বর্তমানে ফিটনেসবিহীন বিএনপি। দলটির নেতাকর্মীরা যাতে উপজেলা নির্বাচনে না যান, সেজন্য আগেভাগেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিএনপির দেশব্যাপী সব নেতাকর্মীকে জানানো যাচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচনে দলের কোনো নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। যদি কেউ দলের সিদ্ধান্ত বরখেলাপ করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তিনি আরো বলেছেন, সিইসি ভোটারদের ‘প্রতারিত’ করে অভিনব ‘মিডনাইট’ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নিরঙ্কুশ ‘কর্তৃত্ববাদী একদলীয়’ রাষ্ট্র কায়েমে সহায়তা করেছেন। যে সিইসি ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পরে বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ছিল, উপজেলা নির্বাচনও একইভাবে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে। তা থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে উপজেলা নির্বাচনের ভবিষ্যৎ...।’
কথায় আছে, ‘ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়।’ বেল আমাদের দেশের মানুষের পছন্দের একটি ফল। অন্যান্য ফলের তুলনায় এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এক গ্লাস বেলের শরবত শরীর ও মনে তৃপ্তি আনে। পেটের নানা রোগবালাই সারাতেও জাদুকরী কাজ করে। এ ছাড়া কাঁচা বেল ডায়রিয়া ও আমাশয়েও বেশ উপকারী। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকা বেলে ভিটামিন ‘সি’ ও ‘এ’ প্রচুর পরিমাণে থাকে। বেলের ভিটামিন ‘সি’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। বিএনপিরও এখন ভিটামিন ‘সি’ ও রোগ প্রতিরোধে প্রতিষেধক জরুরি হয়ে পড়েছে। শাস্ত্রীয় নীতিকথার এ অমর বাণীকে ঝেড়ে ফেলে, বুদ্ধিমত্তার সাথে বিএনপি প্রয়োজনে মাথায় ‘হেলমেট’ পরে কোমর শক্ত করে, একবারই নয়; শতবার হলেও ওই বেলতলায়ই যেতে হবে। মাথা যার সিদ্ধান্ত তারই নিতে হয়। এক কথায় বিএনপি আজ সর্বহারা। যদি কখনো কিছু হয়, সেই ভরসায় বসে না থেকে, মধু খেতে হলে বিএনপিকে গোড়ালি শক্ত করে মৌচাকে হাত দিতে হবে, বেলতলায়ও যেতে হবে।
গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করা জাতির কী করুণ পরিণতি! প্রত্যেক মানুষের বিবেক বলতে একটা কথা রয়েছে, যা অনেক দামি। গত নির্বাচন দেশের সর্বসাধারণকে সূক্ষ্ম কারচুপি, স্থূল কারচুপি ও মাগুরা উপনির্বাচনের কথাগুলো ভুলিয়েছে; এ সত্য ও কৃতিত্ব সিইসির শতভাগ প্রাপ্য। নিজের ঢোল নিজে আর কত পেটানো যায়। নির্বাচন মানেই এখন ব্যাপক বিনোদন ও হাসিখুশির রেকর্ড। এ কথা অনস্বীকার্য ‘খুশিতে, ঠ্যালাই, ভালো লাগে’ এ ধরনের হাস্যরসাত্মক কথাগুলো সমাজের প্রকৃত বাস্তবতার আবহ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই তৈরি হয়েছিল।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নিরপেক্ষ, নির্বাচন ও শক্তির ব্যাখ্যা নতুনভাবে করতে হবে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের দেশের নিয়ম বর্তমানে এটিই হয়ে দাঁড়িয়েছে, হয় শক্তির সাথে থাকতে হবে, নয়তো নিজের শক্তিটুকুও হারাতে হবে।
মানুষ কিন্তু আসল আর নকলের পার্থক্য বোঝে। নির্বাচন নিয়ে এত শোরগোল, ডিগবাজি ও পল্টিবাজির রাজনীতি বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও আছে কি? এ কথাও ঠিক, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি ঐক্যফ্রন্ট নেই। সুতরাং এবারে অবশ্যই ইসি রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। অতীতেও দেখা গেছে, খেয়ালখুশিমতো ক্ষমতাসীনেরা সব সময়ই নিজেদের মতো করে নির্বাচন সাজিয়েছে। আর এখন উপজেলা নির্বাচনে সরকারি দল খালি মাঠে গোল দিচ্ছে। নির্বাচন নয়, দলীয় মনোনয়ন ও আশীর্বাদই এখন ক্ষমতা লাভের প্রধান উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিরোধী দল না থাকলে নির্বাচন যে জমতে পারে না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। হ
abunoman1972@gmail.com