টঙ্গীর খালে ভাসমান লাশের রহস্য উদঘাটন করলো পুলিশ
- গাজীপুর মহানগর সংবাদদাতা
- ১২ এপ্রিল ২০২১, ১২:১৭
টঙ্গী তুরাগ নদের শাখা স্থানীয় আন্দারুল খাল থেকে গত ১৯ মার্চ উদ্ধার হওয়া লাশের রহস্য উদঘাটন করলো জিএমপি টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ।
লাশের পরিচয় ও হত্যাকাণ্ডের পুরো ক্লু এখন পুলিশের হাতে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত একজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করতেও সক্ষম হয়েছে পুলিশ। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
তার দেয়া স্বীকারোক্তিমতে, পাঁচ লাখ টাকার মুক্তিপণ না পেয়ে ইসমাইল সরকারকে (১৪) হত্যা করে লাশ খালে ফেলে দেয় অপহরণকারী চক্রটি।
ইসমাইল রাজধারীর তুরাগ থানার কামারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। তার বাবার নাম মো: নূর নবী সরকার। তাদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার ধানঘরা গ্রামে।
সোমবার টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: শাহ আলম গণমাধ্যমকে জানান, গত ১৯ মার্চ সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় তুরাগ নদের শাখা স্থানীয় আন্দারুল খালের পানিতে ভাসমান অবস্থায় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরনে নীল রঙের জিন্স প্যান্ট এবং নীল রঙের টি শার্ট ছিল, দুই চোখ যখমপ্রাপ্ত এবং ডান চোখ দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার আলামত ছিল। লাশ পানিতে থাকায় শরীরের বেশির ভাগ জায়গা ফুলে পচে বিকৃত হয়ে যায়। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর পর পুলিশ রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎমিশে তত্ত্বাবধানে টঙ্গী পশ্চিম থানার একটি চৌকস তদন্ত দল ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং আসামি গ্রেফতারের জন্য কাজ শুরু করে।
এ ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলাটি তদন্তকালে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিহতের পরিচয় জানার জন্য গাজীপুর মহানগরসহ আশপাশের জেলাগুলোতে ভিকটিমের ছবিসহ বেতার বার্তা পাঠায়। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভিকটিমের ছবি প্রচার করা হয়। রেলস্টেশন, বাসস্টেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগমের পয়েণ্টে ভিকটিমের ছবি প্রিন্ট করে টানিয়ে দেয়া হয়। একপর্যায়ে তদন্তকালে ডিএমপির তুরাগ থানায় গত ১৮ মার্চ দায়ের করা নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি জিডির তথ্য অনুসন্ধানে যায় তদন্তকারী দলটি। ওই জিডির সূত্র ধরে ভিকটিমের অস্থায়ী ঠিকানা তুরাগ থানার কামারপাড়ায় গিয়ে ভিকটিমের বাবা-মাকে ছবি ও ভিকটিমের জামা কাপড় দেখিয়ে এবং ভিকটিম যে সেলুনে নিয়মিত চুল কটাত সেই সেলুনে গিয়ে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে। পরে পুলিশ ভিকটিমের বাবা-মায়ের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামি আতাউল হোসেনকে (৩৫) রোববার গ্রেফতার করে। আতাউল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে। পরে তিনি স্বেচ্ছায় আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গ্রেফতারকৃত আতাউল গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানার রামনগর গ্রামের মৃত ইমাম হোসেনের ছেলে।
স্বীকারোক্তিতে তিনি জানায়, তিনি ও তার আরো দুই সহযোগী স্কুলছাত্র ইসমাইলের বাবার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকার মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশে তাকে অপহরণ করে। অবশেষে তারা মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে রেখে যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা