ফরিদপুরের সালথায় ঘটনায় একাধিক মামলা হওয়ার পর গ্রেফতারের ভয়ে কয়েকটি এলাকা কৃষকশূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে সোনালী আঁশ পাটক্ষেত নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাই পাটরক্ষায় মাঠে নেমে কাজ শুরু করেছে নারীরা। বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাটক্ষেত পরিচর্যার কাজ করতে দেখা গেছে নারীদের।
সালথার ঘটনায় উপজেলার সোনাপুর, ভাওয়াল ও রামকান্তপুর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকাকে সরাসরি জড়িত বলে চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসব এলাকার কয়েকটি ফসলি জমির মাঠ ঘুরে দেখা যায় কৃষকরা গ্রেফতারের ভয়ে পলাতক রয়েছে।
পাটক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কয়েক নারী বলেন, গত ৫ এপ্রিল সালথার ঘটনায় অনেকগুলো মামলা হয়েছে। এ সব মামলায় এজাহারভুক্ত ২৬১ জন আসামি ছাড়াও অজ্ঞাত আরো তিন থেকে চার হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। ফলে যে কাউকেই পুলিশ গ্রেফতার করার সুযোগ রয়েছে। তাই গ্রেফতার ও হয়রানির ভয়ে দোষি-নির্দোষি সবাই পলাতক রয়েছে। ফলে এসব এলাকা কৃষকশূন্য হয়ে পড়েছে।
কৃষকের অভাবে আমাদের প্রধান ফসল পাঠক্ষেত পরিচর্যার কাজ ঠিক সময় না করতে পেরে পাটের ছোট ছোট চারাগুলো নষ্ট হতে শুরু করে। এ কারণে বাধ্য হয়েই পাঠক্ষেতে নেমে কাজ করতে হচ্ছে নারীদের।
এ দিকে এসব এলাকার কৃষক পরিবারের কয়েকজন নারী তাদের দুর্দিনের কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে বাজার করার টাকা নেই। আমাদের স্বামীরা অন্যের ক্ষেতে কাজ করে সংসার চালাতো। এখন তো ভয়ে তারা সবাই পালিয়ে বেড়াচ্ছে। রোজার বাজার-শদাইও করতে পারেনি। বাড়িতে আমরা সন্তান নিয়ে না-খেয়ে মরার দশা।
এক নারী বলেন, কিস্তির টাকা দিয়ে ফসল চাষ করি আমরা। এ বছর ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এখন যদি ঠিকমত পাঠ চাষাবাদ না করা হয় তাহলে পাটও নষ্ট হবে। আবার চলছে লকডাউন। সব মিলে আমাদের বেঁচে থাকাই কষ্টকর। আমাদের পুরুষরা ক্ষেতে কাজ করতে পারছে না। সবসময় ভয়ে থাকে। আমাদের ক্ষমা করে দিয়ে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিলে সরকারের কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকতাম।
উল্লেখ্য, লকডাউনকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়ে গত ৫ এপ্রিল সালথা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি অফিসে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। এ সময় দুটি সরকারি গাড়িসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় তারা। এ ঘটনায় দু’যুবক নিহত হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা