২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


যে কোনো মূহূর্তে গতি বদলাতে পারে অশনি, আঘাত হানতে পারে উপকূলে

- ছবি - সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগর এবং এর অশপাশের এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ আজও শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টি দ্রুত শক্তি অর্জন করছে। এর গতিমুখ এখন পর্যন্ত ভারতের উড়িশ্যা ও অন্ধ্র প্রদেশের দিকে আছে। তবে এটি যে কোনো মূহূর্তে গতি পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এটি যেখানেই আঘাত হানুক না কেন, এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলসহ বেশিরভাগ এলাকায় ১১ মে থেকে বৃষ্টি হতে পারে।

আজ সোমবার সকালে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মোঃ শাহীনুল ইসলাম বাসস’কে জানান, ‘চিন্তার কোনো কারণ নেই। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী যেভাবে ছিল এখনো সেভাবেই আছে ঘূর্ণিঝড় অশনি। যেভাবে আছে, সেখান থেকে আজ তেমন পরিবর্তন হয়ত হবে না। বরং এটি আগামীকাল থেকে আস্তে আস্তে দুর্বল হতে পারে। আজ পর্যন্ত এটা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই থাকবে। আজ এর গতিপথ কোনো পরিবর্তন হবে না। আজকের পর অশনির গতিপথ পরিবর্তন হবে কিনা তাও বলা যাচ্ছে না। বর্তমানে যে গতিপথে আছে তাতে আগামীকাল মঙ্গলবার এটি ভারতের উপকূলের আছড়ে পড়তে পারে। এ কারণে সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় দেশের চার সমুদ্র বন্দরে আগের মতো ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নদী বন্দর গুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত জারি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আপাতত বাংলাদেশ শঙ্কামুক্ত থাকবে। তবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া ও বাতাস বয়ে যেতে পারে। এখন পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী, এটি ভারতের উড়িশ্যা দিকে ধাবিত হচ্ছে। তবে উপকূলে ধেয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এর গতি কমে যাবে। যার ফলে বাংলাদেশে এর সেভাবে প্রভাব পড়বে না বলে দৃশ্যমান হচ্ছে।’

আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ বুলেটিন-৮ অনুযায়ী, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং এর কাছাকাছি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সোমবার সকাল ৬টার দিকে চট্টগ্রাম সমদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে এক হাজার ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে এক হাজার ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মে মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দু’টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে।

অন্যদিকে, মে মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্ট হতে পারে। উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত দুই থেকে তিন দিন মাঝারি বা তীব্র কালবৈশাখী বা বজ্র ঝড় এবং অন্যস্থানে তিন থেকে চার দিন হালকা বা মাঝারি কালবৈশাখী বা বজ্রঝড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অধিদফতরের মে মাসের দেয়া দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে এক থেকে দুটি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং অন্যস্থানে দুই থেকে তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement