২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আল মাহমুদের সোনালি কাবিন বাংলাদেশের প্রতিধ্বনি

আল মাহমুদ। জন্ম : ১১ জুলাই ১৯৩৬, মৃত্যু : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ -

জন্মভূমির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক মায়ের সাথে সন্তানের নাড়ির যোগসূত্রের মতোই। মানুষের চিন্তা-চৈতন্য-আবেগ-স্বপ্ন ও কর্মের প্রকাশ ও বিকাশে স্বদেশ কোনো না কোনোভাবে সংযুক্ত হয়ে যায়। সে কারণে স্বদেশের প্রতি একধরনের অনুভূতি প্রত্যেক মানুষের মধ্যে সহজাতভাবে বর্তমান। প্রবাসজীবনেও স্বদেশ হাতছানি দিয়ে অনবরত ডাক দিয়ে যায়। স্বদেশ, স্বদেশের প্রকৃতি, মানুষ, বস্তুপুঞ্জ, প্রতিবেশ, সমাজ, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য; এককথায় সামূহিক অস্তিত্ব একজন আধুনিক মানুষের কাছে আলাদা এক ব্যঞ্জনায় প্রকাশিত। জীবনযাপনে, সৃষ্টিশীলতায়, চিন্তা-চেতনায় ও ভাবপ্রকাশের মাধ্যমে স্বদেশ কোনো না কোনোভাবে ছায়াপাত করে। শিল্পসাহিত্যে অনিবার্যরূপে তার প্রতিফলন ঘটে জাতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতির অন্বয়ে। জাতীয়তাবাদ থেকেই আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের (ঘধঃরড়হ ঝঃধঃব) সৃষ্টি। সাধারণত নৃতাত্ত্বিক জাতীয়তা অপেক্ষা রাজনৈতিক রাষ্ট্রের ভৌগোলিক জাতীয়তায় জাতিরাষ্ট্রে প্রাধান্য পায়। সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশে ষাটের দশকের শেষ দিকে বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের তুমুল তরঙ্গের অভিঘাতে ‘সোনালি কাবিনে’র (১৯৭৩) সৃষ্টি। পঞ্চাশ পেরিয়েও সমানভাবে চির-নতুন, সোনারোদ মাখা উজ্জ্বল ও সজীব।
নদীমাতৃক ও গ্রামকেন্দ্রিক বাংলাদেশ আল মাহমুদের জন্মভূমি, মাতৃভূমি ও স্বদেশ। এই জনপদের প্রকৃতি মানুষ-ঐতিহ্য-সংস্কৃতিবাহী চেতনাপুঞ্জ তাঁর কবিতায় কাব্যাদর্শে প্রাণবন্ত। নগরের অবক্ষয়প্রাপ্ত, গ্লানিময় অনিকেত জীবন থেকে মুক্তি খুঁজে পেয়েছেন স্বদেশের বিশাল পটভূমিকায়। স্বদেশ চেতনার রূপায়ণে এ ধারার অগ্রজ কবিদের কাব্যজগৎ তাকে অনুপ্রাণিত করে। এ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ :

আধুনিক আঙ্গিকে গ্রামকে ব্যবহার করার চেষ্টা হয়তো বা আমিই সর্বপ্রথম করেছি। হয়তো বা কেন আমিই করেছি। একটি আধুনিক কবিতার আঙ্গিকে গ্রামকে বাঙালি মুসলমান চাষীদেরকে, তাদের লেনদেন, তাদের যে আত্মীয়তার সূত্র- দেশের প্রতি, সংস্কৃতির প্রতি তাদের যে বন্ধন, তাদের যে দুঃখ বেদনা, সেটা আমি আমার কবিতায় আনার প্রথম চেষ্টা করেছি। [কবির সৃজনবেদনা]
আল মাহমুদ যে বাংলাদেশের ছবি আঁকেন তা রবীন্দ্রনাথ-জীবনানন্দ-জসীমউদ্দীন অঙ্কিত নয়; নদীভাঙা গ্রামজনপদের জীবন ও সংস্কৃতির মিশেলে সেই ছবি তাঁর কবিতায় প্রথম বাক্সময় হয়ে ওঠে। তাঁর ভাষ্য :
আমি এমন এক গ্রাম বাংলাকে উপস্থাপন করতে চেয়েছি, যে গ্রামবাংলা ভেঙে পড়া। ঠিক জসীমউদ্দীনের বাংলাদেশও না। আবার জীবনানন্দ দাশের বাংলাদেশও না। জসীমউদ্দীন এবং জীবনানন্দ দাশের বাংলাদেশে এক ধরনের রূপকথা আছে। একটা স্বপ্ন আছে। কিন্তু আমার দেখা বাংলাদেশ একদমই রূঢ়। এ বাংলাদেশ নদীর পাড়ভাঙা বাংলাদেশ। গ্রামকে গ্রাম বিলীন হওয়া বাংলাদেশ। এগুলো আমার কবিতায় প্রথম এসে যায়। [আল মাহমুদ : সাক্ষাৎকার]

কবি বাস্তব দৃষ্টিতে এবং স্বকীয় আঙ্গিকে প্রত্যক্ষ স্বদেশের চিত্রাবলি ও অনুভূতির প্রকাশ ঘটিয়েছেন অত্যন্ত সচেতনভাবে।
বাংলাদেশ-চেতনা বা স্বাদেশিকতা বা স্বদেশচেতনা ‘সোনালি কাবিনে’ বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছে। বাংলাদেশের নদীকেন্দ্রিক ও কৃষিভিত্তিক গ্রামজনপদ; গ্রামজনপদে প্রত্যাবর্তন এবং দেশজননীর কল্পচিত্র নির্মাণ; দ্রোহী দেশচেতনা এবং নারীপ্রেম ও দেশপ্রেমের অন্বয়; দেশজননীর ধারণা প্রকাশ পেয়েছে; সঙ্গে সঙ্গে দেশের কাছে আত্মনিবেদনের আন্তরিক মনোভাব প্রকাশিত। স্বদেশ, স্বদেশের রূপ ও চেতনার উপকরণ, দৃশ্য ও অদৃশ্য প্রভাব ও প্রতিফলন, ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি ও বস্তুগত জীবনের অত্যাবশ্যক খুঁটিনাটি এবং সর্বোপরি মৌলিক গ্রামীণ বাংলার ভেতরদেশ থেকে আল মাহমুদ কবিতা সৃজন করেন। তাঁর দৃষ্টি অনিবার্যভাবে গ্রাম-বাংলার দিকে ধাবিত; গভীর সাহস ও প্রত্যয়ের সাথে সেইখানে মগ্ন ও সংলগ্ন এবং আত্মপরিচয়ের ঠিকানায় শেকড় প্রোথিত। দেশজ জীবন ও প্রকৃতির মাঝেই তাঁর জীবনবেদ ও নিষ্ঠাবান কাব্যবিশ্বাস উপস্থাপন করেন এবং প্রমাণ করেন যে, গ্রামের কথকতার অর্থ গ্রাম্যতা নয়; সঙ্গে সঙ্গে স্বদেশকে ভালোবাসা একজন কবির জন্যে অপরিহার্য শর্ত। তবে তিনি ‘গ্রাম’ বলতে বোঝেন-
আমি আমার কবিতায়, আধুনিক নগর সভ্যতা তথা সর্বব্যাপী নাগরিক উৎক্ষেপের যুগেও ক্ষয়িঞ্চু গ্রামীণ জীবন ও ধসেপড়া গ্রামকে উত্থাপন করতে চাইছি বলে অনেক সমালোচক কটাক্ষ করেন। আমি তাঁদের বহুবার বোঝাতে চেষ্টা করেছি, গ্রাম বলতে আমি যূথবদ্ধ আদিম মানবজীবনকে বুঝি না, বরং এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় যে সব নরনারী ধনতান্ত্রিক নগর সভ্যতার বিরুদ্ধে গেরিলা বাহিনী গড়ে তুলছেন তাঁরা আসলে গ্রামেরই লোক। [‘ভূমিকা’, আল মাহমুদের কবিতা]

বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সাথে নিবিড়ভাবে সংলগ্ন যে গ্রামীণ জীবনকাঠামো ও জীবন-সংস্কৃতি, নাগরিক জীবনাযাপনের জটিল ও কঠিন অভিজ্ঞতার মাঝে বসে আল মাহমুদ তাকেই লালন করেছেন চেতনার উজ্জ্বলতায়।
নাগরিকতার বিপরীতে তাঁর কবিতার ভিত্তি ও উৎস গ্রামের চাষা-চাষী, জমিন, বলদ-লাঙল, নদী, নদীর মাঝি-নৌকা, পাখি, রাস্তার ভবঘুরে ও ঘরণী। এসব উৎস-উপাদান বাংলার গ্রামজনপদ থেকে গৃহীত যা স্বাদেশিকতার প্রতিনিধিত্ব করে। আল মাহমুদের কবিতায় যে গ্রামের চিত্র প্রতিফলিত তা বাংলাদেশর প্রতিনিধিত্বশীল গ্রাম; তাঁর সেই আপন ছোট্ট গ্রামে সারা বাংলাদেশ ছায়া বিস্তার করেছে। কবির অন্তর্জগতে নদীময় ও কৃষিকেন্দ্রিক গ্রামীণ বাংলা ঢুকে তাকে পুরোপুরি অধিকার করে আছে। সেই বিম্বিত বাংলাদেশই তাঁর কবিতা। আল মাহমুদের কবিতার চিরকালের অনন্য চরিত্র দেশজতা; তবে দেশজতা মানে কেবল মাটির আঘ্রাণ নয়, মানুষের প্রতিবিম্ব; যে মানুষ জমিনের সঙ্গে যুক্ত। জয়নুল আবেদীন ও এস এম সুলতানের ছবির মতো তাঁর কবিতায় এই জমিন ও মানুষ একই সূত্রে গাঁথা। যে জমিন তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের ভূগোল ও ইতিহাস থেকে এবং যে ভূগোল ও ইতিহাসের মধ্যে আছে কৃষকের সঙ্গে জমি, ধানক্ষেত, হালবলদ ও জমির দখলের সম্পর্ক। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা প্রভাবিত আধুনিকতা থেকে তা স্বতন্ত্র। পুঁজিকেন্দ্রিক বিশ্বায়নের আধিপত্যের বিপরীতে বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্যে কবি বসতি গড়েন।
কবিতা তো ফিরে যাওয়া পার হয়ে হাঁটুজল নদী
কুয়াশায় ঢাকা পথ, ভোরের আজান কিম্বা নাড়ার দহন
পিঠার পেটের ভাগে ফুলে ওঠা তিলের সৌরভ
মাছের আঁশটে গন্ধ, উঠোনে ছড়ানো জাল আর
বাঁশঝাড়ে ঘাসে ঢাকা দাদার কবর।
[‘কবিতা এমন’, সোনালি কাবিন]
কবি উপনিবেশিক নিসর্গচিত্র (খধহফংপধঢ়ব) অঙ্কন করেননি। উপনিবেশিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে প্রকৃত দেশ, কৃষক-লাঙল-জমিন, নদী-মাছ-জাল, কর্ষণ-আবাদ-শস্যসহ কবি দেশের মাটিলগ্ন কর্মব্যস্ত মানুষের চিত্রাবলী আঁকেন; যার সঙ্গে জীবনবাস্তবতা জড়িত। গ্রামীণ প্রকৃতি এবং গ্রামের মানুষ নিয়ে কবির স্বদেশচেতনা কার্যকর। নদীভাঙনে বিলীন হওয়া বাংলাদেশের করুণ গাথা তাঁর কবিতাকে করেছে আরো জনজীবনস্পর্শী। নদী, নদীর ভাঙন, ভাঙনে বিলীন হওয়া গ্রাম, নদীলগ্ন প্রকৃতি-পশুপাখি ও মানুষ তাঁর কবিতার একটা বড় জায়গা জুড়ে আছে। আজীবন নদীর সঙ্গে সম্পর্ক তাঁর; জীবনের গভীর দুঃখময় অভিজ্ঞতা এই নদীর সঙ্গেই হয়েছে। ‘চোখ যখন অতীতাশ্রয়ী হয়’ কবিতায় নদীভাঙনে ছিন্নমূল পরিবারের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ার করুণ গল্পকে কবি নূহের মহাপ্লাবনের ইতিহাসের সাথে যুক্ত করে বৈশ্বিক রূপে হাজির করেন। আল মাহমুদ এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে পরিবারের উদ্বাস্তু হয়ে নতুন বসতি গড়ার সাথে তুলনা করেন। অন্য দিকে ‘বাতাসের ফেনা’ কবিতায় নদীভাঙনের বাংলাদেশ হাজির করেন।
চড়–ইয়ের বাসা, প্রেম, লতাপাতা, বইয়ের মলাট।
দুমড়ে মুচড়ে খসে পড়ে। মেঘনার জলের কামড়ে
কাঁপতে থাকে ফসলের আদিগন্ত সবুজ চিৎকার।
ভাসে ঘর, ঘড়া-কলসী, গরুর গোয়াল
বুবুর স্নেহের মতো ডুবে যায় ফুল তোলা পুরোনো বালিশ।
বাসস্থান অতঃপর অবশিষ্ট কিছুই থাকে না
জলপ্রিয় পাখিগুলো উড়ে উড়ে ঠোঁট থেকে মুছে ফেলে বাতাসের ফেনা।
কবি আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়েই কবিতায় স্বদেশের গ্রাম, ভেঙেপড়া গ্রাম, গ্রামের নদীভাঙা পরিবার, পরিবারের সমুদয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া, ভাঙনের পারিবারিক পরিণতি, বিচ্ছিন্নতা ও আশ্রয়, চরের উত্থান-পতন, প্রকৃতি ও মানুষের প্রেম ও হিংসা, বহমান নদী ও নারীকে তুলে আনেন শহরের হাতছানি উপেক্ষা করে। নদী, নদীতীরবর্তী জনপদ ও গ্রাম তাই তাঁর কবিতায় বিস্তৃৃত, প্রাণবন্ত ও মৌলিকতায় অনন্য। অনুকরণ ও কৃত্রিমতা একদম কাজ করেনি সেখানে।
আল মাহমুদের কবিতায় স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অর্থ নয়া উপনিবেশবাদের (ঘবি ঈড়ষড়হরধষরংস) সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিপরীতে বাংলার আবহমান গ্রামীণ সাংস্কৃতিকপ্রান্তরে ফেরা। সেজন্যই কবি সব অসহায়তা ও দ্বিধাকে অতিক্রম করে স্বাপ্নিক জগৎ থেকে বাংলাদেশের বিশাল আঙিনায় ফিরে আসেন আত্মপ্রত্যয়ের ব্যঞ্জনায়।
তোমাকে বসতে হবে এখানেই
এই ঠাণ্ডা ধানের বাতাসে।
আদরে এগিয়ে দেওয়া হুঁকোটাতে সুখটান মেরে
তাদের জানাতে হবে কুহলি পাখির পিছু পিছু
কতদূর গিয়েছিলে পার হয়ে পানের বরজ!
[‘খড়ের গম্বুজ’, সোনালি কাবিন]

নিজস্ব আশ্রয়ে ফিরে এসে প্রত্যাগত যুবককে কৈফিয়ত দিতে হয় আপন স্বজনের কাছে বিশ্বায়ন প্রভাবিত নগর সভ্যতার প্রতীক যে নিভাঁজ পোশাক, ছদ্মবেশী কোকিল আর শকুন তাদের প্রতারণায় কিভাবে গ্রামীণ সভ্যতার প্রতীক ‘সবুজ লতা’ সে হারিয়ে এসেছে। ছায়া ও পল্লবের ঘ্রাণহীন নগর থেকে অকৃত্রিম বিশাল বাংলাদেশে কবির প্রত্যাবর্তন তাই বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। ঔপনিবেশিক জাল ছিন্ন করে সে মুক্তির পথে ফিরে আসে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রশ্নে জীবনানন্দ দাশ এবং আল মাহমুদের তুলনামূলক বিচারে ‘সোনালি কাবিনে’র অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা ‘প্রত্যাবর্তনের লজ্জা’ নামক কবিতাটি উল্লেখযোগ্য। প্রকৃতপক্ষে ‘প্রত্যাবর্তনের লজ্জা’ কবিতায় আল মাহমুদ প্রত্যাবর্তনের জন্য লজ্জার বদলে আনন্দিত। শেষ পর্যন্ত কবিও ট্রেন ফেল করে ঘরে ফেরার আনন্দে প্রত্যাবর্তনের সব লজ্জাকে ঘষে ঘষে তুলে ফেলবার অঙ্গীকার করেন।
আল মাহমুদ বাংলাদেশের কবি ঐতিহ্যবাদী কবি। বাংলার আপামর জনসাধারণ, রূপ-রস-গন্ধময় বাংলার প্রকৃতি ও জীবনের দৈনন্দিন জীবনালেখ্যই তাঁর কবিতার প্রধান উপজীব্য। কিন্তু আল মাহমুদ নদীভাঙনের মুখে বিপর্যস্ত গ্রামবাংলার দৃশ্যাবলি গভীর দুঃখময়তায় চিত্রিত করেন এবং সেই দুঃখের দেশেই ফিরে আসেন। নদীভাঙনের ফলে মানুষ এখানে ধনী থেকে এক নিমেষেই নিঃস্ব হয়ে যায়, উদ্বাস্তু হয়ে দেশান্তর হয় এবং অস্তিত্বহীন হয়ে ছিন্নমূল হতে বাধ্য হয়। এতে পারিবারিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের মৃত্যু ঘটে। মানুষের জীবনে নদীর ভাঙনের ভয়াবহ বাস্তবতা তাঁর কবিতায় আলাদা একটা জায়গা করে নিয়েছে। কবি জীবনানন্দ যেখানে রূপসী বাংলার রূপমুগ্ধ; আল মাহমুদ সেখানে রূপসী বাংলার হারানো রূপেগন্ধে ব্যথিত। একজন যা কিছু দেখেছেন তাতেই সন্তুষ্ট; অন্যজন বর্তমানে অসন্তুষ্ট হয়ে ব্যথিত মনে অতীতের স্মৃতিতে আহত। জীবনানন্দ দাশ যেখানে রোমান্টিক, আল মাহমুদ সেখানে রোমান্টিক বিষাদে পরিপূর্ণ। এভাবে আল মাহমুদ প্রকৃত বাংলাদেশের বাস্তব রূপ অঙ্কন করেন পশ্চিমা আধুনিক নন্দনতত্ত্বের বিপরীতে দাঁড়িয়ে। বাংলার মানুষ, প্রকৃতি, সমাজ, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও রাজনীতি সম্পর্কে কবি এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি লালন ও প্রকাশ করেন যা অনন্য। বিশেষভাবে স্বদেশ নির্মাণে, প্রত্যাবর্তনে, প্রকৃতির অঙ্কনে বা ঐতিহ্য রূপায়ণে কবি আল মাহমুদের ‘সোনালি কাবিন’ যেন বাংলাদেশের প্রতিধ্বনি।


আরো সংবাদ



premium cement
ফেনীতে শিবিরের পানি-স্যালাইন বিতরণ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনে পিসিবির প্রস্তাবিত ৩ ভেন্যু চকরিয়ায় বিরোধের জেরে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা গাজীপুরে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যু বিশিষ্ট মুহাদ্দিস আল্লামা জুলকারনাইনের ইন্তেকাল ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে ‘মিথ্যাচার’ : যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিবের বিরুদ্ধে মামলা উপজেলা নির্বাচন : কেন্দ্রে থাকবে সর্বোচ্চ পুলিশ-আনসার ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে মাসে লাখ টাকা আয় আরিয়ান মুন্নার নোয়াখালীতে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু বেনাপোলে সামুদ্রিক মাছের ট্রাকে ৪৭০ কেজি চিংড়ি আটক তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪৩ ডিগ্রি, লোডশেডিং রেকর্ড ৩২০০ মেগাওয়াট

সকল