৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


এসএস স্টিলের আইপিও অনুমোদন

সূচক ও লেনদেনের অবনতি পুঁজিবাজারে

-

এক দিন ভালো কাটিয়ে ফের নেতিবাচক প্রবণতার শিকার হলো পুঁজিবাজার। মঙ্গলবার দেশের দুই পুঁজিবাজারই কমবেশি সূচক হারায়। তবে উভয় বাজারেই দিনের শুরুতে সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী; কিন্তু আধঘণ্টা না কাটতেই বিক্রয়চাপের মুখে পড়ে বাজারগুলো। লেনদেনের মাঝামাঝি পর্যায়ে বিক্রয়চাপ সামলে উঠলেও শেষদিকে এসে চাপ আরো বেড়ে যায়। দিনশেষে উভয় বাজারেই সূচকের পাশাপাশি অবনতি ঘটে লেনদেনেরও।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ১৪ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট হ্রাস পায়। ৫ হাজার ৩৩৯ দশমিক ৯১ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকািট গতকাল মঙ্গলবার দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ৩২৫ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচক হারায় যথাক্রমে ২ দশমিক ৮৬ ও ২ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট।
দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ৬২ দশমিক ২৪ ও ৪২ দশমিক ০৭ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচক হারায় যথাক্রমে ৪ দশমিক ৮৫ ও ৪ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট।
সূচকের পাশাপাশি অবনতি ঘটে বাজারগুলোর লেনদেনেও। ডিএসইতে গতকাল ৭৮৬ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি হয়, যা আগের দিন অপেক্ষা ৮৭ কোটি টাকা কম। সোমবার ডিএসইর লেনদেন ছিল ৮৭৩ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে ৪৪ কোটিতে নামে লেনদেন। সোমবার বাজারটির লেনদেন ছিল ৪৮ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার সূচকের উন্নতি দিয়েই দিন শুরু করে দুই পুঁজিবাজার। ডিএসইতে ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৩৩৯ দশমিক ৯১ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে বেলা ১১টায় পৌঁছে যায় হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে। অর্থাৎ প্রথম আধঘণ্টায় ডিএসই সূচকের উন্নতি ঘটে ২৫ পয়েন্ট। সূচকের এ অবস্থান থেকেই বিক্রয়চাপ তৈরি হয়। পরবর্তী দেড় ঘণ্টা এ চাপ অব্যাহত থাকলে সূচক নেমে আসে ৫ হাজার ৩৪০ পয়েন্টে। লেনদেনের এ পর্যায়ে ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়া সূচকটি বেলা ১টায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৩৫৬ পয়েন্টে। পরবর্তী এক ঘণ্টা সূচকের এ উন্নতি ধরে রাখে বাজারটি; কিন্তু বেলা ২টার পর বিক্রয়চাপ আরো তীব্র হয়ে উঠলে দিনশেষে সূচকের ১৪ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট হারায় ডিএসই।
এ দিকে আরো একটি ইস্পাত শিল্প প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এসএস স্টিল লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ২ দশমিক ৫০ কোটি সাধারণ শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে ২৫ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। মঙ্গলবার কমিশন সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়। কমিশন সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানির জমাকৃত প্রস্পেক্টাস অনুসারে এই টাকা যন্ত্রপাতি ও কলকব্জা ক্রয় এবং স্থাপন, ভবন নির্মাণ ও আইপিও বাবদ খরচ করবে কোম্পানি।
একই সূত্র থেকে প্রাপ্ত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে ৩০ জুন ২০১৭ সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী সম্পদ মূল্যায়ন না করে কোম্পানিটির প্রকৃত সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ১২ টাকা। আর সম্পদ মূল্যায়ন করে এনএভি হয়েছে ১৫ টাকা ৩৫ পয়সা। একই সময়ে শেয়ার-প্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ২০ পয়সা।
আর ভারিত গড় হারে শেয়ার-প্রতি ওয়েটেড এভারেজ হয়েছে ৮২ পয়সা। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে সিটিজেন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
একই সভায় কমিশন ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ২ হাজার কোটি টাকার নন-কনভার্টেবল ফিক্সড রেট সাব-অর্ডিনেটেড বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। ৭ বছর মেয়াদি এই বন্ডের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নন-কনভার্টেবল, সম্পূর্ণ অবসায়ন, ফিক্সড রেট, আনসিকিউর্ড, আনলিস্টেড সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড। বন্ডটি ৭ বছরে পূর্ণ অবসায়ন হবে, যা বিভিন্ন ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট হাউজ এবং উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ইস্যু করা হবে।
অনুমোদনপত্রে আরো বলা হয়, এই বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ উত্তোলন করে আইসিবি যেসব ক্ষেত্রে ওই অর্থ ব্যবহার করবে তা হলোÑ (১) প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি বাজারে বিনিয়োগ পরিকল্পনায় বাজার সৃষ্টিকারী হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন; (২) এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও এনআরবি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফান্ডের উদ্যোক্তা হিসেবে বিনিয়োগ; (৩) অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সরকারের প্রাধিকারভুক্ত খাতে বিনিয়োগ এবং (৪) পিপিপি প্রকল্পে বিনিয়োগ।
এই বন্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য এক কোটি টাকা। এই বন্ডের ট্রাস্টি ও ম্যানডেটেড লিড অ্যারেঞ্জার হিসাবে যথাক্রমে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট এবং আলফা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ও রুটস ইনভেস্টমেন্ট কাজ করছে।


আরো সংবাদ



premium cement