছে। চিকিৎসকরা পরিষ্কার করে বলেছেন যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষা করার জন্য তাকে এক মুহূর্ত দেরি না করে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন। সরকারের কাছে আবারো আহবান জানাচ্ছিÑ অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়। শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের শওকত মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম, অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব মো. আব্দুর রহিম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের জাকির হোসেন, শেখ আমজাদ আলী, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, আবদুল আউয়াল, আবদুর রহমান, সেকান্দার আলী, কামরুন্নাহার লিজি, রোকেয়া চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
গত ১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পরপরই রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাকে দ্রুত ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউতে) ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা পরবর্তী সময়ে গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে ভুগছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার প্রথম থেকেই বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়ে নেতিবাচক অবস্থান নেয়ায় এই সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়েছে। আপনারা দেখেছেন, সুস্থ অবস্থায় হেঁটে তিনি কারাগারে গিয়েছিলেন। কয়েক বছরে ওই কারাগারে অবস্থানকালে চিকিৎসা না হওয়ায় আজকে এমন একটা অবস্থা হয়েছে যে, তিনি এখন আইসিইউতে ২৬ দিন ধরে আছেন এবং প্রতিটি মুহূর্তে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, মনিটরিং করা হচ্ছে, তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
৪০১ ধারার শর্ত তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আইনের কথা বলেন। কেন জনগণকে বোকা বানাতে চান? ৪০১ ধারার যে আইন আছে তাকে আটকে রেখেছেন। সেই ধারায় শর্ত দিয়েছেন যে, তিনি (খালেদা জিয়া) দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। ওই শব্দটা আপনারাই (সরকার) তুলতে পারবেন, আর তো কেউ তুলতে পারবে না। ওই শর্ত তুলে নেন। তিনি বিদেশে যেতে পাসপোর্টের যে আবেদন করলেন তা বাতিল করে দিয়েছেন। আপনারা মাঝে মধ্যে যে কথা বলছেন আমরা চিন্তা করছিÑ এটা তার সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। অবিলম্বে তার পাসপোর্ট দিয়ে তাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের কোনো অবনতি হলে, অঘটন ঘটলে তার সব দায়-দায়িত্ব আপনাদেরকেই নিতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দিতে কেন তারা এতটা অনীহা কী জন্য? তিনি যখন পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন তখন তাকে একইভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়নি। বারবার বলার পরে যখন মেডিক্যাল বোর্ড করা হয়েছে সেই বোর্ডের অধীনেও তার চিকিৎসা হয়নি। পরে আমাদের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা মূলত তার অবস্থা জানতে সেখানে (কারাগারে) যান এবং তাদের সুপারিশক্রমে পরবর্তীতে যখন তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন অলরেডি তার অবস্থা চেঞ্জ হয়ে গেছে। এই অবস্থার কারণ হচ্ছে, তারা (সরকার) দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে, ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। কারণ একটাই দেশনেত্রী একমাত্র রাজনীতিক যিনি এই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষে কথা বলেন, যিনি এ দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন, তিনিই হচ্ছেন একমাত্র রাজনীতিক যিনি এ দেশের গণতন্ত্রের জন্য তার সব জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন, তাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়া।


আরো সংবাদ



premium cement