২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঝালকাঠিতে পৌর কাউন্সিলরকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা

আহত স্ত্রী-পুত্র, বসতঘর ভাংচুর
আহত কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির খান। - ছবি : নয়া দিগন্ত

ঝালকাঠি পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হুমায়ুন কবির খানকে উপর্যুপরি কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় পৌর এলাকার পালবাড়ি সড়কে কাউন্সিলর কুদ্দুস হাওলাদারের বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে রাত ৯টায়। বন্ধুদের নিয়ে শুক্রবার পেয়ারাবাগান পিকনিকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল কাউন্সিলর হুমায়ুনের ছেলে আবিদ খান (১৭)। পিকনিকের প্রস্তুতির মধ্যেই এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় কিশোর বয়সী আরেকটি গ্রুপের সাথে। সেই গ্রুপটি কাউন্সিলর হুমায়ুন কবিরের ছেলেকে পিটিয়ে আহত করে।

এ নিয়ে দুপক্ষে হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পরবর্তীতে কাউন্সিলর হুমায়ুন কবিরের পালবাড়ির বাসায় হামলা চালিয়ে তার স্ত্রী রুমা বেগমকেও আহত করা হয়।

খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে অতুল মাঝির খেয়া পার হয়ে পালবাড়িতে আসার পথিমধ্যে দুর্বৃত্তরা হুমায়ুনকে উপর্যুপরি পিটিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে।

এতে তার বাম হাতের কব্জি দু’ভাগ হয়ে যায়। আহত কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির খানকে চিকিৎসার জন্য ঝালকাঠি থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় রাত দেড়টায় তাকে সেখান থেকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হুমায়ুনের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল শরীফের ভাই ইদ্রিস শরীফ, ইলিয়াস শরীফ ও জামাল শরীফসহ ২০/২৫ জন লোক নিয়ে এসে এ হামলা চালিয়েছে। পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে কাউন্সিলর ও তার পবিরারের সদস্যদের। সেইসাথে ভাংচুর চালানো হয়েছে বসতঘরে।

এ বিষয়ে জামাল শরীফ বলেন, ঘটনার সময় তিনি তার বরিশালের বাসায় অবস্থান করছিলেন, সেখানে থেকে তিনি ঘটনা শুনেছেন। অন্যরাও বলছেন এঘটনার সাথে তারা মোটেই জড়িত নয়। তাদের পারিবারিক রাজনীতিতে যত মামলা হয় তিনি বরিশাল বা অন্য কোথায় থেকেও সরাসরি আসামি হচ্ছেন, এটা দুঃখজনক।

কাউন্সিলর কামাল শরীফ বলেন, এলাকায় যত জামেলা ঘটুক না কেন সব সময় হুমায়ুন কবির গংরা আমাকে এবং আমার ভাইদেরকে দোষারোপ করে আসছে। কাউন্সিলর হিসেবে আমার কাজ বাধাগ্রস্ত করাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য বলে আমি মনে করি। হুমায়ুন কবিরকে যেভাবে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে সেটা সত্যিই কষ্টদায়ক। এটা কখনোই কাম্য নয়।

কামাল আরো বলেন, আমি বা আমার কোনো ভাই এঘটনায় জড়িত থাকলে সকল বিচার মাথা পেতে নিব। কিন্তু যারা এধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ করে আমাদের উপর মিথ্যা দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে তাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হোক। আমি কাউন্সিলর হিসেবে এলাকায় শান্তি চাই।

ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খলিলুর রহমান বলেন, ঘটনা ঘটেছে কিন্তু কারা ঘটিয়েছে তার কোনো প্রমাণ এখনো পাইনি। তাই আপাতত ধরে নিচ্ছি অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা এই হামলা চালিয়েছে। থানায় এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেয়া হবে। তবে এ মুহূর্তে পালবাড়ি এলাকায় সহিংসতা এড়িয়ে শান্তিময় পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement