২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুমিনুলের স্বস্তি

-

মনে হচ্ছে বিরাট বোঝা নেমে গেল টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের মাথা থেকে। বারবার পরাজয়ের প্রশ্নে অধিনায়কত্ব যেন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়ে। নিজে করলেন সেঞ্চুরি, সতীর্থ মুশফিক করলেন ডাবল, নাঈম নিলেন ৯ উইকেট, তাইজুল নিলেন ৮ উইকেট। একটা দল হিসেবে সবাই অবদান রাখায় তাই তৃপ্ত অধিনায়ক। সেগুলোই ফুটে উঠল গতকাল ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তার কথায়।
অধিনায়কত্ব নিয়ে স্বস্তি
পেস বোলার থেকে শুরু করে স্পিনার এমনকি ব্যাটসম্যানরা পর্যন্ত দলের জন্য যা দরকার সেভাবে করেছে। এই কারণে ফলাফলটি এসেছে। অধিনায়ক হিসেবে এবং দলের একজন সদস্য হিসেবে সব সময় সবার কাছে এটা কাম্য যদি আপনি কিছু করতে পারেন। মনে হয় দলের জন্য কিছু অবদান রাখতে পেরেছি।
বিদেশে ভালো করা
এটা ঠিক যে দেশে ৯ সেঞ্চুরি; কিন্তু বিদেশে নেই। দেশে যেমন টেস্ট জিততে চাই তেমন স্বপ্ন দেখি বিদেশেও ভালো ক্রিকেট খেলব। সে হিসেবে পেস বোলারদের বোলিং করাতে হবে। উইকেটটা সেভাবে তৈরি করতে হবে। এটা আসলে চ্যালেঞ্জ নয়। আমরা তৈরি ছিলাম যে, এমন কিছু করতে পারব। আল্লাহথর কাছে শুকরিয়া যে, আমরা জিনিসটা বেশ ভালোভাবে হ্যান্ডেল করতে পেরেছি। তবে সেঞ্চুরি নিয়ে চিন্তা করি না। কারণ এটা পুরোপুরি মানসিক ব্যাপার।
পেস-বান্ধব উইকেট
এসব সিদ্ধান্ত সাধারণত কোচ এবং আমিই নিই। জাতীয় লিগ, বিসিএল, যা খেলা হয় সেখানে এমন উইকেট করার চেষ্টা করছে বলে মনে হয়। আপনারাও দেখেছেন এর আগে। এখান থেকে যদি জিনিসটা আসে তাহলে জাতীয় দলে ভালো ইমপ্যাক্ট পড়বে। আর আপনি যদি স্পিন উইকেট করেন তাহলে ইমপ্যাক্ট ওভাবেই পড়বে।
প্রসঙ্গ নাঈম
নাঈম মাত্র ক্যারিয়ার শুরু করল। সে অনেক ভালো বোলিং করেছে মাশা আল্লাহ। আশা করি, আরো ভালো করবে। সামনে তার আরো বহু সময় পড়ে আছে। এখনি তাকে নিয়ে আউটস্ট্যান্ডিং টাইপ কিছু বলতে চাই না। ওর অনেক কিছু করার বাকি আছে। ধীর ধীরে সে উন্নতি করবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরুতে বুঝা যায় না। সে কিন্তু অনেক দিন থেকেই লাইন আপে ছিল এবং ভালো বোলিং করছে। এর মানে যে মিরাজ খারাপ বোলিং করছে এমনটা নয়। নাঈমকে একটু সুযোগ দেয়া হয়েছে বলে মনে হয়।
মাইন্ডসেট
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আনস্ট্যাবল থাকে অন্য জায়গায়। আমার কাছে মনে হয় এখানে মাইন্ডসেটটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেটের ৯০ ভাগই মাইন্ডসেটের ওপরে নির্ভর করে। আমি জানি না আমাকে দেখে কখনো আন্ডার প্রেসার মনে হয়েছে কি না। চেষ্টা করি সব সময় আশাটা বড় রাখতে। আমি আন্ডার প্রেসার ছিলাম না। উন্নতি করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। আগামীতে পাকিস্তান সিরিজ আছে সেখানে আমি কেমন এবং দল হিসেবে ক্রিকেটাররা কেমন করবে সেটির দিকে তাকিয়ে আছি।
জিম্বাবুয়ের বোলিং
পাকিস্তান, ভারতের সাথে জিম্বাবুয়ের বোলারদের পার্থক্য থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। তার মানে এই নয় যে, খুব বেশি পার্থক্য। স্কিল, প্ল্যানের ক্ষেত্রে একটু পার্থক্য তো আছে। তবে ছোট করে দেখছি না। জিম্বাবুয়ের দুইজন ক্রিকেটার ইনজুরিতে ছিল। যারা এসেছে তাদের মধ্যে একজন দুইটি টেস্ট এবং আরেকজন দুই-তিন টেস্ট খেলা।
সিনিয়ররা হেল্পফুল
বিশ্বে প্রথম সারির তিন-চার-পাঁচটা ওপেনারের একজন তামিম ভাই। তার সাথে আমার তুলনা হয় না। আর আমি ওভাবে তুলনায়ও যাই না কখনো। ভারত সিরিজ থেকে যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন থেকে এখন পর্যন্ত সিনিয়রদের কাছ থেকে শতভাগ এফোর্ট পাচ্ছি। সিনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়ে খুব হ্যাপি।
ওয়ানডে সিরিজ
আমার কাছে মনে হয় সিরিজ জেতা উচিত। সিরিজ জেতাটাই গুরুত্বপূর্ণ।

স্কোরকার্ড
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস : ২৬৫
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৫৬০/৬ ডি.
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস : (তৃতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ৯ রান)
চতুর্থ দিন রান বল ৪ ৬
কাসুজা ক মিঠুন ব তাইজুল ১০ ৩৪ ০ ০ টেলর ক তাইজুল ব নাঈম ১৭ ৪৭ ১ ১
আরভিন রান আউট ৪৩ ৪৯ ৬ ১
সিকান্দার ক মুশফিক, ব তাইজুল ৩৭ ৭১ ৩ ১
মারুমা ক তামিম ব তাইজুল ৪১ ৫২ ৫ ০
চাকাভা ক তামিম ব তাইজুল ১৮ ৪০ ২ ০
এন্দালভু এলবিডব্লিউ ব নাঈম ৪ ২ ১ ০
টিসুমা এলবিডব্লিউ ব তাইজুল ৩ ২৬ ০ ০
নায়াউসি অপরাজিত ৭ ২১ ০ ০
অতিরিক্ত (বা-৯) ৯
মোট (১০ উই:, ৫৭.৩ ওভার) ৩০৭

উইকেট পতন : ১/০, ২/০, ৩/১৫, ৪/৪৪, ৫/১০৪, ৬/১২১, ৭/১৬৫৬, ৮/১৭০, ৯/১৮১, ১০/১৮৯।
বোলিং : নাঈম হাসান : ২৪-৬-৮২-৫, তাইজুল ইসলাম : ২৪.৩-৭-৭৮-৪, আবু জায়েদ : ৪-৩-৪-০, এবাদত হোসেন : ৫-১-১৬-০
ফল : বাংলাদেশ ইনিংস ও ১০৬ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মুশফিকুর রহীম

 


আরো সংবাদ



premium cement