২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


স্কুলের সব পরীক্ষা বাতিলের চিন্তা

অ্যাসাইনমেন্টেই মেধা যাচাই
-

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কবলে পড়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। প্রথম দফায় গত শিক্ষাবর্ষের অনেক পরীক্ষাই অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। এবার চলতি শিক্ষাবর্ষেও স্কুল পর্যায়ের সব ধরনের পাবলিক ও ক্লাস পরীক্ষা বাতিলের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ের জন্য আপাতত অ্যাসাইনমেন্টকেই বিকল্প হিসেবে ভাবা হচ্ছে। আর এর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি জরিপ কাজও পরিচালনা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনার এমন সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সব পাবলিক পরীক্ষার বিকল্প হিসেবে অ্যাসাইনমেন্টকে স্থায়ী করার চিন্তা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে ২০২০ সালের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখছে, কোথায় কোথায় দুর্বলতা তা যাচাইয়ের জরিপও শুরু হয়েছে। একই সাথে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া যায় কি নাÑ তারও সম্ভাব্যতা যাচাই করতে এরই মধ্যে দু’টি কমিটি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত এক বছরেরও বেশি সময়ের করোনায় শিক্ষাব্যবস্থার সব কিছু উলট-পালট হয়ে গেছে। ১৩ মাসেরও বেশি ধরে বন্ধ রয়েছে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের পঞ্চম শ্রেণী সমাপনী, জেএসসি ও জেডিসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের বাকি শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করে অটো প্রমোশন ঘোষণা করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ হানা দেয়ায় ২০২১ সালেরও সব পাবলিক ও বার্ষিক পরীক্ষাগুলো নেয়া যাবে কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
সূত্রমতে, করোনা সময় অ্যাসাইনমেন্ট কতটা কার্যকর তা যাচাই করতে সারা দেশে দুই হাজার স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও মাঠপর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের অনলাইন জরিপের মাধ্যমে সমীক্ষা করা হবে। কার্যক্রমটি পরিচালনা করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বেডু)। সমীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় অ্যাসাইনমেন্ট একটি মাইলফলক। করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে এটি আরো কার্যকর প্রক্রিয়া হিসেবে বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই গতানুগতিক পরীক্ষা পদ্ধতির মূল্যায়ন বাদ দিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যাওয়া যায় কি না, তা এখন সময়ের দাবি। তাই কন্টিনিউ অ্যাসেসমেন্ট বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিতেই এ জরিপ চালানো হচ্ছে।
জরিপের ব্যাপারে বেডুর পরিচালক অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী বলেন, সারা দেশের ২৭ হাজার স্কুলের মধ্যে দুই হাজার স্কুল স্যাম্পলিং করে নির্ধারণ করা হবে। হাওর, পাহাড়, চরাঞ্চলের স্কুলগুলোকে ক্যাটাগরিজ করে নির্ধারণ করা হবে। এ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন তৈরির টার্গেট রয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক মো: বেলাল হোসাইন বলেন, অ্যাসাইনমেন্টগুলো কত শতাংশ কার্যকর হলো, কত ভাগ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে, কী কী পরিবর্তন আনা দরকার তা জানতে বেডুকে জরিপ করতে বলা হয়েছে। মাঠপর্যায় থেকে তথ্য আনা হলে অ্যাসাইনমেন্টের বাস্তবতা বোঝা যাবে। পরীক্ষার বিকল্প হিসেবে অ্যাসাইনমেন্ট নেয়া যাবে কি না, এ ধরনের অনেক সিদ্ধান্ত নিতে জরিপের প্রতিবেদন সহায়ক হবে বলেও তিনি জানান।


আরো সংবাদ



premium cement