৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে উন্নত দেশগুলোর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্যে অবিলম্বে এক উচ্চাভিলাষী কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের আয়োজনে ভার্চুয়াল লিডার্স সামিটে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে রাখতে উন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে অবিলম্বে একটি উচ্চাভিলাষী কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন। ৪০ জন বিশ্ব নেতা এতে অংশ নিচ্ছেন।

জলবায়ু ইস্যুগুলো সমাধানে সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী আমাদের শিখিয়ে গেল যে শুধুমাত্র শক্তিশালী সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব।

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম-সিভিএফ (ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম) এবং ভি২০ (ভালনারেবল টুয়েন্টি)-এর সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে- জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ সমুন্নত রাখা।

তিনি আরো বলেন, গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অফিস বাংলাদেশে। বাংলাদেশ স্থানীয়ভাবেই জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে টেকসইভাবে খাপ খাওয়ানোর বিষয়টি প্রচার করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর এ ব্যাপারে ‘সিওপি’র দায়িত্বশীল সদস্য রাষ্ট্র ও সিভিএফ’র চেয়ার হিসেবে আরো কিছু পরামর্শ দিতে চাই।’

দ্বিতীয় পরামর্শ হিসেবে তিনি বলেন, ‘১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিলের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করতে হবে, যা অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ ভারসাম্য বজায় রাখবে। এই তহবিলের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলোর ক্ষয়-ক্ষতি পূরণে বিশেষ দৃষ্টি দেবে।’

প্রধানমন্ত্রীর তৃতীয় পরামর্শ হচ্ছে, ‘প্রধান অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাতগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উদ্ভাবনের পাশাপাশি জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বিশেষভাবে ছাড় দিতে হবে।

তিনি সর্বশেষ পরামর্শে বলেন, ‘সবুজ অর্থনীতি ও কার্বন প্রশমন প্রযুক্তিগুলোর উপর দৃষ্টি দিতে হবে। এ লক্ষ্যে দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তির বিনিময় করতে হবে।’

শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন ও এই আয়োজনে তাকে আমন্ত্রণ করায় শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরে আসায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের আন্তরিক প্রশংসা করছে এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক।

তিনি বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ও সীমিত সম্পদের দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ অভিযোজন ও প্রশমনের ক্ষেত্রে বিশ্ব নেতৃত্ব হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা আমাদের জিডিপি’র প্রায় ২.৫ শতাংশ বা প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবেলায় টেকসই জলবায়ু সহনশীল ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যয় করি। আমরা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। এটা আমাদের প্রতিবেশকে অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন-এনডিসি বৃদ্ধিতে এবং জলবায়ুর পরিবর্তন সহনীয় টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণে আমরা বিদ্যমান জ্বালানী, শিল্প ও পরিবহন খাতের পাশাপাশি নতুন খাত অন্তর্ভুক্ত করেছি। এভাবে আমরা কার্বন হ্রাসের পদক্ষেপ নিয়েছি। এছাড়াও ২০২১ সাল নাগাদ উচ্চাভিলাষী এনডিসি পেশের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশব্যাপী ৩০ মিলিয়ন চারা রোপনের পরিকল্পনা করেছি এবং কম-কার্বনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান’ প্রণয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করছি।’

যে ৩৯ জন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন- সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা, ইতালিয়ান প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আরডার্ন এবং স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ।

পাশাপাশি, ইউরোপীয় কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের ভার্চুয়ালি যোগদানের কথা রয়েছে।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement
ধরপাকড়ের মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ অব্যাহত যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে ৩ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা নিহত ফিলিপাইনের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি, বাড়তে পারে আরো শিখ নেতা পান্নুনকে খুন করতে ‘হিটম্যান’ পাঠিয়েছিলেন ‘র অফিসার’ : ওয়াশিংটন পোস্ট দিল্লিকে উড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে কেকেআর করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার অ্যাস্ট্রাজেনেকার বাইডেনকে পিছনে ফেলে দিলেন ট্রাম্প ইউরোপের ‘গাজা’ যুদ্ধ আসছে শয়তানবাদ! পার্বত্য চট্টগ্রামে কেএনএফের উত্থান ও করণীয় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতির কর্মীকে বেদম প্রহার সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের

সকল