২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


যমুনায় অসময়ে ভাঙন

আতঙ্ক দূর করুন

-

দৈনিক নয়া দিগন্তের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, অসময়ে যমুনার ভাঙনের কবলে শাহজাদপুরের মানুষ। মাত্র গত ১৫ দিনের ভাঙনে অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন। বাঁধ নির্মাণে ধীরগতিতে, ভাঙন প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে অভিযোগ। এদিকে, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ভাঙনকবলিত এলাকা এবং যমুনা তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ দেখার জন্য আসছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, জালালপুর, কৈজুরী ও খুকনী ইউনিয়নে যমুনা নদীর প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটারজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ১৫ দিনের অব্যাহত ভাঙনে ১০টি গ্রামের অসংখ্য বাড়িঘর ও কয়েক শ’ একর জমি বিলীন হয়ে গেছে। নদীগর্ভে চলে গেছে স্কুল-মাদরাসা, হাট-বাজারসহ স্থাপনা। জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর, খুকনী ইউনিয়নের সৈয়দপুর এবং পারা মোহনপুর এলাকায় ভাঙনে ফসলি জমি ও বাড়িঘর ভেঙে গেছে।
বাঐখোলা গ্রামের বিধবা রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘গ্রাম নদীতে যাওয়ার পর আশ্রয় নিলাম মনাকোষা। হেই গ্রামও চইল্যা গেল। ওহানে সর্বস্ব হারাইয়্যা জালালপুরে মাইনসের বাড়িতে ঠাঁই নিছি।’
জালালপুর গ্রামের মতিন বলেন, খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে পাচিল পর্যন্ত নদীর তীর ঘেঁষে শত শত বাল্কহেড চলাচল করে। বাল্কহেড চলাচলে নদীতে যে ঢেউ তৈরি হয় তার কারণে ভাঙনে পড়ে এলাকা। তিনি বলেন, জালালপুর মৌজার ৩০-৩২টি বাড়ি নদীতে চলে গেছে। পারা মোহনপুর, সৈয়দপুর এলাকার ১৬-১৭টি বাড়িও বিলীন হয়েছে।
এলাকার নদীভাঙন রোধে ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। ঠিকাদাররা সময়মতো কাজ না করায় ভাঙন বাঁধ মানছে না। ভাঙনের শিকার ফজল ও নূরনবী বলেন, এই অঞ্চলে নদীভাঙন রোধে ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। নদী তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণে ১৭টি প্যাকেজের মধ্যে কয়েকজন ঠিকাদার ব্লক তৈরি করলেও অন্যরা তা করেননি। অনেকে এলাকা দেখতেও আসেননি।
জালালপুর থেকে পাচিল গ্রাম পর্যন্ত দক্ষিণ দিকে কাজই হয়নি। ঠিকাদারদের কাজে ধীরগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রণজিত কুমার জানান, ক্রাইসিসের কারণে ঠিকাদারদের বিল দিতে না পারায় ঢিমেতালে কাজ করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড যমুনার ডান তীর রক্ষায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার তীররক্ষা বাঁধসহ তিন হাজার ৩০০ মিটার ড্রেজিং শুরু করেছে। এর ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ড্রেজিং শেষ হওয়ায় তিন কিলোমিটার ভাঙন বন্ধ হয়েছে। দুই কিলোমিটারে ‘কিছুটা’ ভাঙন হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই জিও ব্যাগ, সিসি ব্লক, জিও টিউব দিয়ে এলাকাগুলো মুড়িয়ে রাখতে ঠিকাদারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যাতে নদীভাঙনে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
জনগণের আতঙ্ক দূর করতে হবে। তা হলে ক্ষতি সহনীয় হবে। এ জন্য সরকার ক্ষতিপূরণ প্রদান, সাহায্য করা প্রভৃতি পদক্ষেপ নিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement