৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


নীলফামারীতে বোরো ক্ষেতে ব্লাস্ট, দিশেহারা কৃষক

ক্ষতিগ্রস্ত ধানগাছ হাতে এক কৃষক : নয়া দিগন্ত -

ডিমলায় ভরা যৌবনে চড়া রোগে ভুগছে চলতি বোরো মৌসুমের বিভিন্ন প্রজাতির ধানের চারাগাছ। ব্লাস্ট, গিট ব্লাস্ট ও নেট ব্লাস্টসহ হরেক রকমের রোগ ও বিভিন্ন পোকার উপদ্রবে ধানের গাছগুলোতে বেড়েই চলেছে রোগব্যাধি। বালাইনাশক ব্যবহার করেও পাচ্ছেন না কোনো সুফল। আর এমন পরিস্থিতিতে কৃষি অফিসের তদারকি না থাকায় বিপাকে চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চারা রোপণের পরে তিন প্রজাতির মাজরা পোকা (হলুদ মাজরাপোকা, কালোমাথার মাজরাপোকা এবং গোলাপি মাজরাপোকা), ব্লাস্ট, গিট ব্লাস্ট ও নেট ব্লাস্ট, ধানের কাণ্ড ও গুঁড়িপচা, ধানের পাতা ফাস্কোসহ দফায় দফায় ভিন্ন ভিন্ন রোগব্যাধিতে জর্জরিত বোরো ধানের ক্ষেতগুলো। হরেক রকমের রোগ ও বিভিন্ন পোকার উপদ্রব থেকে পরিত্রাণ পেতে কৃষি কর্তাদের পরামর্শ না পেয়ে স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ীদের দারস্থ হচ্ছেন চাষিরা। সঠিক রোগ নির্ণয় না করে কীটনাশক ব্যবসায়ীরা দিচ্ছেন বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিষেধক। ভুল প্রতিষেধক ব্যবহারে ক্রমেই জমি হারাচ্ছে উর্বরতা, অন্য দিকে বার বার বালাইনাশক ব্যবহারে কৃষকদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি খরচ। সেই সাথে বিনষ্ট হচ্ছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। এতে ব্যাহতের শঙ্কা চলতি মৌসুমের ধান উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা।
গয়াবাড়ী কালীরডাঙ্গা এলাকার শহিদুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা হীরা ধানের গাছে ছত্রাক (পাতা ফাস্কোস) আক্রমণে নষ্ট হয়েছে। কৃষি অফিসারদের জানালে তারা ব্যবস্থা নিতে নিতে আমার ধানের গাছ নষ্ট হবে। তাই আমি স্থানীয় এক কীটনাশক বিক্রেতার পরামর্শে প্রতিষেধক ব্যবহার করছি।
বালাপাড়া ইউনিয়নের মধ্যম সুন্দরখাতা মাঝিয়ালীর ডাঙ্গা এলাকার পাষাণ আলী বলেন, আমি ছয় বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের বোরো ধান রোপণ করেছি। ধানের চারা রোপণের পর দুই-তিনবার বালাইনাশক ব্যবহার করেও সুফল মেলেনি। উল্টো ধানের চারাগাছগুলো হলুদ বর্ণের ও খাটো হয়ে পাতা মরে যাচ্ছে।
একই গ্রামের কৃষক সহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের কেউ এ দিকে আসেন না, তাই নামও জানি না। এখন পর্যন্ত দুইবার ওষুধ স্প্রে করেছি। তবু পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছি না।
একই এলাকার কৃষক মহিকুল ইসলাম জানান, এক বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষাবাদে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। এভাবে পোকার আক্রমণে আমাদের স্বপ্নগুলো বিলীন হয়ে যাবে।
বালাপাড়া ইউনিয়নের ৮ নং ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত কোনো কৃষক আমাকে জানায়নি। যেসব কৃষকের ক্ষতি হয়েছে তাদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, নীলফামারীর উপ-পরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস হতে মাঠ পর্যায়ে বোরো ধান চাষে কিভাবে ভালো ফলন পাওয়া যায় সে বিষয়ে পরিচর্যা, রোগ প্রতিকার সম্পর্কে স্থানীয় কৃষকদের পরামর্শ ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement