ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের একটি বিমানবন্দরে ১৮ বছর ধরে আটকে থাকা ইরানি নাগরিক মেহরান কারিমি নেসারি মারা গেছেন। শনিবার তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
মেহরান কারিমির জীবন কাহিনী নিয়ে হলিউডের বিখ্যাত পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ একটি সিনেমা নির্মাণ করেন। যাতে কারিমির ভূমিকায় ছিলেন কিংবদন্তী অভিনেতা টম হাঙ্কস।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এএফপিকে জানায়, শনিবার দুপুরের দিকে চার্লস ডি গালা বিমানবন্দরে টার্মিনাল টু এফ’এ তিনি মারা যান।
অভিবাসন ফাঁদে আটকা পড়ে মেহরান কারিমি ফ্রান্সে প্রবেশ করতে পারেননি। তাই বিমানবন্দরে ঠাই নেন। কারণ এখান থেকে অন্য কোনো দেশেও প্রবেশ করতে পারছিলেন না তিনি। ধীরে ধীরে এই বিমানবন্দরকে নিজের বাসস্থানের জায়গা বানিয়ে নেন। এবং একটা সময় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিখ্যাত হয়ে যান।
নিজেকে ‘স্যার আলফ্রেড’ নামে পরিচিত করান তিনি। এবং বিমানবন্দরের একটি ছোট জায়গায় প্লস্টিকের বেঞ্চে নিজেকে সীমাবদ্ধ করে ফেলেন।
কারিমি নেসারির অদ্ভুত গল্পটি পরিচালক স্পিলবার্গকে আকর্ষণ করে। এ থেকে অনুপ্রণিত হয়ে তিনি ২০০৪ সালে ‘দ্যা টার্মিনাল’ মুভিটি নির্মাণ করেন। যেখানে অভিনয় করে টম হাঙ্কস ও ক্যাথেরিন জেটা জনসকে তারকা বানিয়ে দেয়।
হাঙ্কস অভিনয় করেন এক ব্যক্তির চরিত্রে যিনি নিউইয়র্কের জেএফেকে বিমানবন্দরে আটকা পড়েন। কারণ তার দেশে তখন বিদ্রোহ চলছিল।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, সিনেমাটি থেকে পাওয়া অর্থের বেশিরভাগ খরচ করার পর কারিমি নেসারি কয়েক সপ্তাহ আগে বিমানবন্দরে ফিরে আসেন। মৃত্যুর পর তার কাছ থেকে কয়েক হাজার ইউরো (ডলার) পাওয়া গেছে।
কারিমি নেসারি ১৯৪৫ সালে ইরানের খুজিস্তান প্রদেশের মাসজিদ সুলেইমানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৮ সালের নভেম্বরে ইরান থেকে লন্ডন, বার্লিন ও আমসটার্ডামে মাকে খুঁজতে গিয়ে এই বিমানবন্দরে আটকা পড়ে যান। সঠিক কাগজপত্র না থাকায় তিনি সব দেশ থেকেই বহিষ্কৃত হন।
সূত্র : আল-আরাবিয়া নিউজ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা