২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টাইব্রেকারে স্বপ্নভঙ্গ দিয়া সিদ্দিকীর

-

এই কষ্ট কিভাবে লাঘব করবেন বাংলাদেশের দুই আরচার। তিন ইভেন্টেই তাদের অল্পের জন্য জয় বঞ্চিত হয়ে ছিটকে পড়া। গত ২৩ জুলাই মিশ্র দ্বৈতে দক্ষিণ কোরিয়ার স্বর্ণ জয়ী জুটির কাছে ০-৬ সেটে হারলেও দ্বিতীয় সেটে মাত্রও ২ পয়েন্টের ব্যবধানে (৩৫-৩৩) এবং শেষ সেটে ১ পয়েন্টের ব্যবধানে (৩৯-৩৮) হার। এরপর ২৭ জুলাই রিকার্ভ এককে ২০১৯ বিশ্ব আরচারিতে তৃতীয় হওয়া রোমান সানা টোকিও অলিম্পিকে ১/১৬ এর ম্যাচে প্রথম চার সেটে ২-২ (উভয়ের দু’টি করে জয়) করার পর জয় পরাজয় নির্ধারণী পঞ্চম সেটে কানাডার প্রতিযোগীর কাছে ১ পয়েন্টের ব্যবধানে (২৬-২৫) পরাজিত হওয়া। কাল আরচারিতে বাংলাদেশের শেষ ইভেন্ট ছিল মহিলাদের রিকার্ভ একক। এখানের সেই বুক চাপড়ানো কষ্ট। প্রথম পাঁচ সেটে দু’টি করে ম্যাচ জয় বাংলাদেশের দিয়া সিদ্দিকী এবং বেলারুশের কারিনা জিমোনিস্কায়ার। একটি ম্যাচ টাই। ফলে টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। এতে বেলারুশের আরচার এক তীরে ১০ স্কোর করলেও দিয়া তার তীর থেকে তুলতে পারেন ৯। ফলে ১ পয়েন্টের দুঃখ নিয়ে সেখানেই ইতিহাস গড়ার বদলে টোকিও অলিম্পিক শেষ দিয়া সিদ্দিকীর। তাকে ১/৩২ এর খেলায় ৬-৫ সেটে হারিয়ে পরের রাউন্ডে উঠে যান কারিনা। দিয়া জিতলে বাংলাদেশের মহিলা খেলোয়াড় হিসেবে অলিম্পিকে কোনো ম্যাচ জেতা হতো দিয়ার।
এককে রোমান সানার মতোই দারুণ জয় দিয়ে কাল আরচারি মহিলা এককের ১/৩২ এর খেলা শুরুর দিয়া সিদ্দিকীর। র্যাংকিংয়ে ৩১তম স্থানে থাকা কারিনাকে ২৩-২২ এ হারিয়ে প্রথম সেট জিতে নেন ১৫৫ তে থাকা লাল-সবুজ জার্সিধারী আরচার। দুই পয়েন্ট জমা পড়ে দিয়ার ভাণ্ডারে। অবশ্য দ্বিতীয় সেটেই ঘুরে দাঁড়ান বেলারুশের আরচার। ২৬-২৫ এ জেতেন কারিনা। পরের সেটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে ২৫-২৫ এ টাই। ফলে দু’জনের সেট পয়েন্ট দাঁড়ায় ৩-৩। প্রথম তিন সেটে কেউই ১০ স্কোর করতে পারেনি। চতুর্থ সেটে তিন তীরে দু’জনেরই একটি করে ১০ এর স্কোর। দিয়া ১০ দিয়ে শুরু করলেও পরের দুই তীর থেকে করতে সমর্থ ৮ ও ৭। কারিনা অবশ্য শেষ তীর থেকে ১০ তুলে ২৭-২৫ এ জিতে যান। ফলে ম্যাচকে টাইব্রেকারে নিতে হলে পঞ্চম সেটে জয়ের বিকল্প বাংলাদেশের আরচারের। সেই জয়ই তিনি আদায় করলেন ২৭-২৫ এ।
ফলে দু’জনের সেট পয়েন্ট দাঁড়ায় সমান ৫-৫। তাই টাইব্রেকারের আশ্রয়। এতে কপাল পুড়ল নীলফামারীর মেয়ে দিয়ার। কারিনা এক তীর ছোড়ার এই টাইব্রেকারে ১০ স্কোর করে চাপে ফেলে দেন দিয়াকে। তবে দিয়ার পক্ষে অল্পের জন্য এই চাপ উতরানো সম্ভব হয়নি। তার তীর থেকে আসে ৯ পয়েন্ট, যা টোকিও অলিম্পিক গেমস থেকে ছিটকে ফেলে তাকে।
বাংলাদেশের পদকের সুপ্ত বাসনা ছিল এই আরচারিতেই। তবে পদকের কাছে যেতে না পারলেও এর তিন ইভেন্টেই রোমান সানা ও দিয়া এবার ভালো করেছে। মিশ্র দ্বৈতে সেরা ১৬তে জায়গা করে অলিম্পিক স্বর্ণজয়ীদের বিপক্ষে তুমুল লড়াই করা। পুরুষ এককে রোমান সানা তো ইতিহাস গড়েই অলিম্পিকে বাংলাদেশকে প্রথম জয় এনে দেন ১/৩২ এর ম্যাচে গ্রেট ব্রিটেনের টম হলের বিপক্ষে। পরের ম্যাচে তার ৪-৬ সেটে হার কানাডার ক্রিসপিনের কাছে। আর কাল দিয়ার টাইব্রেকারে হারের কষ্ট। তবে এ লড়াই আগামী অলিম্পিক গেমসগুলোতে আরো ভালো করার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন বাংলাদেশের আরচাররা। হয়তো তা পদকেই স্বপ্ন পূরণ করবে।


আরো সংবাদ



premium cement