২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অপহরণের পর শিশু রিয়াদকে হত্যা, নিখোঁজের মাইকিং করে হত্যাকারী

অপহরণের পর শিশু রিয়াদকে হত্যা, নিখোঁজের মাইকিং করে হত্যাকারী - ছবি : নয়া দিগন্ত

শিশু রিয়াদকে অপহরণ। এরপর হত্যা করে লাশ গুম। পরে মোবাইলে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণও দাবি। এতসব কিছুর পর আবার নিজেই এলাকায় শিশু রিয়াদ নিখোঁজের মাইকিং করে হত্যাকারী। যাতে করে পরিবার ও পুলিশের সন্দেহের তীরটি তার দিকে না যায়। পরিপূর্ণ সন্দেহের বাইরে থাকতে নিজের কর্মস্থলের এক সহকর্মীর মোবাইল চুরি করে মুক্তিপণ দাবি করেন সেই মোবাইল দিয়েই। এতকিছুর পরও শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলো শিশু রিয়াদের হত্যাকারী সুজন মিয়া (২৮)।

এ দিকে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার হয় ওই শিশুর লাশ।

গ্রেফতার হওয়া সুজন গাইবান্ধা জেলার মিয়া গ্রাম এলাকার কোরবান আলীর ছেলে। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ছয় নম্বর ওয়ার্ডের চর সিমুলপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। তিনি সম্পর্কে রিয়াদের খালু হন।

গত ২৪ এপ্রিল নিখোঁজ শিশু রিয়াদের খোঁজে আশপাশের এলাকা ও স্বজনদের বাড়িতে যখন তালাশ করছিল বাবা-মা। তখন সেই তালাশে অংশ নিয়ে ছিলেন শিশুটির খালু সুজন। পরদিন নিজে থেকে নিখোঁজ শিশুর সন্ধান পেতে বিভিন্ন এলাকায় করেছেন মাইকিংও।

প্রযুক্তির মাধ্যমে পাওয়া তথ্যে তার দিকেই সন্দেহের তীর ছিল পুলিশের। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ‘নিখোঁজ শিশুর লাশ পরিত্যাক্ত ডোবার ঘাসের নিচ থেকে উদ্ধার হয়েছে’।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ এপ্রিল সিদ্ধিরগঞ্জের রেললাইনের পূর্ব পাশের এ/পি পূর্ব মুনলাইট এলাকায় বাড়ির সামনে থেকে নিখোঁজ হন ৭ বছরের শিশু রিয়াদ। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে ২৮ এপ্রিল সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তার বাবা। এ জিডির প্রেক্ষিতে পুলিশ শিশুটির পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের মুঠোফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। একটি নম্বর থেকে মুক্তিপণ দাবি করে শিশুটির পরিবারের কাছে ফোন করলে তার সূত্র ধরে সুজনকে আটক করে পুলিশ।

পরে সুজনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টায় সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি মাতবর বাজার এলাকায় নির্মাণাধীন ড্রেনের পাশে একটি পরিত্যাক্ত ডোবার মধ্যে লম্বা ঘাসের নিচ থেকে শিশুটির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।

শিশুটির বাবা রাজন মিয়া জানান, ‘রিয়াদ নিখোঁজের পর থেকে সুজন তাদের সাথে খোঁজাখুঁজি করছিলেন। সন্ধান পেতে বিভিন্ন স্থানে মাইকিংও করেছেন। তবে, রাজন মিয়ার পরিবারের সাথে সুজনের তেমন কোনো বিরোধ ছিল না।’

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শওকত জামিল পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, ২৪ এপ্রিল বাড়ির সামনে থেকে সুজন শিশু রিয়াদকে অপহরণ করে রাতেই হত্যা করে জালকুড়িতে ড্রেনের পাশে ঘাসের নিচে লুকিয়ে রাখে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ বিষয় স্বীকার করেছেন সুজন। আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জড়িত অন্যদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement