গাজীপুরের মাদার টেক্সটাইল মিলে দ্বিতীয় দফা আগুন

গাজীপুরে মাদার টেক্সটাইল কারখানায় বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিটের কর্মীরা দীর্ঘ চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুন পুরোপুরি নেভাতে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ডাম্পিংয়ের কাজ করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। অগ্নিকাণ্ডে কারখানার অন্তত ৮০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল হামিদ ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন ছোট গোবিন্দপুর শ্রীপুর এলাকাস্থিত ‘মাদার টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড’ কারখানার টিনসেড ভবনের ব্লোরুমে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সিলিংয়ে থাকা ডাস্টের কারনে আগুন মুহূর্তের মধ্যে কারখানার ব্লোয়িং সেকশন, ড্রায়িং সেকশন ও কার্ডিং সেকশনে ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের জয়দেবপুর ও কাশিমপুর স্টেশনের একটি করে দুইটি এবং ডিইপিজেড স্টেশনের তিনটিসহ মোট পাঁচটি ইউনিট পর্যায়ক্রমে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় চার ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে আগুনে কারখানার ব্লোয়ার মেশিন, ড্রায়িং মেশিন, কার্ডিং মেশিন, তুলাসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন পুরোপুরি নেভাতে সকাল ৮টা পর্যন্ত ড্যাম্পিংয়ের কাজ করেন। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে প্রথম দফার অগ্নিকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে শুক্রবার বিকেলে ওই কারখানায় দ্বিতীয় দফায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের কাশিমপুর ডিবিএল স্টেশনের স্টেশন অফিসার মিরাজুল ইসলাম জানান, প্রথম দফায় অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুনের হাত থেকে রক্ষা করতে বিপুল পরিমাণ তুলাসহ বিভিন্ন মালামাল কারখানার একটি কক্ষে রাখা হয়। শুক্রবার বিকেল পৌনে তিনটার দিকে ওই কক্ষে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন মুহূর্তেই পুরো কক্ষে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে এ স্টেশনের একটি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যায়। তারা প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা চেষ্টার পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে আগুন পুরোপুরি নেভাতে সকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ডাম্পিংয়ের কাজ করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আগুনে তুলাসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়েছে ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি জানান, প্রথম দফায় অগ্নিকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু তুলা ওই কক্ষে সরিয়ে নেয়া হয়। এসময় সরিয়ে নেয়া তুলার সাথে আগুনের কণা থাকায় দ্বিতীয় দফায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

কারখানার পরিচালক (অপারেশন) মো: হানিফ জানান, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিক ভাবে নিরূপন করা যায়নি। তবে অগ্নিকাণ্ডে কারখানার ৩নং ইউনিটের ব্লোরুম, ফিল্টার, বাসবার, এসি ডাক্ট, ৫টি কার্ডিং মেশিন, ৩টি ভোক ড্রইং মেশিন, কাঁচামাল ও বিভিন্ন সরঞ্জামাদি এবং ভবনসহ কারখানার অন্তত ৮০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।