২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মুহাম্মদ সা: অনন্য হয়ে ওঠার রোলমডেল

-

গতকালের পর
কিশোরদের সমর্থন প্রয়োজন
বয়ঃসন্ধিকাল একটি পরীক্ষামূলক পর্যায় এবং পরিবারকে তার সমর্থন, ভালোবাসা আর স্নেহ দিতে হবে। এই আবেগ কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে জাদুর মতো কাজ করে, কারণ এটি- তাদের অন্যদের কাছ থেকে মনোযোগ এবং প্রশংসার চাহিদা পূরণ করে। তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। এই আত্মবিশ্বাস কিশোরদের আচরণ বদলে দেয়। আরো দায়িত্বশীল করে, যা তাদের প্রিয়জনদের আস্থা এবং সম্মানের মধ্যে রাখে।
মুহাম্মদ সা: ধারাবাহিকভাবে মা, দাদী ও চাচীর স্নেহময় পরিবেশে বসবাস করতেন এবং তিনি তার চাচী এবং চাচার পরিবারের যে ভালোবাসা পেয়েছেন সেই একই ভালোবাসা এবং প্রশংসার বিনিময় তিনি দিয়েছেন।
মুহাম্মদ সা: তাঁর চাচাকে সাহায্য করার জন্য রাখাল হিসেবে কাজ করেছিলেন, সাথে ভ্রমণ করেছিলেন তিনি এবং আবু তালিব মারা গেলে, মুহাম্মদ সা: দুঃখজনক সময়ের মুখোমখি হন (এই বছর, ৬১৯ খ্রিষ্টাব্দে, তার স্ত্রী খাদিজা মারা যান এবং এটি তাঁর জন্য শোকের বছর হিসেবে পরিচিত)।
তাঁর চাচী ফাতিমা চলে যাওয়ার সময়ও মুহাম্মদ সা: একইভাবে শোকাচ্ছন্ন হয়েছিলেন। তিনি তাঁর নিজের হাতে চাচীর কবর খনন করেছিলেন এবং দোয়া করেছিলেন যে, আল্লøাহ যেন তাঁর রূহের প্রতি করুণা করেন।
কিভাবে আপনি কিশোর-কিশোরীর প্রতি স্নেœহশীল হবেন?
তার কৃতিত্বকে উদযাপন করুন। বাধা না দিয়ে বা বিচার না করে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তাকে বুঝতে দিন যে, আপনি তাকে ভালোবাসেন এবং তার প্রশংসা করেন।
সম্মান : একজন কিশোর-কিশোরীকে শুধু ভালোবাসাই যথেষ্ট নয়, একই সাথে আপনাকে অবশ্যই তার প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। মুহাম্মদ সা:-এর এমন একটি পরিবার ছিল যারা তার সাথে সর্বোচ্চ সম্মানের সাথে আচরণ করেছিলেন। যা, তাঁর পরিমার্জিত ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়তা করে।
নিচে এমন কিছু পথের কথা উল্লেখ করা হলো যা মুহাম্মদ সা: করেছেন এবং কীভাবে তা আপনার আচরণকে অনুপ্রাণিত করতে পারে।

মুহাম্মদ সা:-এর আচরণ
-মুহাম্মদ যখন ১২ বছর বয়সে ছিলেন, তিনি একজন সন্ন্যাসীকে বলেছিলেন যিনি তাকে কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে কুরাইশদের দেবতাদের নামে শপথ করতে বলেছিলেন- ‘এখন আপনি যা চান তা আমাকে জিজ্ঞেস করুন’ বলার আগে মুহাম্মদ সা: বলেছিলেন, ‘আল্লাত এবং আল-উজ্জার নামে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না, আল্লাহর কসম তাদের ব্যতীত অন্য কিছুকে এত ঘৃণা করি না।’
-মুহাম্মদ তাঁর চাচী, চাচা এবং চাচাতো ভাইদের সাথে পারিবারিক খাবার খাওয়ার সময় মাঝারিভাবে ধীর গতিতে খেতেন, খাবারের জন্য ঝাঁকুনি না দিয়ে বরং দরজায় কড়া নাড়তেন।
-সকালে রান্নাঘরে চোখ ধাঁধানো এবং এলোমেলোভাবে প্রথম চেহারা দেখানোর পরিবর্তে, মুহাম্মদ সর্বদা তার মুখ ধুয়ে ফেলতেন এবং চুল আঁচড়াতেন।


আপনার আচরণ
-তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ বলেই অন্যদের অনুকরণ করবেন না। নবীর ক্ষেত্রে, মক্কাবাসীর বেশির ভাগই ছিল মুশরিক, কিন্তু মুহাম্মদ সা: ভিড় থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। ভদ্র থেকে এবং অন্যের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আপনার ব্যক্তিগত বিশ্বাস প্রকাশ করুন।
-অধৈর্য বা জেদ করে কিছু দাবি করবেন না। ধৈর্য ধরুন এবং আপনার অনুরোধগুলো বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সম্মানজনক করুন।
-আপনি বাড়িতে পরিবারের সাথে থাকলেও আপনার চেহারার যত্ন নিন।

 

আবু তালিব মানুষের সাথে ভালো আচরণ করার জন্য পরিচিত ছিলেন এবং মক্কাবাসী তাকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করত, যদিও তিনি আর্থিকভাবে সচ্ছল ছিলেন না। এটি এমন একটি সমাজ যেখানে দরিদ্রদের খুব কমই সামাজিকভাবে সম্মান করা হতো- প্রথম দিকের আরব ইতিহাসবিদরা বলেন, ‘আবু তালিব এবং উতবা ছাড়া কোনো দরিদ্র কুরাইশ শক্তিশালী ছিল না, যারা অর্থ ছাড়াই শক্তিশালী হয়েছিলেন।’
মক্কার সমাজের নেতা হিসেবে আবু তালিবের আবির্ভাব ছিল নিয়মের ব্যতিক্রম এবং তাঁর অনবদ্য নীতি-নৈতিকতার কারণে এটি ঘটেছিল। তার নৈতিকতা তার পরিবারের প্রতি তার আচরণে প্রতিফলিত হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল তার স্ত্রী ফাতিমা, তার ছয় সন্তান এবং অবশ্যই মুহাম্মদ। কিশোর-কিশোরীদের জন্য বাড়িতে সম্মানজনক আচরণ গুরুত্বপূর্ণ। [চলবে] অনুবাদ : ফারাহ মাসুম


আরো সংবাদ



premium cement