০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


শ্রমিক দল পুনর্গঠনের তোড়জোড়

-

জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল পুনর্গঠন নিয়ে তোড়জোড় চলছে। দেশের রাজনীতিতে সার্বিকভাবে এখন একটি ক্রান্তিকাল চলছে। এমন অবস্থায় বিএনপির রাজনীতিতে শ্রমিক দলের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আর সেজন্য শ্রমিক দলকে করতে হবে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল। মূলত এসব দিক সামনে রেখেই এ উদ্যোগ গ্রহণ করা করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরে কাউন্সিলের মাধ্যমেই নতুন করে গঠিত হতে পারে শ্রমিক দলের নতুন কমিটি।
শ্রমিক দল পুনর্গঠন নিয়ে সংগঠনটির নেতাদের সাথে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্কাইপিতে কথা বলেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ মে তাদের মধ্যে কথা হয়। সূত্রটি আরো জানায়, বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ-উজ-জামান মামুন, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের খাজা।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে হুমায়ুন কবির খান নয়া দিগন্তকে বলেন, ১৪ মে তারেক রহমান শ্রমিক দলের নেতৃবৃন্দ ও আমাদের সাথে স্কাইপিতে কথা বলেছেন। তিনি শ্রমিক দলকে শক্তিশালী করার জন্য তার পরিকল্পনা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। এ ছাড়া তিনি শ্রমিক দল নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা জানতে চেয়েছেন।
হুমায়ুন কবির খান আরো জানান, শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটি আগামী সেপ্টেম্বরে কাউন্সিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। এ সময় তারেক রহমান শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন, এটা চূড়ান্ত কিছু নয়। সময়টা আরো সামনে নিয়ে আসতে পারেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৯-২০ এপ্রিল নির্বাচন দেখিয়ে সাবজেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান আনোয়ার হোসাইনকে সভাপতি ও নুরুল ইসলাম খান নাসিমকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৪ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তালিকা ওই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর শ্রম পরিচালকের দফতরে দাখিল করেন।
পরে আনোয়ার-নাসিম কমিটির বিরুদ্ধে বিদ্যমান গঠনতন্ত্রের ১২নং অনুচ্ছেদের বিধান অনুসরণ করা হয়নি বলে শ্রমিক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের খাজা অভিযোগ উত্থাপন করেন। একইভাবে ২০১৪ সালের ৭ জুন বিশেষ সম্মেলন ও নির্বাচন দেখিয়ে এ এম নাজিম উদ্দিনকে সভাপতি ও আবুল খায়ের খাজাকে সাধারণ সম্পাদক করে ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর শ্রম পরিচালকের দফতরে আরেকটি কমিটির তালিকা দাখিল করা হয়। পরে উল্লেখিত দুইটি কমিটি শ্রমিক দলের গঠনতন্ত্র ও হাইকোর্ট দাখিল করা রিট পিটিশনের রায়ের আলোকে গোপন ব্যালটে স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলে শ্রম পরিচালক মতামত প্রদান করেন। ওই দু’টি কমিটি শ্রম পরিচালকের অনুমোদন না পাওয়ায় ২০১১ সালের ৬ জুন গঠিত নজরুল ইসলাম খান ও জাফরুল হাসানের কমিটি শ্রম অধিদফতরে বৈধ কমিটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর শ্রমিক দলের এক নেতা জানান, নজরুল ইসলাম খান ও জাফরুল হাসানের কমিটির বাইরে শ্রম অধিদফতরে অন্য কোনো কমিটির অস্তিত্ব নেই। কিন্তু শ্রম অধিদফতরের অনুমোদন না পেলেও বর্তমান কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম প্রায় পাঁচ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। এতে শ্রমিক দলের একটি অংশের মধ্যে কিছু ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি বিদ্রোহী গ্রুপটি আদালতে মামলা পর্যন্ত করেছিল। এরপর পাল্টাপাল্টি সভা-সমাবেশ ও সংঘর্ষও হয়। পরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও শ্রমিক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাফরুল হাসানের মধ্যস্থতায় দ্রুত কাউন্সিল করা হবেÑ এমন শর্তে দুই গ্রুপকে একত্র করে আদালতের মামলাও তুলে নেয়া হয়।
পরে শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে গত ৩০ মার্চ দলের সভা করে আগামী সেপ্টেম্বরে কাউন্সিল করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
শ্রমিক দলের কাউন্সিলের বিষয় জানতে চাইলে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসেন নয়া দিগন্তকে জানান, আগামী সেপ্টেম্বরে আমরা কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের সিদ্ধান্তের কথা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ও দলের অন্য নীতিনির্ধারকদের জানিয়েছি। আশা করছি সুষ্ঠু ও সুন্দর একটি কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে শ্রমিক দলের নতুন কমিটি গঠিত হবে।
শ্রমিক দল নেতাদের সাথে তারেক রহমানের কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে শ্রমিক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের খাজা নয়া দিগন্তকে বলেন, দীর্ঘ দিন যাবৎ শ্রমিক দলের সাথে তারেক রহমানের যোগাযোগ নেই, তাই খোঁজখবর নিলেন আর কি। শ্রমিকদলের অবস্থা কী, শ্রমিকদল কী করছে এবং কী করবে সেগুলোর খোঁজ নিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ওখানে এক-একজন একেক এক রকম বক্তব্য দিয়েছেন। তারেক রহমান নিজে থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। তিনি শুধু শ্রমিক দল দুর্বল কেন, শ্রমিক দলের কর্মকাণ্ড নেই কেন, সেগুলো জানতে চেয়েছেন।
শ্রমিক দলের কাউন্সিলের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রমিক দল চলে মূলত শ্রম আইন অনুযায়ী। ওই অনুযায়ী বিদ্যমান কমিটি অর্থাৎ নজরুল ইসলাম খান ও জাফরুল হাসানের কমিটির অধীনে কাউন্সিলটা হওয়া উচিত। শ্রমিক দলের কাউন্সিল সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি কাজী আমির খসরু বলেন, আমাদের শ্রমিক দল মূলত শ্রম আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আর শ্রমিক দলের কমিটি শ্রম অধিদফতর থেকে অনুমোদিত হয়। বর্তমানে শ্রমিক দলের যে কমিটি আছে শ্রম অধিদফতরে তার কোনো অনুমোদন নেই। এই কমিটির বেশির ভাগ নেতাও সক্রিয় নন। ফলে বিগত সময় আন্দোলন-সংগ্রামে তারা উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি। তাই আমরা চাই একটি সুষ্ঠু কাউন্সিলে সদস্যদের সরাসরি গোপন ভোটের মাধ্যমে শ্রমিক দলকে পুনর্গঠন করতে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
গ্রিড লাইনের ত্রুটিতে সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ভুক্তভোগী নারী ও তার পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের হয়রানির প্রতিবাদ বাড্ডায় নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার কথিত স্বামী পলাতক গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করবে খতমে নবুওয়ত ঝিনাইদহ-১ আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়েব আলী জাতীয় গ্রিডে ত্রু‌টি, সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাবিতে নিয়মিত ২০ আসন বরাদ্দ রেকর্ড গড়ে সাদিক খান আবারো লন্ডনের মেয়র আগামী ২ মাসের মধ্যে ভাঙ্গা-খুলনা-যশোর পর্যন্ত ট্রেন চালু হবে : জিল্লুল হাকিম ফতুল্লায় ব্যবসায়ী অপহরণ, গ্রেফতার ৭ তাপদাহের কারণে গোসল করতে গিয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু

সকল