০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫
`


প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ কমছে

বাধা দূর করতে হবে

-

দেশের অর্থনীতির ওপর এখনো আঘাত হানছে বৈশ্বিক কোভিড-১৯ মহামারী। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিল্প-বাণিজ্য, রফতানি এবং কমেছে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ বেসরকারি বিনিয়োগ পরিস্থিতি নানা কারণেই নাজুক অবস্থানে রয়েছে এবং শঙ্কার কারণ হয়ে উঠতে শুরু করেছে। ভেতর থেকে ধসে যাওয়ার উপক্রম ব্যাংকিং খাত এবং তাদের ঋণ খেলাপের অর্থনীতি। নিউ নরমাল বা নয়া স্বাভাবিকতা আসতে শুরু করলে অর্থনীতি হয়তো কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারত। কিন্তু এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে চলছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় তরঙ্গ। বাংলাদেশেও সেটি দৃশ্যমান। যথাবিহিত ব্যবস্থা নিতে না পারলে এরপর তৃতীয় তরঙ্গও আসবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ফলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে সময় লাগবে, এটা নিশ্চিত।
এই প্রেক্ষাপটেই খবর পাওয়া যাচ্ছে, সৌদি আরবের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানি বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী। ঢাকায় কর্মরত সৌদি রাষ্ট্রদূত আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে এই আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী সৌদি কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে আরামকো, এসিডব্লিউএ পাওয়ার, আলফানার গ্রুপ, ইঞ্জিনিয়ারিং ডায়মেনশন (ইডি), রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল, ডেইলিম কেএসএ, আলজুমারাহ গ্রুপ প্রভৃতি। রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাতের সময় এসব একধরনের গৎবাঁধা বক্তব্য। দেখার বিষয়, প্রকৃত বিনিয়োগ এলো কি না কিংবা কতটা এলো। এর আগেও অনেকসময় সৌদি আরব এখানে ‘বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অর্থ’ বিনিযোগ করবে বলে নানা সময়ে মিডিয়ায় খবর এসেছে; কিন্তু তার খুব সামান্য অংশই প্রকৃতপক্ষে বাস্তব রূপ পেয়েছে।
আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুজিববর্ষের অথবা স্বাধীনতার অর্ধশতবর্ষ অনুষ্ঠানে সৌদি প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানকে ঢাকা আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে। এটি যদি ঘটে তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তার কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে বলে আশা করা যায়। আমাদের জন্য বিনিয়োগ আকর্ষণই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, করোনার প্রভাবে এরই মধ্যে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগে ভাটার টান লেগেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদেশী বিনিয়োগ কমেছে ৩৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। এই ভাটার টান খুব শিগগিরই বন্ধ হবেÑ এমন আশা করছেন না অর্থনীতিবিদ বা ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, বিদেশী বিনিয়োগ না বাড়লে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগও বাড়বে না। সে ক্ষেত্রে অর্থনীতি আরো নাজুক অবস্থার দিকে যাবে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা আছে। আগে শঙ্কা কাজ করত রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে, এখন শঙ্কা থমথমে রাজনীতির কারণে। আর আছে দুর্নীতি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এই দু’টি ক্ষেত্রেই পরিস্থিতির উন্নতির পরিবর্তে মারাত্মক অবনতি ঘটেছে বলা যায়। এ ছাড়া দক্ষ জনশক্তির অভাব, অবকাঠামোগত দুর্বলতা ইত্যাদি কারণেও বিদেশী বিনিয়োগকারীরা অনাগ্রহী হয়ে পড়েন। আর এসব কারণেই চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় চীন থেকে বেরিয়ে আসা বিদেশী বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসবে কি না তাতে সংশয় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকার উদ্যোগ নেবে বলা হলেও তেমন কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয় এখনো।
তবে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে সরকার। অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে আকার সেই বিবেচনায় অনেক বেশি বিদেশী বিনিয়োগ আসার কথা; কিন্তু যতটা আসছে তা অতি সামান্য। এটি সরকারের অর্থনৈতিক কূটনীতির দুর্বলতা স্পষ্ট করে তোলে।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বিশ্ব কিন্তু থেমে নেই। জীবনের গতি এখনো রুদ্ধ হয়ে যায়নি। থেমে নেই অর্থনীতির চাকা। আমাদের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর আশু সমাধান এবং সরকারি পর্যায়ে অর্থনৈতিক কূটনীতি সচল করে তোলা গেলে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করা একেবারে অসম্ভব নয়।


আরো সংবাদ



premium cement
দুদকের প্রথম নারী মহাপরিচালক শিরীন দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন, তারপরও লোডশেডিং বড় চমক ছাড়াই প্রস্তুত বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল দোয়ারাবাজারে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যা, আটক ১ বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশের দাবি সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াবের পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির ২ প্রার্থী নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ১৮৫ দিন : শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার ২ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা আবাহনীর ২২তম শিরোপা

সকল