০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মুন্সীগঞ্জে ইজিবাইকের বেপরোয়া চলাচল

মুন্সীগঞ্জের নিমতলা বাসস্ট্যান্ডে এলোপাতাড়িভাবে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে ইজিবাইক : নয়া দিগন্ত -

মুন্সীগঞ্জের ছয়টি উপজেলায় বেপরোয়া হয়েছে উঠেছে অবৈধ ইজিবাইক চলাচল। সিরাজিদখান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নেই রয়েছে অনঅনুমোদিত এই বাহনের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল। রাস্তার মাঝেখানে গাড়ি ঘুরানো, যত্রতত্র পার্কিং ও অদক্ষ চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাজারো মানুষ। এ ছাড়া যানজটের বিশেষ কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ইজিবাইক। কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই এবং রাস্তার নিয়মনীতি না জেনেই গাড়ি চালানোর কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে জরুরি কাজে নিয়োজিত সরকারি, বেসরকারি, যাত্রীবাহী গাড়িসহ রোগীবাহী এম্বুলেন্স সঠিক সময়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারছে না। এমনকি এই ইজিবাইকের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই বললেই চলে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার কাচারি পৌরসভার সামনে থেকে দেখা যায় প্রতিদিনই ইজিবাইকের কারণে যানজট লেগেই আছে। সরকারিভাবে এদের নিয়ন্ত্রণ না করলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে ইজিবাইক চালকেরা। ইজিবাইকের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে মিশুক।
সিরাজদিখান উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার নিমতলা বাসস্ট্যান্ড, উপজেলা মোড়, সিরাজদিখান পাঁচপীর মাঝার মোড়, সিরাজদিখান থানার মোড়, গোয়ালবাড়ী মোড়, ইছাপুরা বাসস্ট্যান্ড, মালখানগর চৌরাস্তা, বালুরচর বাজার রোডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ ইজিবাইক নিয়ম না মেনে চালানোর কারণে হরহামেশা দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রতিটি পয়েন্টেই ইজিবাইক সিরিয়াল এবং নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য তিনজনকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেলেও তারা চাঁদা আদায় ছাড়া আর কোনো কাজ করেন না। তারা প্রতিটি ইজিবাইকের চালকদের কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ টাকা চাঁদা নিচ্ছেন বলেও বেশ কয়েকজন ইজিবাইক চালক অভিযোগ করেছেন। এমনকি থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অনেক সময় লক্ষ করা যায়,
ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ইজিবাইক চালকদের জরিমানা করে ছেড়ে দেন। ফলে রাস্তার যানজট, বেপোরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর মতো কাণ্ডসহ যাত্রী ও সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। প্রতি মাসে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সভায় যানজট নিরসনের লক্ষ্যে প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বহুবার এ বিষয়ে কথা উঠালেও বাস্তবে রূপ কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।
সম্প্রতি ইজিবাইক দুর্ঘটনায় উপজেলার বালুরচর ইউনিয়নের মুরাদনগর গ্রামের একজন, মোল্লাকান্দি বালুরচর গ্রামে দুইজন, নতুন ভাসানচর গ্রামের একজন, রামানন্দন গ্রামের একজন, লতব্দী গ্রামের একজন নিহত হন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইজিবাইক চালক জানান, আমাদের কাছ থেকে যে চাঁদা নেয়া হচ্ছে সেগুলো লাইনম্যানরা নিয়ে থানায় কিছু দেন এবং তারা কিছু রাখেন।
সিরাজদিখান উপজেলা কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিনাত ফৌজিয়া জানান, ইজিবাইক বা অটোরিকশার কোনো নীতিমালা নেই। তারপরও আমি এখানে যোগদান করার পর ইজিবাইকের বিরুদ্ধে শতাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি। প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়েই এ বিষয়ে কথা বলি এবং ইজিবাইক চালক সমিতির লোকজন ডেকে এনে তাদের সঠিক নিয়মে ইজিবাইক চালাতে পরামর্শ দিয়েছি। মানবিক কারণে একেবারে বন্ধ করে দিতেও পারছি না। আমাদের যতটুকু করা সম্ভব আমরা করে যাচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement