২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নাঈম হত্যার বিচার চাইলেন মা

-

যশোরের পুলেরহাটে শিশু উন্নয়নকেন্দ্রে নির্যাতনে নিহত বগুড়ার নাঈম হোসেনের (১৭) লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টায় শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলি ইউনিয়নের তালিবপুর পূর্বপাড়া গ্রামে বাড়ির পাশে তাকে দাফন করা হয়।
ছেলে নাঈমের লাশ দেখার পর মা সান্তনা বেগম শোকে পাথর হয়ে গেছেন। কারো সাথে কথা বলছেন না। খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তবে এ ঘটনার জন্য দায়ীদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন তিনি।
নাঈমের বড় ভাই শামীম প্রামানিক জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে টেলিভিশনে খবর দেখে পরদিন শুক্রবার সকালে মেজ ভাই শাহাদৎ প্রামাণিককে সাথে নিয়ে তিনি যশোর যান। সেখানে জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাত ৮টার দিকে তাদের কাছে নাঈমের লাশ হস্তান্তর করেন পুলিশ। রাতেই তারা অ্যাম্বুলেন্স যোগে নাঈমের লাশ নিয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জে আসেন ভোর ৪টার দিকে। লাশ গোসলের সময় তার শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন দেখা যায়। এ থেকে বোঝা যায় নির্যাতন চালিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায্য বিচার দাবি করছি।
নাঈমের মেজ ভাই ট্রাকচালক শাহাদৎ প্রামাণিক জানান, ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে নাঈম আব্বার কাছে ফোন দেয়। ফোনে নাঈম জানায়, এখানে (যশোরে) বড় ধরনের ঝামেলা হয়েছে। বিনা অপরাধে স্যারেরা আমাদের মারধর করছে। তুমি রোববার ফোনটা খোলা রেখ। এটাই ছিল আব্বার সঙ্গে নাঈমের শেষ কথা। শাহাদৎ আরো জানান, যশোর যাওয়ার পর জানতে পারি শিশুকেন্দ্রে ঠিকমতো খাবার দেয়া হতো না। কারণে-অকারণে ছেলেদের নির্যাতন করা হতো। ঠিকমত চুল কাটতে দেয়া হতো না। নানা অনিয়ম বাসা বেঁধে ছিল সেখানে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার উল ইসলাম জানান, নাঈমের লাশ গ্রামে পৌঁছার পর দলে দলে মানুষ তাকে এক নজর দেখতে ভিড় জমায়। শোকে শোকাহত হয়ে পড়ে পুরো তালিবপুর গ্রাম।
নিহত নাঈম হোসেন নান্নু প্রামাণিকের ছেলে এবং দেউলি আলিয়া মাদরাসার ৫ম শ্রেণীর ছাত্র। তিন ভাইয়ের মধ্যে নাঈম সবার ছোট ছিল। নাঈম ধর্ষণ ও হত্যা মামলার অসামি হিসেবে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক ছিল।


আরো সংবাদ



premium cement