২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিসিএলের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে মারামারি

-

ন্যক্কারজনক ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ (বিসিএল)। গতকাল ছিল এবারের লিগের শেষ ম্যাচ এবং পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। এই আয়োজন সুন্দর করার জন্য বাফুফের পেশাদার লিগ কমিটি এত দিন ধরে চলা লিগের খেলা কাল কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে স্থানান্তর করে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। চ্যাম্পিয়ন পুলিশ এবং নেমে যাওয়া ফেনী সকারের ম্যাচ ভালোয় ভালোয় সমাপ্ত হয়। ৫-০তে জেতে পুলিশ। এরপর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানেরও পর্দা নামে। পুলিশ চ্যাম্পিয়ন এবং উত্তর বারিধারা রানার্সআপ ট্রফি নেয়। ঠিক তখনই হঠাৎ মাঠে মারামারি। বাফুফের ম্যানেজার কম্পিটিশন জাবের বিন তাহের আনসারীর ওপর হামলা চালায় সিভিল পোশাকে থাকা এক পুলিশ। এরপর পুলিশ দলের খেলোয়াড়সহ অন্যরাও তার ওপর চড়াও হয়। পরে অন্য কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও একটু পরে আবার মারামারি। বাফুফের স্টাফ, দারোয়ানসহ অন্যরা চার্জ করতে থাকে সাদা শার্ট পরা দীর্ঘদেহী ওই পুলিশকে। অবস্থা বেগতিক দেখে স্টেডিয়াম ছেড়ে দৌড়ে পালায় ওই পুলিশ। তার পিছু নেয় বাফুফের স্টাফ এবং স্টেডিয়ামের সংশ্লিষ্টরা। তখন আবার পুলিশের খেলোয়াড়রা স্টেডিয়ামের চার নাম্বার গেটে আবার হামলা চালায়। পুলিশের সদস্যরা গাড়িতে তোলার চেষ্টা করতে থাকে জাবেরকে। পরে বাফুফের সদস্য অমিত খান শুভ্র, সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ অন্যরা এবং পুলিশ ফুটবল দলের সহকারী ম্যানেজার কাজী নুসরাত এদিব লুনার হস্তক্ষেপে জাবেরকে আর তোলা হয়নি পুলিশের গাড়িতে। তাকে নিয়ে আসা হয় স্টেডিয়ামের ভেতর। শেষে বাফুফের গাড়িতে করে চলে যান জাবেরসহ অন্যরা।
জাবের জানান, ওই সিভিল ড্রেসে থাকা পুলিশ সদস্যটি খেলা চলাকালীন সময়ে মাঠে প্রবেশ করতে চান নিয়মনীতি ভঙ্গ করে। তার কোনো অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ছিল না। আমি তাকে চিনিও না। এরপর খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণীর পর আমি, বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী এবং সাধারন সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ মাঠ থেকে বের হওয়ার সময় ওই পুলিশ এসে আমাকে সরাসরি ধাক্কা মারে। জাবেরের দেয়া তথ্য, তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর সালাম মুর্শেদী স্যার ওই পুলিশ সদস্যকে ডেকে পাঠালে সে দৌড়ে পালায়। তখন তাকে ধরে আনতে যায় বাফুফের স্টাফরা। আমিও পিছু নেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য। সে সময় পুলিশের খেলোয়াড়সহ অন্যরা আমার ওপর হামলা চালায়।
জাবের শুধু বাফুফেরই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী নন তিনি একই সাথে এএফসি ও ফিফার ম্যাচের লোকাল জেনারেল কো-অর্ডিনেটর। তাকে এই কাজের জন্য বিদেশ থেকে ট্রেনিং দিয়ে আনা হয়েছে। কাল বাফুফের এবং পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই কলঙ্কজনক ঘটনার ফলে সৌন্দর্যই নষ্ট হয়ে যায় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের। অথচ এই পুলিশ দলই এবারের বিসিএল চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আগামীবার দেশের সর্বোচ্চ লিগ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলবে। ফুটবল-সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা তখনো মাঠে এমন ঘটনার জন্ম দিতে পারে পুলিশ। উপস্থিত এক পুরনো ফুটবল সংগঠক জানান, এ জন্যই এসব দলকে এ ধরনের লিগে খেলার সুযোগ দেয়া উচিত নয়।
মাঠে উপস্থিত পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মুর্শেদী এই ঘটনাকে দুঃখজনক বলে অ্যাখা দিলেন। আর পুলিশ দলের সহকারী ম্যানেজার লুনা দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
এ দিকে চ্যাম্পিয়ন পুলিশ দলে এখন আগামী লিগের প্রস্তুতি। দলের সাধারণ সম্পাদক ও এডিশনাল ডিআইজি শেখ মো: রেজাউল হায়দার এবং ম্যানেজার মোখলেসুর রহমান জানান, প্রিমিয়ারে ভালো দল গড়তে সব চেষ্টাই করা হবে। বিদেশী ফুটবলারও দলভুক্ত করব আমরা।

 


আরো সংবাদ



premium cement