২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিষ্টি কুমড়ায় কৃষকের মিষ্টি হাসি

ঘিওরে সড়কের পাশে থরে থরে সাজিয়ে রাখা মিষ্টি কুমড়া : নয়া দিগন্ত -

মিষ্টি কুমড়ার মিষ্টি হাসিতে ভরে গেছে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা। উপযুক্ত মাটি, ভালো আবহাওয়া আর সঠিক পরিচর্যায় এবার এ উপজেলায় বাম্পার ফলন হয়েছে মিষ্টি কুমড়ার। রাজধানীর সাথে ভালো যোগাযোগব্যবস্থার কারণে এখানে সহজেই মিলছে পাইকারি ক্রেতা। ক্ষেত থেকেই ক্রেতারা নগদ টাকায় কিনে নিচ্ছেন কুমড়া। চলতি রমজান মাসে মিষ্টি কুমড়ার বাজার এখন তুঙ্গে। তাই কৃষকরা দামও পাচ্ছেন ভালো।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক চাষি অন্যান্য ‘সাথী ফসলের’ সাথে মিষ্টি কুমড়া চাষ করছেন। অল্প সময়ে স্বল্প খরচ আর ভালো ফলনে এ অঞ্চলের কৃষকদের ভাগ্য ফিরেছে। অধিক লাভ এবং দীর্ঘদিন অপচনশীল থাকার কারণে কৃষি বিভাগও প্রযুক্তি সহায়তা দিচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষকদের সহজশর্তে ঋণ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হলে কুমড়া চাষ বদলে দিতে পারে এ এলাকার কৃষিনির্ভর অর্থনীতি। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামেই কমবেশি মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়ে থাকে। তবে বালিয়াখোড়া, চঙ্গশিমুলিয়া, মাইলাঘী, বড় বিলা, বাঙ্গালা, বালিয়াখোড়া, বরুরিয়া, পয়লা, কুইষ্টা, পুরান গ্রাম, নালী, বানিয়াজুরী এলাকায় এ বছর উল্লেখযোগ্য হারে কুমড়ার আবাদ হয়েছে।
গত শুক্রবার সরেজমিন পয়লা ইউনিয়নের পঞ্চরাস্তা মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আবাদি জমির যে দিকেই চোখ যায়, শুধুই মিষ্টি কুমড়ার ক্ষেত। ক্ষেত থেকে তুলে রাস্তার ধারে থরে থরে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে কুমড়া। এগুলো যাবে সাভার, আশুলিয়া ও ঢাকার কাওরানবাজারে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ঘিওরে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। এ সবজিটি বছরে দু’বার আবাদ করা হয়। বীজ বপনের সময় হলো শীতকালীন ফসলের জন্য অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এবং গ্রীষ্মকালীন ফসলের জন্য ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত।
চলতি বছর তিন বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছেন উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের পুরাণ গ্রামের কৃষক আলম মিয়া। তিনি জানান, মিষ্টি কুমড়া চাষের জন্য জমি তৈরি, সার ও কীটনাশক ও কৃষকদের মজুরিসহ বিঘাপ্রতি খরচ হয় প্রায় সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা। আর এক বিঘা জমিতে উৎপন্ন কুমড়ার পাইকারি বাজারদর ২০-২২ হাজার টাকা। স্থানীয় বাজারে খুচরা বিক্রি করলে দ্বিগুণ মুনাফা পাওয়া সম্ভব। পয়লা গ্রামের কৃষক বারেক মৃধা জানান, প্রতিটি কুমড়া আকারভেদে ১০ টাকা থেকে ৭০ টাকা দরে ক্ষেত থেকেই পাইকাররা কিনে নেন।
পাইকারি ক্রেতা লুৎফর রহমান জানান, এ অঞ্চলের মিষ্টি কুমড়া সুস্বাদু ও আকৃতিতে বড় হয়। তাই চাহিদা বেশি। এ বছর তিনি তিন লক্ষাধিক টাকার মিষ্টি কুমড়া পাইকারি কিনছেন। সপ্তাহে দু’বার পিকআপে আশুলিয়ার বাইপাইল কাঁচা বাজার আড়তে নিয়ে বিক্রি করেন। এ বছর লক্ষাধিক টাকার ওপরে লাভ হতে পারে বলে তিনি জানান।
জেলা কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, কৃষকরা পাট, গম, ধঞ্চাসহ অন্যান্য ফসলের সাথে ৭-৮ বছর আগে বিষমুক্ত মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে বেশ সফলতা পাচ্ছেন। মানিকগঞ্জ কাঁচা বাজারের আড়তদার আলী হোসেন বলেন, ঢাকার বাজারে মানিকগঞ্জের মিষ্টি কুমড়ার চাহিদা বেশি। গত সপ্তাহে আমার আড়তে প্রচুর পরিমাণ মিষ্টি কুমড়া উঠেছে। দাম আকারভেদে প্রতিটি কুমড়া ৩০ থেকে ৭০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ বিপুল হোসেন বলেন, অন্যান্য ফসলের সাথে কৃষকরা মিষ্টি কুমড়ার চাষ করছেন। ভালো ফলন হওয়ায় এর আবাদ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। মৌসুমভিত্তিক ফসল চাষের জন্য কৃষি অফিস থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইলি হামলায় আহত শিশুর মুখে ২০০ সেলাই বিষখালীতে মৎস্য বিভাগের অভিযান : জেলে নিখোঁজ, আহত ২ দক্ষিণ এশিয়ার যে শহরগুলোর তাপমাত্রা এখন সর্বোচ্চ গাজীপুরে দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ডভ্যানে অটোরিকশার ধাক্কায় হতাহত ৫ চৌগাছায় সিদ কেটে স্বর্ণের দোকানে চুরি দুর্নীতির মামলায় কৃষিমন্ত্রীকে আটক করল ইউক্রেন মোরেলগঞ্জে কৃষককে পিটিয়ে হত্যা দেবীগঞ্জে হিট স্ট্রোকে প্রাইভেটকার চালকের মৃত্যু চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস

সকল