নাসিমের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার জাফরুল্লাহর অবস্থার অবনতি
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৬ জুন ২০২০, ০৩:৩৭, আপডেট: ০৬ জুন ২০২০, ০২:৫২
করোনা আক্রান্ত সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মস্তিষ্কে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে এখনো তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার সামান্য অবনতি হয়েছে।
নাসিমের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার : আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, ১৪ দলের মুখপাত্র ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে স্ট্রোক করার পর জরুরিভাবে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। এখন তাকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ নাসিমের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন দলটির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে তিনি চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজখবর নেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সাংবাদিকদের জানান, মোহাম্মদ নাসিমের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। রোগমুক্তির জন্য আমরা সকলে দোয়া কামনা করছি। প্রধানমন্ত্রী নাসিম ভাইয়ের ছেলে তানভীর শাকিল জয়ের সাথে টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন।
মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয় সাংবাদিকদের বলেন, আব্বুর অপারেশন সাকসেসফুলি হয়েছে। আপনারা সবাই দোয়া করবেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টা আব্বুকে হাসপাতালের আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। গত কয়েক দিনে চিকিৎসার ফলে শরীরের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও শুক্রবার সকালে হঠাৎ তিনি স্ট্রোক করেন বলে জানান জয়।
এর আগে গত সোমবার জ্বর-কাশিসহ করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে রাজধানী শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। সেখানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। রাতে ওই পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। উল্লেখ্য করোনা আক্রান্ত মোহাম্মদ নাসিম গতকাল ভোরে ব্রেন স্ট্রোক করেন। পরে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার দ্রুত অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করেন।
এদিকে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ গতকাল এক বিবৃতিতে করোনায় আক্রান্ত ১৪ দলের মুখপাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণসংক্রান্ত সংবাদে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, এক এগারোর সেনা শাসনে তার ওপর যে নির্যাতন চালানো হয় ফলে সে সময় তার স্ট্রোক হয়েছিল। ভালো হয়ে উঠলেও সেই নির্যাতনের পরিণতি এখন বহন করছে এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। নেতৃবৃন্দ তার দ্রুত রোগমুক্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
আবারো শ্বাসকষ্ট ডা: জাফরুল্লাহর : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার আবারো অবনতি হয়েছে। তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই হঠাৎ তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাথলে চিথকিৎসাধীন ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবস্থা গতকাল শুক্রবার সকাল বেলা স্বাস্থ্যের আরো কিছুটা অবনতি ঘটে। রাত পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত ছিল। গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শ্বাসকষ্ট দূর করার জন্য তাকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে। তবে তা থেমে থেমে দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যেই শ্বাসকষ্ট কিছুটা কমলে অক্সিজেন মাস্ক সরিয়ে নেয়া হয় এবং আবারো কিছুক্ষণ পরপর আবার অক্সিজেন দিতে হচ্ছে গতকাল রাতে গণস্বাস্থ্যের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাথলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা: মামুন মুস্তাফি, অধ্যাপক ডা: নজীবের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন।
উল্লেখ্য গত ২৫ মে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা করা হলে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ আসে। পরদিন তার শরীরে প্লাজমা দেয়া হয়। পরে ৩০ মে রাতে তৃতীয়বারের মতো ডায়ালাইসিসের পাশাপাশি তাকে ব্রেদিং (শ্বাস-প্রশ্বাস) থেরাপি দেয়া হয়। এরপর থেকে তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত ছিল। কিন্তু এক দিন পর হঠাৎ তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ার পর গতকাল শুক্রবার সারা দিনই এ অবস্থা ছিল। ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরিন হক ও ছেলে বারিশও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। শিরিন হকও গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
খ্যাতিমান চিকিৎসক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামক স্বাস্থ্যবিষয়ক এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা। দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষাখাত ও চিকিৎসা খাতেও তিনি অবদান রেখে চলেছেন। সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিতেও তিনি এবং তার প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। করোনা রোগী শনাক্তকরণে তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন কিট কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা