০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ট্রেনে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড়

অলিগলি হাটবাজারে ৩-৪ গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে টিকিট
যাত্রীতে ঠাসা জামালপুর ছেড়ে আসা তিস্তা এক্সপ্রেস : নয়া দিগন্ত -

জামালপুরে ঈদের সাত দিন পরেও রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও সিএনজি স্ট্যান্ডে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এখানে ট্রেনের টিকিট যেন সোনার হরিণ। গ্রেফতার করেও দমানো যাচ্ছে না টিকিট কালোবাজারিদের। রেলের টিকিট তিন থেকে চার গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে অলিগলি, হাটবাজার এবং কালোবাজারি সিন্ডিকেটের নির্ধারিত গোপন স্থানে। আর বেসরকারি কমিউটার ট্রেনে পাঁচ টিকিটে দেয়া হচ্ছে একটি মাত্র সিট। অপর দিকে বাস ও সিএনজি অটোরিকশার ভাড়াও প্রকাশ্যে নেয়া হচ্ছে দুই থেকে তিন গুণ বেশি। ফলে ঈদের পর কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
সম্প্রতি রেলের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা জেলার বিভিন্ন রেলস্টেশনে অভিযান চালিয়ে কিছু টিকিট কালোবাজারি সিন্ডিকেট সদস্য আটক করলেও দমানো যাচ্ছে না তাদের।
সাইফুল ইসলাম নামে এক যাত্রী নয়া দিগন্তকে বলেন, এই টিকিট কালোবাজারি সিন্ডিকেটের সাথে নিশ্চয়ই বিভিন্ন স্টেশনে টিকিটের দায়িত্ব প্রাপ্ত মাস্টার কিংবা কর্মচারীরা জড়িত আছে।
ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ, ঢাকা-তারকান্দি রেলরুটে আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস এবং যমুনা এক্সপ্রেসসহ পাঁচটি আন্তঃনগর ট্রেন নিয়মিত চলাচল করে থাকে। এ ছাড়া ঈদ স্পেশাল আরো চারটি ট্রেন চলাচল করছে। ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ, ঢাকা-তারকান্দি ১৫টি রেলস্টেশন রয়েছে। এসব রেলস্টেশনের মধ্যে নান্দিনা, জামালপুর জংশন, মেলান্দহ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ এবং জামালপুর-তারাকান্দি রেল রুটের সরিষাবাড়ী ও তারাকান্দি রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি রয়েছে। ওই সব স্টেশন থেকে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু ১০ দিন আগে টিকিট আপলোড করায় যাত্রীরা অনলাইনে ঢুকেও টিকিট পান না।
যাত্রীদের অভিযোগ কোন দিন, কোন সময় অনলাইনে টিকিট আপলোড করা হয় সেটি যাত্রী/গ্রাহকরা জানেন না। এটি জানেন নিজ নিজ স্টেশনমাস্টার বা টিকিট বিক্রির সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা। টিকিটের সাথে সংশ্লিøষ্ট স্টেশনমাস্টার/কর্মচারীরাও রেজিস্ট্রেশনকৃত বিভিন্ন এনআইডি নাম্বারের মাধ্যমে রেলের টিকিট ডাউনলোড করে তুলে দেন কালোবাজারে সিন্ডিকেটের হাত।
জামালপুর রেলস্টেশনে বদরুদ্দোজা নামে এক রেলযাত্রী আক্ষেপ করে বলেন, যাত্রী হয়রানি ও কালোবাজারি বন্ধ করতে নাকি অনলাইনে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা সরকার করেছে। অথচ এখন আরো বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছি। রেলওয়ে কি তাহলে যাত্রীদের কালোবাজরিদের কাছে ঠেলে দিচ্ছে?
ট্রেনযাত্রী আব্দুল হাই বলেন, আমার ঢাকা যাওয়ার প্রয়োজন আজ এখন আমি কী করব। বাটন মোবাইলে কোনো রকম ফোন রিসিভ আর ফোন দিতে পারি। আমি টিকিট পাই কই।
ইসলামপুর স্টেশনে শাহ আলম নামে এক যাত্রী জানান, অনলাইনে টিকিট নেই। কর্মস্থলে যাওয়া অতিজরুরি তাই কালোবাজারির কাছ থেকে চার হাজার ৮০০ টাকায় টিকিট নিতে বাধ্য হলাম। তবে জামালপুর জংশন রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার কিংবা সংশ্লিøষ্টরা এসব ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ।
এ ব্যাপারে জামালপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শফিউর রহমানের সাথে তার অফিসিয়াল মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


আরো সংবাদ



premium cement